১৬ মে, ২০২৪ | ২ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ৭ জিলকদ, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেড মাঝিকে  তুলে নিয়ে   গুলি করে হত্যা   ●  যুগান্তর কক্সবাজার প্রতিনিধি জসিমের পিতৃবিয়োগ   ●  জোয়ারিয়ানালায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত রামু কলেজের অফিস সহায়ক   ●  রামুর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায়  আসছে চোরাই গরু   ●  রামুতে ওসির আশকারায় এসআই আল আমিনের নেতৃত্বে ‘সিভিল টিম’   ●  ড. সজীবের সমর্থনে বারবাকিয়ায় পথসভা   ●  কক্সবাজারে শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক সার্জেন্ট রোবায়েত    ●  উখিয়ায় রোহিঙ্গা যুবককে গলা কেটে হত্যা   ●  বাহারছরা পুলিশের অভিযানে হত্যা চেষ্টা মামলার তিন আসামি গ্রেফতার   ●  নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে কচ্ছপিয়ার নোমান চেয়ারম্যানের হুমকি

পানি কমলেও কাটেনিই আতংক!

Picture Chakaria

কক্সবাজারের টানা বর্ষনের বিভিন্ন গ্রামে পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে গেলেও এখনো আতংক কাটেনিই দূর্গতদের মাঝে। এখনো নিচু এলাকায় গুলোতে পানি রয়ে গেছে। দুর্গত এসব মানুষ পড়েছে বাসস্থান, খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সঙ্কটে। সেই সাথে বেড়েছে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব। প্রশাসন ও বিভিন্ন সংস্থা-ব্যক্তি ত্রাণ বিতরণ করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তাই ত্রাণের জন্য হাহাকার চলছে বন্যা কবলিত জনপদে।
গত কয়েকদিনের বর্ষনে চকরিয়া, পেকুয়া উপজেলার ৪০টি ইউনিয়নের দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে অন্তত ১০ লাখ মানুষ। গবাদি পশুসহ ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, চিংড়ি ঘের, ফসলি জমি ও রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে জেলার রামু, চকরিয়া, পেকুয়া, কক্সবাজার সদরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শনিবার রাত থেকে বৃষ্টি কম হওয়ায় রোববার সকাল থেকে নামতে থাকে বন্যার পানি। এতে পরিস্থিতি উন্নতি হতে থাকে। পানি নেমে যাওয়ায় পানির নিচে ডুবে যাওয়া বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য অবকাঠামো দৃশ্যমান হচ্ছে। একই সাথে ভেসে উঠছে ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র। পানির নিচে থাকায় বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির এখন পর্যন্ত নিরূপণ করা যায়নি।
অন্যদিকে পানি নামলেও দুর্ভোগ কমেনি। আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বন্যার্ত অনেকে বাড়িতে ফিরলেও ঠাঁই হচ্ছে না বসবাসের। ধান, চালসহ নিত্য প্রয়োজনী সব সামগ্রী তলিয়ে যাওয়ায় করা যাচ্ছে না রান্নাবান্না। তাই এখনো ত্রাণের উপর সবাই নির্ভর হয়ে আছেন সবাই। কিন্তু মিলছে না কাঙিক্ষত ত্রাণ! কিছু কিছু মিললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। তাই খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির জন্য বন্যা দুর্গত জনপদে হাহাকার চলছে। সেই সাথে ডায়রিয়াসহ নানা রোগবালাই দেখা দেয়ায় প্রয়োজন পড়েছে ওষুধ ও চিকিৎসা সেবার। বন্যাদুর্গত মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে জেলার ৮৮টি মেডিকেল টিম কাজ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। যেখানে দরকার সেখানে ছুটে যাবে মেডিকেল টিম।
জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, আনুষঙ্গিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে না পারলেও এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া হয়েছে। এসব নিহতের পরিবারকে তাৎক্ষণিক সহযোগিতা হিসেবে ২০ হাজার টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। এছাড়া বানভাসীদের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে বরাদ্দ ত্রাণ ও ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ড. অনুপম সাহা জানান, সরকারি ১৪১ আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যা কবলিত ৬৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। তার মধ্যে অনেকে বাড়িতে ফিরে গেছে। দুর্গত মানুষদের ১৪৫ মেট্রিক টন চাল, ৯৫ বস্তা চিড়া, ৯০ বস্তা গুড় ও নগদ ১১ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি মৃত ব্যক্তির পরিবারে ২০ হাজার টাকা নগদ সাহায্য দেয়া হচ্ছে।
এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির অভিযোগ, দুর্গতদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। তবে প্রশাসনের দাবি, প্রতিটি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে এবং পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
রামু উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম জানিয়েছেন, সরকারিভাবে যে বরাদ্দ দুর্গত এলাকায় দেয়া হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় কম।
জোয়ারের পানিতে রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কে যান চলাচল আংশিক বন্ধ রয়েছে। রোববার সকাল থেকে কক্সবাজার টেকনাফ সড়ক দিয়ে যানচলাচল স্বভাবিক রয়েছে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।