৩০ এপ্রিল, ২০২৪ | ১৭ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২০ শাওয়াল, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  মরিচ্যা পালং উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে মনজুর মেম্বার প্যানেলের চমক   ●  সাংবাদিক মাহিকে কেন ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, জানতে চেয়ে হাইকোর্টের রুল    ●  মোটর সাইকেল প্রতীকের প্রার্থী নুরুল আবছারের ব্যাপক গনসংযোগ   ●  কক্সবাজার পৌরসভার উদ্যোগে বিশুদ্ধ পানি বিতরণ অব্যাহত   ●  ঈদগাঁওতে সোহেল, ইসলামাবাদে রাজ্জাক, ইসলামপুরে দেলোয়ার, জালালাবাদে জনি ও পোকখালীতে রফিক বিজ়য়   ●  মুক্তিযোদ্ধা এম. আবদুল হাই’র ১০তম মৃত্যুবার্ষিকী ২৯ এপ্রিল   ●  হোয়াইক্ষ্যং হাইওয়ে পুলিশের অভিযানে গুলিসহ দু’জন গ্রেফতার   ●  তীব্র তাপদাহে মানুষের পাশে মেয়র মাহাবুব   ●  টেকনাফে অপহরণ চক্রের দুই সদস্য গ্রেফতার   ●  মেয়র মাহাবুবের অর্থায়নে প্রতিবন্ধীদের মাঝে সহায়ক উপকরণ বিতরণ

ফরেস্টার সাজ্জাদ হত্যার মূল ঘাতক সেই বাপ্পী পুলিশের জালে

ডাম্পট্রাক চাপা দিয়ে ফরেস্টার সাজ্জাদুজ্জামান সজলকে পিষিয়ে হত্যার ঘটনায় ৮ দিন পর মূল ঘাতক ডাম্পট্রাক চালক মো. বাপ্পীকে গ্রেফতার করেছে উখিয়া থানা পুলিশ। তাকে চট্রগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সূত্রে প্রকাশ।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে সোমবার বিকেলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) মো. রাসেল মূল ঘাতক বাপ্পিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এখনো অভিযান চলমান রয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টায় উখিয়া থানা কম্পাউন্ডে অভিযানের বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
গত রবিবার (৩১ মার্চ) ভোরে উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় পাহাড় কেটে মাটি পাচার করছিল একদল বনদস্যু। খবর পেয়ে বন বিভাগের দোছড়ি বিটের কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামানসহ কয়েকজন বনকর্মী ঘটনাস্থলে যান। এ সময় তিনিসহ মোটরসাইকেল আরোহী দুজনকে পাচারকারীদের মাটিভর্তি ডাম্প ট্রাক চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে সাজ্জাদুজ্জামান মারা যান।মোহাম্মদ আলী নামের অপর এক বনরক্ষী আহত হন।
৩০ বছর বয়সি নিহত মো. সাজ্জাদুজ্জামান কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বনবিটের বিট কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি মুন্সীগঞ্জ জেলার গজরিয়া উপজেলার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে। ঘটনায় ২৭ বছর বয়সি আহত বনরক্ষী মোহাম্মদ আলী টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ঝিমংখালী এলাকার আবুল মজ্ঞুরের ছেলে।
এঘটনায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় এর আগে এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। সোমবার (১ এপ্রিল) বনবিভাগের উখিয়ার রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী মো. শফিউল আলম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
আসামিরা হলেন, উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম হরিণমারা এলাকার মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে ও ডাম্পট্রাকটির চালক মো. বাপ্পী (২৩), একই এলাকার সুলতান আহম্মদের ছেলে ছৈয়দ আলম ওরফে কানা ছৈয়দ (৪০) ও তার ছেলে মো. তারেক (২০), রাজাপালং ইউনিয়নের তুতুরবিল এলাকার নুরুল আলম মাইজ্জার ছেলে হেলাল উদ্দিন (২৭), হরিণমারা এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে ছৈয়দ করিম (৩৫), একই এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে আনোয়ার ইসলাম (৩৫), আব্দুর রহিমের ছেলে শাহ আলম (৩৫), হিজলিয়া এলাকার ঠান্ডা মিয়ার ছেলে মো. বাবুল (৫০), একই এলাকার ফরিদ আলম ওরফে ফরিদ ড্রাইভারের ছেলে মো. রুবেল (২৪) এবং হরিণমারা এলাকার শাহ আলমের ছেলে কামাল উদ্দিন ড্রাইভার (৩৯)।
মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি ছৈয়দ করিম (৩৫)।
অভিযানের বিষয়ে একই কথা জানিয়েছেন উখিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন।
গত রোববার বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী নিহত বিট কর্মকর্তার পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকার চেক তুলে দেন। এসময় মন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে দুষ্কৃতকারীদের মিনি ট্রাকচাপায় নিহত বন বিভাগের কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামানের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে কাজ করছে মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গতঃ ২০২০ সালে ফরেস্টার হিসেবে বন বিভাগে যোগ দেন সাজ্জাদুজ্জামান সজল। দোছড়ি বনবিটে গত বছরের শেষ দিকে যোগ দেওয়ার পর থেকেই পাহাড় অধ্যুষিত উখিয়ায় পাহাড় ও বন রক্ষায় প্রায় প্রতিরাতেই অভিযান পরিচালনা করে আসছিলেন তিনি। গত তিন মাসে দুই ডজনের মতো ডাম্পট্রাক জব্দ করে মামলার আওতায় এনে রেঞ্জ অফিসে রেখেছেন তিনি। একরাতে চারটি মাটিভর্তি ডাম্পট্রাক জব্দের ঘটনাও আছে তার। এসব কারণে তার ওপর চরম ক্ষুব্ধ ছিল পাহাড়খেকো চক্র। যার ফলশ্রুতিতে তাকে গাড়িচাপায় হত্যার শিকার হতে হয়েছে বলে মনে করছেন তার সহকর্মীরা।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।