১৭ মে, ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ৮ জিলকদ, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সবকিছু কঠোর থাকবে, অনিয়ম হলেই ৯৯৯ অভিযোগ করা যাবে   ●  উখিয়া -টেকনাফে শাসরুদ্ধকর অভিযানঃ  জি থ্রি রাইফেল, শুটারগান ও গুলিসহ গ্রেপ্তার ৫   ●  রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেড মাঝিকে  তুলে নিয়ে   গুলি করে হত্যা   ●  যুগান্তর কক্সবাজার প্রতিনিধি জসিমের পিতৃবিয়োগ   ●  জোয়ারিয়ানালায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত রামু কলেজের অফিস সহায়ক   ●  রামুর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায়  আসছে চোরাই গরু   ●  রামুতে ওসির আশকারায় এসআই আল আমিনের নেতৃত্বে ‘সিভিল টিম’   ●  ড. সজীবের সমর্থনে বারবাকিয়ায় পথসভা   ●  কক্সবাজারে শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক সার্জেন্ট রোবায়েত    ●  উখিয়ায় রোহিঙ্গা যুবককে গলা কেটে হত্যা

উখিয়ায় কর্মসৃজন প্রকল্পে লুটপাট, প্রশাসনের রহস্যজনক ভূমিকা

Ukhiya Pic-28-05-2

কক্সবাজারের উখিয়ায় অতিদরিদ্র লোকজনের সামাজিক নিরাপত্তা বলয়মূলক কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে অনিয়ম, লুটপাট থেমে নেই। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির লোকজন, সংশি¬¬ষ্ট ট্যাগ অফিসার, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস বা পিআইও অফিসের যোগসাজসে অনুমোদিত শ্রমিকের শতকরা ৬০ শ্রমিকের কাজে নিয়োগ না করিয়ে সরকারী অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে এ প্রকল্পে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের পক্ষ থেকে সংশি¬¬ষ্ট ২৭ জনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় ৭টি মামলা করার পরও দুর্নীতি ও অনিয়ম করা যাচ্ছে না।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী প্রণোদনা মূলক অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসৃজন কর্মসূচী বা ইজিপিপি প্রকল্পের নীতিমালা উখিয়ায় অনুসরণ করা হচ্ছে না। নীতিমালা অনুযায়ী প্রকল্পের তথ্য সম্বলিত সাইন বোর্ড দর্শনীয় স্থানে সর্বসাধারণের জন্য টাঙ্গানোর কথা থাকলেও ৮৬ ভাগ প্রকল্পে কোন সাইন বোর্ড দেখা যায়নি। প্রকল্পের অনুমোদিত শ্রমিকের নাম ঠিকানা সম্বলিত দৈনিক হাজিরা খাতা শ্রমিক সর্দারের নিকট সর্বসাধারণের জন্য সংরক্ষণ করার নির্দেশ থাকলেও কোন প্রকল্পে তা পাওয়া যায়নি। সপ্তাহের শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত ৫ দিন প্রকল্পের শ্রমিকরা কাজ শেষ পূর্বক প্রতি বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা সপ্তাহের তাদের পারিশ্রমিক ব্যাংক হিসেবে চেকের মাধ্যমে তুলার নিয়ম থাকলেও শ্রমিকরা ব্যাংকে টাকার জন্য আসে না। উপকার ভোগীর তালিকা থেকে নাম কেটে দেওয়ার ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রমিকরা বলেন, প্রকল্প কমিটির সভাপতি ও সচিবরা তাদের বলে দিয়েছে ব্যাংকে যেতে হবে না। ফলে তাদের মজুরীর টাকা সংশি¬ষ্ট প্রকল্প কমিটির সভাপতি বা সচিবরা নগদ প্রদান করে থাকে।
চলতি সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বুধবার ২৭ মে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের আরকান সড়ক থেকে পশ্চিম দিকে মিন্টু বাড়ি পর্যন্ত সড়ক সংস্কার প্রকল্পে অনুমোদিত ৩৬ জন শ্রমিকের মধ্যে ১১ জনকে উপস্থিত পাওয়া যায়। একই ইউনিয়নের পালংখালী বাস ষ্টেশন থেকে পশ্চিম দিকে সড়ক সংস্কার প্রকল্পে কোন লোক পাওয়া যায়নি। উক্ত প্রকল্প কমিটির সভাপতি কামাল উদ্দিন মেম্বার বলেন, এসব কাজে এর চেয়ে বেশী শ্রমিক আসার কথা না। তিনি বলেন, বিভিন্ন খরচ পাতি হিসেব করে প্রকল্পের কাজ চালাত হয়। তাই লোকজন একটু কম আসে। অপর প্রকল্প কমিটির সভাপতি মহিলা মেম্বার জাহেদা বেগম এ ব্যাপারে কোন কিছু বলতে অপরাগতা প্রকাশ করে। একই ইউনিয়নের আরকান সড়ক থেকে চিকন ছড়া হয়ে আশার পাড়া পর্যন্ত সড়ক সংস্কার কাজে ৩৫ জনের মধ্যে ১৯ জন শ্রমিকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। প্রকল্প সভাপতি আব্দুস শুক্কুর মেম্বার বলেন, আমার প্রকল্পের দুই জায়গায় কাজ চলছে। একই সাথে থাইংখালী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ সংলগ্ন গৌজঘোনা এলাকার কাজে অন্য শ্রমিকরা নিয়োজিত রয়েছে। রহমতের বিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ডিসি রোডে দুপুর ১২ টার দিকে ২০ জন শ্রমিকের দেখা পাওয়া যায়। স্থানীয় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল¬াহ বলেন, শ্রমিকের উপস্থিতি সংখ্যা একটু কম হলেও নিয়মিত শ্রমিকরা কাজে আসে।
পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এ প্রকল্পের কাজ হচ্ছে এখানে খোদার গজব। সর্বসাকুল্যে এ ইউনিয়নে কর্মসৃজন প্রকল্পের ২০ শতাংশ কাজও বাস্তবায়ন হচ্ছে না এবং শতকরা ২০ জন শ্রমিকও এখানে উপস্থিত হয় না। এব্যাপারে চেয়ারম্যান হিসেবে বললে মেম্বাররা উল্টো আমাকে নানা হেনস্থা করার চেষ্টা করে। উখিয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বা পিআইও বাকী বিল¬াহ বলেন, ইতিমধ্যে ৬ সপ্তাহ কাজ হয়েছে এবং ৪ সপ্তাহের শ্রমিক মজুরী পরিশোধ করা হয়েছে। কাজের গুনগতমান ও শ্রমিকের উপস্থিতি মোটামুটি সন্তোষজনক। ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করে সংশি¬ষ্ট প্রকল্পে অনুপস্থিত শ্রমিকদের মজুরী বিল করা হয়নি। তবে কত জন শ্রমিক অনুপস্থিতির কারণে বিল করা হয়নি তা তিনি জানাতে পারেনি।
উলে¬খ্য অতিদরিদ্র লোকজনদের আত্ম সামাজিক ভাবে শক্তিশালী গড়ে তুলার লক্ষে চলতি অর্থ বছরে অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচীর আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ চলমান রয়েছে। উখিয়ার ৫ ইউনিয়নে ৩১টি উন্নয়ন প্রকল্পের অনুকূলে ১৪ শ ৬৭ জন অনুমোদিত শ্রমিক নিয়মিত কাজ করার কথা থাকলেও বাস্তবে উখিয়ার সর্বত্র সর্বোচ্চ ৩৫-৪০ শতাংশ শ্রমিকের বেশি উপস্থিত হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। উক্ত ৪০ দিনের কর্মসূচীর জন্য ১ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা ব্যয় বরাদ্দ রয়েছে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।