১৫ মে, ২০২৪ | ১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ৬ জিলকদ, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেড মাঝিকে  তুলে নিয়ে   গুলি করে হত্যা   ●  যুগান্তর কক্সবাজার প্রতিনিধি জসিমের পিতৃবিয়োগ   ●  জোয়ারিয়ানালায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত রামু কলেজের অফিস সহায়ক   ●  রামুর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায়  আসছে চোরাই গরু   ●  রামুতে ওসির আশকারায় এসআই আল আমিনের নেতৃত্বে ‘সিভিল টিম’   ●  ড. সজীবের সমর্থনে বারবাকিয়ায় পথসভা   ●  কক্সবাজারে শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক সার্জেন্ট রোবায়েত    ●  উখিয়ায় রোহিঙ্গা যুবককে গলা কেটে হত্যা   ●  বাহারছরা পুলিশের অভিযানে হত্যা চেষ্টা মামলার তিন আসামি গ্রেফতার   ●  নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে কচ্ছপিয়ার নোমান চেয়ারম্যানের হুমকি

দোছড়ির কুষ্ঠ আক্রান্ত নারী তপিকা ম্রো’র মানবেতর জীবন

Mro Nari Topika
পরিবারের কেউ বেঁেচ নেই। কুষ্ঠ আক্রান্ত নারী হওয়ায় চরম অপবাদ ও বৈষম্যের কারনে অন্য দশ নারীর মত কোন পুরুষ তাকে বিয়ে করতেও রাজি হয়নি। শুধু তাই নয়; হাতে ও পায়ে কুষ্ঠ আক্রান্ত ক্ষত হওয়ায় পরিবার ও সমাজে পর্যন্ত বসবাস করতে পারেনি। ফলে বাধ্য হয়ে বেসরকারী এনজিও সংস্থা দি লেপ্রুসী মিশন ইন্টারন্যশনাল বাংলাদেশ এর দেওয়া একমাত্র মাথা গোজার বসতঘরটিতে একাকিত্ব জীবন যাপন করে আসছিলেন দেশের সর্বশেষ সীমান্ত নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের দূর্গম মেনথন ম্রো পাড়ার বাসিন্দা মৃত চংওয়াই ম্রোর মেয়ে তপিকা (তাক্কনি) ম্রো (৪২)।
জম্মের আনুমানিক ১৫ বছর থেকে হাত ও পায়ে কুষ্ঠ আক্রান্ত হয়ে পড়ে তপিকা ম্রো। পরিবারের অপর একমাত্র ভাইটি’রও মৃত্যু হয়েছিল কুষ্ঠ রোগে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার মহীমায় এখনো তপিকা ম্রোকে মৃত্যু স্পর্শ করতে পারেনি।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় কুষ্ঠ রোগ প্রতিরোধে কাজ করা দি লেপ্রুসি মিশন ইন্টারন্যশনাল বাংলাদেশ এর উপজেলা হেলথ এন্ড ডেভলপমেন্ট ফেসিলেটর টুন্টু চাক্মা এ প্রতিবেদককে জানান- প্রথমে তপিতা ম্রো’র কুষ্ঠ আক্রান্ত শারীরিক অবস্থা জানতে পেরে বিগত ২০০২ সালে লেপ্রুসি মিশনের পক্ষ থেকে তাকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (০১/০২-১৯) রেজিভুক্ত করে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে চিকিৎসা সেবা শুরু করা হয়। সে থেকে সামগ্রিক সেবা দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু সম্প্রতি তার মাথা গোজার একমাত্র ঘরটি পুড়ে যাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে সে মানবেতন জীবন যাপন করছে। তপিকা ম্রোর মানবেতন জীবন যাপনের কথা স্বীকার করেন দোছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রশিদ আহামদ।
গত ২৯ মার্চ দৈব কারণে তপিকা ম্রো’র পরনের কাপড় ছাড়া বাকি সবই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এর পর থেকে গত ১১ দিন খোলা আকাশের নিচে অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতন দিন কাটাচ্ছে। ইতিপূর্বে বেসরকারী এনজিও সংস্থা দি লেপ্রুসী মিশন ইন্টারন্যশনাল বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আর্থ সামাজিক পূর্নবাসনের লক্ষে এ ঘরটি তৈরী করে দেওয়া হয়েছিল তাকে। সেই একমাত্র সম্ভলটুকু পুড়ে যাওয়ায় তপিকা ম্রো বর্তমানে সর্বস্বান্ত। এখন আর মাথা গোঁজার মত কোন ঠাই নেই তার। সামনে বেচে থাকার মত কোন পথও খুজে পাচ্ছেনা তপিকা ম্রো।
মানবতার খাতিরে বিত্তবান ও দানশীল ব্যাক্তি কিংবা স্বনামধন্য করপোরেট প্রতিষ্ঠানের যে কোন ধরনের সহযোগিতা পেলে কুষ্ঠ আক্রান্ত তপিকা ম্রোর চলমান দুরবস্থা সমাধানসহ মাথা গোজার ঠাই পাবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
উল্লেখ্য, কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত রোগীর পা থেকে মাথা পর্যন্ত যে কোনো অঙ্গই আক্রান্ত হতে পারে এবং চিকিৎসা না করলে মৃত্যুও হতে পারে। বর্তমানে বিজ্ঞানের অগ্রগতির বদৌলতে মৃত্যুর হার অভাবনীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে এবং কুষ্ঠ রোগীরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন।
দি লেপ্রুসী মিশন ইন্টারন্যশনাল বাংলাদেশ নাইক্ষ্যংছড়িতে ২০০২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আনুমানিক ৮১জন রোগীকে চিকিৎসা প্রদান করে। এনজিওটির সার্বিক সহযোগিতায় উপজেলায় বর্তমানে ৬জন রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করছে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।