২৯ মার্চ, ২০২৪ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ | ১৮ রমজান, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  উখিয়ায় পাহাড় চাপা পড়ে রোহিঙ্গা শ্রমিকের মৃত্যু   ●  স্বদেশ ফিরতে ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ   ●  মহাসড়কে ফুটপাত দখলমুক্ত করার উদ্যোগ রামু ক্রসিং হাইওয়ে থানার   ●  কক্সবাজারে হাফেজ মুশফিকুর রহমানকে সংবর্ধনা দিল ছাত্রলীগ   ●  রামুতে এক ঘন্টার ব্যবধানে স্কুল ছাত্রসহ হতাহত চার   ●  সুগন্ধা পয়েন্টের লাল মিয়াসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা   ●  সাংবাদিক রাশেদুল মজিদের উপর পুলিশের হামলা, এক সদস্যের তদন্ত কমিটি   ●  কক্সবাজারে ট্রাফিক পুলিশের ‘আসকারায়’ যত্রতত্র পার্কিং, কোটি টাকার বাণিজ্য   ●  কক্সবাজারে ট্রাফিক পুলিশের অনিয়ম-দূর্নীতি ও প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি   ●  ড্রাইভিং পেশায় মহিলাদের সুযোগ দিলেন সেভ দ্য চিলড্রেন ও সিএনআরএস

তিন দিন পার হলেও সন্ধান নেই সালাহউদ্দিনের

তিন দিন পার হলেও সন্ধান নেই সালাহউদ্দিনের
তিন দিন পার হয়ে গেলেও বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদের সন্ধান দিতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে একদল সাদা পোশাকধারী লোক উত্তরার একটি বাড়ি থেকে দুই গৃহকর্মীসহ তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরের দিন সালাহউদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ এ অভিযোগ করেন।

বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের পক্ষে কৌশলগত অবস্থানে থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদ মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার খোঁজ পেতে কয়েকদিন আগেই ২ গাড়ি চালকসহ ৩ জনকে আটক করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে তার পরিবারের অন্য সদস্যরাও রয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে ছিলেন তিনি। সালাহউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে জানান, গত মঙ্গলবার রাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পরের দিনই উত্তরার ওই বাড়ির মালিক ভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।

অপরদিকে তাকে তুলে নেওয়ার পর থেকেই তার পরিবারের সদস্যরা পুলিশ, র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে খোঁজ নেন। কিন্তু প্রতিটি সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, সালাহউদ্দিন আহমেদ নামে কাউকে আটক করা হয়নি।

এরপর তার পরিবারের পক্ষ থেকে গত বুধবার রাতে পরিবারের সদস্যরা গুলশান থানায় জিডি করতে যান। কিন্তু গুলশান থানা পুলিশ ঘটনাটি তাদের এলাকায় না হওয়ায় উত্তরা (পশ্চিম) থানায় জিডি করতে যেতে বলা হয়। এরপর তারা উত্তরা পশ্চিম থানায় গেলেও পুলিশ জিডি নেয়নি। এরপর সালাহউদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ হাইকোর্টে একটি আবেদন দায়ের করেন।

অপর দিকে সালাহউদ্দিন আহমেদের আটক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অস্বীকারের ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

বেগম খালেদা জিয়া বলেন, ক্ষমতাসীনরা এর দায় এড়াতে পারে না। তাদের কোনো কৈফিয়ত কারো কাছেই গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য হবে না। তিনি অবিলম্বে সালাহউদ্দিন আহমেদকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

আর গত বৃহস্পতিবার সকালে মিরপুরের পুলিশ স্টাফ কলেজে এক অনুষ্ঠান শেষে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বিএনপি’র যুগ্ম-মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আটক বা গ্রেফতার করেনি। তার পরিবার বিষয়টি নিয়ে যে অভিযোগ করেছেন, তা এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে এখনো পরিষ্কার ও স্পষ্ট নয়। তিনি হয়তো অন্য কোথাও পালিয়ে বা লুকিয়ে থাকতে পারেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যদি সালাহউদ্দিন আহমেদকে গ্রেফতার করতো, তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করা হতো। তারপরও পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন বলেই আমরা তা তদন্ত করে দেখছি। তবে সালাহউদ্দিনের পরিবারের পক্ষ থেকে জিডি না নেয়ার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কোন প্রকার মন্তব্য করেননি। সালাহউদ্দিন আহমেদেকে তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দেয়ারও দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার বিকালে সুপ্রিম কোর্টে ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের কক্ষে এক প্রেস কনফারেন্সে হাসিনা আহমেদ বলেন, সালাহউদ্দিনকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নিয়ে গিয়ে এখন অস্বীকার করছে।

আর ‘গোয়েন্দা’ পরিচয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যারা তাকে তুলে নিয়ে গেছেন, তারা ওই বাসার দারোয়ানের কাছে নিজেদের ‘গোয়েন্দা’ বলে পরিচয় দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, তারা সালাহউদ্দিকে তুলে নিয়ে যায়নি। কিন্তু এভাবে তুলে নিয়ে যাবে, কেউ কিছু বলবে না, এটা কীভাবে হয়। তাকে যে অবস্থায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সে অবস্থায় ‘অক্ষতভাবে’ ফিরিয়ে দেয়া বা কোর্টে হাজির করা হোক।

শনিবার রাতে সালাহউদ্দিন আহমেদের বাসার দুইজনকে ধরে নিয়ে অকথ্য নির্যাতন করে গুলশান থানায় সোপর্দ করা হয়। এরপর তাদেরকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন। হাসিনা আহমেদ সাংবাদিকদের কাছে জানতে চান, তাদের কী দোষ? তারা তো পেটের দায়ে চাকরি করেন। তিনি আরো বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে ছয়টি গাড়ি যোগে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সাদা পোশাকে উত্তরার ওই বাসায় ঢোকার আগে বাসার নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে তাদের পরিচয়পত্র দেখায়। এরপর ওই বাড়ির লোকজন আমাকে জানিয়েছেন, সালাহউদ্দিনকে যারা ধরে নিয়ে গেছেন, তারা সবাই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। ফলে সেখান থেকেই আমরা বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি।

এদিকে সালাহউদ্দিন আহমেদকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাইকোর্টে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ বৃহস্পতিবার ফৌজদারি কার্যবিধিতে একটি আবেদন করেন। আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও মওদুদ আহমদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রুল দেন। রুলে স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, র‌্যাবের মহাপরিচালক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারসহ আট বিবাদীকে রোববারের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

শুনানিকালে আদালত বলেন, যেকোনো নিখোঁজ নাগরিককে খুঁজে বের করা রাষ্ট্রের বা সরকারের দায়িত্ব।

এব্যাপারে উত্তরা (পশ্চিম) থানায় যোগাযোগ করা হলে থানার ডিউটি অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিষয়টি ব্যাপারে  ওসি স্যারের সাথে যোগাযোগ করুন।

এরপর থানার ওসি রফিকুল ইসলামের মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আমি খেতে বসেছি পরে কথা বলব।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।