১৫ মে, ২০২৪ | ১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ৬ জিলকদ, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেড মাঝিকে  তুলে নিয়ে   গুলি করে হত্যা   ●  যুগান্তর কক্সবাজার প্রতিনিধি জসিমের পিতৃবিয়োগ   ●  জোয়ারিয়ানালায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত রামু কলেজের অফিস সহায়ক   ●  রামুর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায়  আসছে চোরাই গরু   ●  রামুতে ওসির আশকারায় এসআই আল আমিনের নেতৃত্বে ‘সিভিল টিম’   ●  ড. সজীবের সমর্থনে বারবাকিয়ায় পথসভা   ●  কক্সবাজারে শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক সার্জেন্ট রোবায়েত    ●  উখিয়ায় রোহিঙ্গা যুবককে গলা কেটে হত্যা   ●  বাহারছরা পুলিশের অভিযানে হত্যা চেষ্টা মামলার তিন আসামি গ্রেফতার   ●  নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে কচ্ছপিয়ার নোমান চেয়ারম্যানের হুমকি

উখিয়ার দুই ঘোড়সওয়ার ঘিরে রাখলো তিন নৌকার মাঝিকে!

আলাউদ্দীন সিকদার:

যারা ঘোড়া চালায় তাদের বলা হয় ঘোড়সওয়ার বা হর্সম্যান। কিন্তু এখানে ঘোড়সওয়ার কথাটা আসলো কেন। এই প্রশ্নের উত্তর আছে। কেউ নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হলে তাকে নৌকার মাঝি বলে অ্যাখ্যা দেওয়া হয়। যদি ঘোড়া মার্কা নিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হয় তাহলে তাদের কী বলা হবে সেটা একটা প্রশ্ন হয়ে যায়। বাংলা ভাষা অনুযায়ী যারা ঘোড়া চালায় তাদের ঘোড়সওয়ারি বা অশ্বারোহী বলা হয়।

সম্প্রতি শেষ হলো দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন। সারাদেশের ন্যায় উখিয়া উপজেলাতেও অনুষ্ঠিত হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। যেখানে ৫ ইউনিয়নে দলীয় প্রতীকের নৌকা মার্কা নিয়ে তিনজন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে। বাকি দুজন স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া মার্কা নিয়ে জয় লাভ করেছে।

ওই তিনজনের মধ্যে দলীয় প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ১নং জালিয়াপালং ইউনিয়নের নৌকার মাঝি এস.এম ছৈয়দ আলম। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন চশমা মার্কার নুরুল আমিন চৌধুরী। ২নং রত্নাপালং ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার মাঝি নুরুল হুদা। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ঘোড়া মার্কার নুরুল কবির চৌধুরী। ৪নং রাজাপালং ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ঘোড়া মার্কার সাদমান জামী চৌধুরী। এদের পরাজিত সবাই ছিলেন স্বতন্ত্রপ্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থী।

কিন্তু ৩নং হলদিয়াপালং ও ৫নং পালংখালী এই বাকি দুই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ঘোড়া মার্কার দুই স্বতন্ত্রপ্রার্থী। হলদিয়ায় ইমরুল কায়েস চৌধুরী ও পালংখালীতে এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী। এই দুই স্বতন্ত্রপ্রার্থীর মধ্যে ইমরুল কায়েস চৌধুরী ছিলেন বিদ্রোহী প্রার্থী। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নৌকার মাঝি অধ্যক্ষ শাহ আলম। পালংখালীতে নির্বাচিত চেয়ারম্যানের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন চশমা মার্কার আরেক স্বতন্ত্রপ্রার্থী এডভোকেট এম.এ মালেক। এই দুই ইউনিয়ন বাদে অন্য তিন ইউনিয়নে নৌকার মাঝিরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে।

ভৌগলিক অবস্থানের দিক থেকে উখিয়া উপজেলার শুরু হলদিয়াপালং ইউনিয়ন থেকে। এর শেষ পালংখালী ইউনিয়নে গিয়ে। উত্তরে রামু উপজেলা আর দক্ষিণে টেকনাফ উপজেলা। মাঝখানে উখিয়া উপজেলা। এই উপজেলার শুরু ও শেষ সীমানায় দুই ঘোড়া মার্কার প্রার্থীর বিজয় লক্ষণীয় বিষয়। যেন ঘোড়া মার্কার স্বতন্ত্রপ্রার্থী দিয়ে উখিয়ার শুরু-শেষ। ভৌগলিক অবস্থান অনুযায়ী মাঝখানে রয়েছে নবনির্বাচিত তিন নৌকার মাঝি। মনে হচ্ছে যেন এই তিন চেয়ারম্যানকে বাকি স্বতন্ত্রপ্রার্থী দুই চেয়ারম্যান দুপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে।

এখানে ঘিরে রাখা মানে চাপে রাখা নয়। নিরাপত্তার চাদরও বলা যেতে পারে। স্বতন্ত্র বলেই কি দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত হওয়া চেয়ারম্যানদের সাথে সাংঘর্ষিক হবে? অথবা তার উল্টোটা? কখনোই না। কারণ বিগত দিনেও দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থী একসাথে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে গেছেন। একসাথে উপজেলা পরিষদে বসেছেন। তাঁদের মধ্যে ছিল ঐক্য। এবারেও নিশ্চয়ই এর ব্যাতিক্রম কিছু হবে না। হয়তো নবনির্বাচিতদের দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদের পাশাপাশি উপজেলা পরিষদ আরও কয়েকধাপ এগিয়ে যাবে।

এ বিষয় নিয়ে উৎসুক জনতার মাঝেও দেখা গেছে উৎসাহ। মানুষ ঘোড় মার্কার দুই স্বতন্ত্রপ্রার্থীর বিষয়ে বলছেন, এই দুই চেয়ারম্যানই যেন নিজ উপজেলার শেষ সীমানার অতন্দ্র প্রহরী। তবে দেখা যাবে তিনবারের নির্বাচিত এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী কিংবা প্রথমবার নির্বাচিত ইমরুল কায়েস চৌধুরী কীভাবে বাকিদের সাথে খাপ খাইয়ে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারবেন। আশা করা হচ্ছে, নির্বাচিতরা শিগগিরই শপৎবাক্য পাঠ করে নতুনভাবে পরিষদ গঠন করবেন।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।