১৬ মে, ২০২৪ | ২ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ৭ জিলকদ, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেড মাঝিকে  তুলে নিয়ে   গুলি করে হত্যা   ●  যুগান্তর কক্সবাজার প্রতিনিধি জসিমের পিতৃবিয়োগ   ●  জোয়ারিয়ানালায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত রামু কলেজের অফিস সহায়ক   ●  রামুর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায়  আসছে চোরাই গরু   ●  রামুতে ওসির আশকারায় এসআই আল আমিনের নেতৃত্বে ‘সিভিল টিম’   ●  ড. সজীবের সমর্থনে বারবাকিয়ায় পথসভা   ●  কক্সবাজারে শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক সার্জেন্ট রোবায়েত    ●  উখিয়ায় রোহিঙ্গা যুবককে গলা কেটে হত্যা   ●  বাহারছরা পুলিশের অভিযানে হত্যা চেষ্টা মামলার তিন আসামি গ্রেফতার   ●  নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে কচ্ছপিয়ার নোমান চেয়ারম্যানের হুমকি

ভালবাসার জালে বন্দি চেয়ারম্যান সাইফুল

77374_ee

 ভালবাসার জালে আটকে পড়েছেন রামু মিঠাছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল। সেই জাল থেকে বেরোতে পারছেন না তিনি। ছাড়তে চাইলেও তাকে ছাড়ছে না ভালবাসার সেই জাল। বছর আগে প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে জেলে যান তিনি। জেল থেকে বের হয়ে আবারও ভালবাসার পরশে আপন করে নেন প্রেমিকা ইসমতকে। দায়িত্ব নেন ইসমতের গর্ভে জন্ম নেয়া সন্তানেরও। কিন্তু সন্তানের দায়িত্ব নিলেও প্রেমিকাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে রাজি নন তিনি। এ নিয়ে আবারও তিক্ততায় জড়িয়ে পড়েছেন দুজন। সম্প্রতি পরিষদে দুজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত বছরের ১৭ই জুলাই প্রেমিকাসহ হোটেল কক্ষ থেকে আটক হন মিঠাছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল। দীর্ঘদিন জেলও খাটেন। শুরু থেকে প্রেমিকাকে বেশ্যা দাবি করে তার সঙ্গে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন। এমনকি প্রেমিকার গর্ভের সন্তানকে অবৈধ বলে দাবি করে আসছিলেন ওই চেয়ারম্যান। অপরদিকে প্রেমিকা ইসমত শুরু থেকে দাবি করে আসছিলেন, তার গর্ভের সন্তান চেয়ারম্যান সাইফুলের। ইসমত আরার দাবি, চেয়ারম্যান সাইফুলের সঙ্গে তার সম্পর্ক দীর্ঘ ৮ বছরের। এ দীর্ঘ সময়ে দুজন স্বামী-স্ত্রীর মতো অবাধ মেলামেশা করেছেন। রাত কাটিয়েছেন একত্রে। প্রেমিক চেয়ারম্যানের কথায় গর্ভাবস্থায় এক সন্তান নষ্ট করেছেন তিনি। ফের তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়লে আবারও বাচ্চা নষ্ট করতে চাপ দেন চেয়ারম্যান। এতে বাদ সাধেন তিনি। চেয়ারম্যানের চলচাতুরী বুঝতে পেরে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা প্রেমিকা পুলিশের আশ্রয় নেন। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বছরের ১৭ই জুলাই মোটেল প্রবালের একটি কক্ষ থেকে প্রেমিকাসহ পুলিশের হাতে আটক হন চেয়ারম্যান সাইফুল। প্রেমিকা বাদী হয়ে মামলা করেন সাইফুলের বিরুদ্ধে। প্রেমিকার দায়ের করা নারী নির্যাতন মামলায় জেলে যান প্রেমিক সাইফুল। জেল থেকে বের হয়ে আবারও ভালবাসার পরশে আপন করে নেন প্রেমিকা ইসমতকে। শহরের গোলদীঘির পাড় এলাকায় বাসা নিয়ে দেন তাকে। তার গর্ভের সন্তান ভূমিষ্ট হলে ওই সন্তানের দায়িত্ব নেন তিনি। ইসমতের সিজার থেকে শুরু করে সন্তানের ওষুধপাতিসহ যাবতীয় খরচের ব্যয়ভার বহন করেন প্রেমিক চেয়ারম্যান। আগের মতই প্রেমিকার সঙ্গে “ঘনিষ্ঠ” যোগাযোগ তার। কিন্তু সন্তানের ভরণ-পোষণ করলেও প্রেমিকাকে স্ত্রীর স্বীকৃতি দিতে চান না চেয়ারম্যান। এ নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হলেও চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই ঝুলে আছে বিষয়টি। বরাবরের মতই বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করছেন চেয়ারম্যান। বিভিন্ন কৌশলে প্রেমিকার মুখ বন্ধ রাখার চেষ্টা তার। তবে চেয়ারম্যান বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করলেও গোপন রাখছেন না প্রেমিকা ইসমত।
মামলার বাদী ও প্রেমিকা ইসমত আরা জানান, জেল থেকে বের হয়ে তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দেয়ার কথা ছিল। কথামতো আমাকে শহরে বাসা নিয়ে দেন। আমার ও ছেলের ভরণ-পোষণ করেন তিনি। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। তিনি বলেন, গোপনে আমার জন্য সব কিছু করতে রাজি চেয়ারম্যান, কিন্তু প্রকাশ্যে কিছুই করতে রাজি নন। ভরণ-পোষণ না পেয়ে তিনি সম্প্রতি চেয়ারম্যানের পরিষদে যান। জনসম্মুখে চেয়ারম্যান তাকে না চেনার ভান করেন। পরে ইসমত নিজ থেকে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে চেয়ারম্যান তাকে প্রকাশ্যে পরিষদ থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। এতে ইসমতও তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। পরে পরিষদের মেম্বার চৌকিদার দফাদাররা দুজনকে শান্ত করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইউনুছ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ওই মহিলার সঙ্গে অবৈধ মেলামেশা করে আসছিলেন চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম। প্রায়ই স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তারা শহরের বিভিন্ন হোটেলে রাত কাটাতেন। কিন্তু চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর সাইফুলের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে যায়। ওই মহিলাকে কৌশলে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন। তার আচরণ সন্দেহজনক হলে আইনের আশ্রয় নেন ওই মহিলা। তিনি বলেন, বাদীর গর্ভের সন্তানের ডিএনএ টেস্ট করিয়েছেন তারা। এতে রিপোর্ট পজেটিভ আসে। ওই মামলায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সিএস দেন তিনি। মামলার আইও আরও বলেন, চেয়ারম্যান জেল থেকে বের হয়ে প্রেমিকা ও সন্তানের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নেন। পরে তাদের মধ্যে ৬ লাখ টাকার কাবিন মূলে বিয়ে হয়েছে বলেও শুনেছেন তিনি। এর পর কি হয়েছে তা জানেন না। এ ব্যাপারে জানার জন্য চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি উল্টো প্রশ্ন করে জানতে চান, কোন ইসমত? কোন সন্তান? আমিতো কিছুই জানি না। ডিএনএ টেস্ট এর কথা স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বলেন, এটি ডাক্তারের বিষয়, এ ব্যাপারেও তিনি কিছুই জানেন না।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।