১৭ মে, ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ৮ জিলকদ, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সবকিছু কঠোর থাকবে, অনিয়ম হলেই ৯৯৯ অভিযোগ করা যাবে   ●  উখিয়া -টেকনাফে শাসরুদ্ধকর অভিযানঃ  জি থ্রি রাইফেল, শুটারগান ও গুলিসহ গ্রেপ্তার ৫   ●  রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেড মাঝিকে  তুলে নিয়ে   গুলি করে হত্যা   ●  যুগান্তর কক্সবাজার প্রতিনিধি জসিমের পিতৃবিয়োগ   ●  জোয়ারিয়ানালায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত রামু কলেজের অফিস সহায়ক   ●  রামুর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায়  আসছে চোরাই গরু   ●  রামুতে ওসির আশকারায় এসআই আল আমিনের নেতৃত্বে ‘সিভিল টিম’   ●  ড. সজীবের সমর্থনে বারবাকিয়ায় পথসভা   ●  কক্সবাজারে শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক সার্জেন্ট রোবায়েত    ●  উখিয়ায় রোহিঙ্গা যুবককে গলা কেটে হত্যা

হেঁসে খেলে দিন কাটে রোহিঙ্গা শিশুদের


কক্সবাজারের উখিয়ার উপজেলায় নতুন ভাবে গড়ে উঠা বালুখালী রোহিঙ্গা বস্তি থেকে মাত্র ১কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে মিয়ানমারের নাফ নদীর সীমান্ত। এই নাফ নদীর সীমান্ত পার হয়েই মিয়ানমারের মংডু থানার বিভিন্ন গ্রাম। যেইসব গ্রামে আজ থেকে ৪মাস পূর্বেও বসবাস করে আসছিলেন বাংলাদেশ বর্তমানে অনুপ্রবেশকারী ৯০হাজার অধিক রোহিঙ্গা। কিন্তু ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর একাধিক চৌকি আক্রান্তের ঘটনায় অপারেশন ক্লিয়ারেন্স এর নামে প্রায় ৪ মাস ব্যাপী রাখাইন প্রদেশের মংডু, বুচিডং, আকিয়াবসহ বিভিন্ন রোহিঙ্গা অধ্যুষিত পাড়া,গ্রাম গুলোতে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ব্যাপক তান্ডব চালানো ফলে এদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে এসব রোহিঙ্গা পরিবার গুলো। এই পরিবার গুলোতে ৪/৬জন করে ছেলে-মেয়ে রয়েছে। এদের অনেকেই শিশু। আজকে যাদের হাতে বই,কলম,খাতা থাকার কথা কিন্তু তাদের কাছে দুঃখ, বেদনা, অশ্রুজ¦ল আর হতাশা ছাড়া কিছুই নেই। জায়গা-জমি, সহায়-সম্পদ,ধন,দৌলত সহ দেশ মাতৃকার মায়া ত্যাগ করে আজ পরবাসী হতে হয়েছে এই রোহিঙ্গা শিশু’র পিতা-মাতাদের। তবুও এ রোহিঙ্গা শিশুদের দুঃখ বেদনা ভূলে খেলা-ধূলাই দিন কাটে তাদের।
উখিয়া সদর থেকে ৮কিলোমিটার অদূরে বালুখালী পানবাজার থেকে মাত্র অর্ধকিলোমিটার দক্ষিণে বিশাল বনভূমির পাহাড়ে গড়ে উঠেছে প্রায় ২৫’শ রোহিঙ্গা বস্তি ঘর। এসব বস্তিতে প্রায় ২০হাজার রোহিঙ্গা রয়েছে বলে বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক জরিপ থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বস্তিতে বৃদ্ধ, যুবকের তুলনায় শিশুর সংখ্যাও কম নয়, তার প্রমাণ পাওয়া যায় বুধবার সরেজমিন দেখে। বিপাল একটি মিছিল দেখে প্রথমে মনে হয়েছিল মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোন বিক্ষোভ, কিন্তু দেখা যায় তা নয়, ক্যাম্পে ৮টি ব্লক পৃথক ভাবে ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করে, উক্ত ফুটবল খেলায় ক্যাম্প কমিটির প্রধান লালু মাঝির দল খেলায় বিজয়ী হয়েছে। বিজয় মিছিল চলছে। তাদের দেখে মনে হল, নিজ দেশের সেই নির্যাতন-নিপীড়ন,অত্যাচার,জুলুম সমস্ত চিত্র ভূলে গিয়ে তারা এখন হেঁসে খেলে পরদেশে অনেক ভালো আছে।
জাহেদ হোসেন (১০) নামের এক রোহিঙ্গা শিশু জানান, তাদের কাছে এখন কোন দুঃখ-বেদনা নেই। কারণ মিয়ানমার সেনা ও রাখাইন উগ্রবাদী কর্তৃক নানা নির্যাতন, ঘরবাড়ি, জ¦ালিয়ে দেওয়া, নারী-শিশু ধর্ষণের লোমহর্ষক চিত্র ভুলে থাকতে তারা এখন খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকে। শান্ত পরিবেশ-পরিস্থিতি, স্বাধীন চলাফেরা, স্কুলে পড়ালেখার সুযোগ সৃষ্টি করাসহ পূর্ণাঙ্গ নাগরিকত্বের অধিকার পেলে তারাও নিজ দেশে ফিরে যাবে বলে মতামত ব্যক্ত করে এই শিশু।
তবে এদিকে সম্প্রতি মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষদূত ইয়াং ঘি লি ও আরকানের জন্য গঠিত আরকান কমিশন তথা জাতিসংঘের সাবেক মহা সচিব কপি আনান কমিশন অন্তবর্তিকালীন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের স্ব-দেশে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিত রোহিঙ্গাদের সাথে সরাসরি কথা বলতে মিয়ানমার সরকারের রাষ্ট্রীয় পরামর্শক অং সান সুচির অফিস কর্তৃক গঠিত মিয়ানমার তদন্ত কমিশন গত ১৯-২০তারিখ উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালী এবং টেকনাফের লেদা নতুন রোহিঙ্গা বস্তি পরিদর্শন করেছে। এসময় মিয়ানমার কমিশন নির্যাতিত বিভিন্ন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সাথে পৃথক পৃথক সাক্ষাৎকার গ্রহন করেছে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।