১৪ মে, ২০২৪ | ৩১ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৫ জিলকদ, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেড মাঝিকে  তুলে নিয়ে   গুলি করে হত্যা   ●  যুগান্তর কক্সবাজার প্রতিনিধি জসিমের পিতৃবিয়োগ   ●  জোয়ারিয়ানালায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত রামু কলেজের অফিস সহায়ক   ●  রামুর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায়  আসছে চোরাই গরু   ●  রামুতে ওসির আশকারায় এসআই আল আমিনের নেতৃত্বে ‘সিভিল টিম’   ●  ড. সজীবের সমর্থনে বারবাকিয়ায় পথসভা   ●  কক্সবাজারে শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক সার্জেন্ট রোবায়েত    ●  উখিয়ায় রোহিঙ্গা যুবককে গলা কেটে হত্যা   ●  বাহারছরা পুলিশের অভিযানে হত্যা চেষ্টা মামলার তিন আসামি গ্রেফতার   ●  নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে কচ্ছপিয়ার নোমান চেয়ারম্যানের হুমকি

আমার স্বামী কেমন আছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এটুকুই জানান

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই তুলে নিয়ে গেছে বলে আবারো জোর দিয়ে বলেছেন তার স্ত্রী ও সাবেক এমপি হাসিনা আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘আমি শতভাগ নিশ্চিত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে গেছে। আজ ১৩ দিন তার কোনো খবর নেই। সে কোথায় আছে, কেমন আছে- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শুধু এই খবরটুকুই আমাকে দেন, আর কিছুই আপনার কাছে চাই না।’

সোমবার দুপুরে গুলশানের ৭২ নং সড়কের ৭ নম্বর প্লাটিনাম রেসিডেন্সে আরটিএনএন’র সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় হাসিনা আহমেদ এসব কথা বলেন।

উল্লেখ্য, গত ১০ মার্চ থেকে ‘নিখোঁজ’ রয়েছেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ। এ নিয়ে স্ত্রীর করা রিট আবেদনে হাইকোর্ট তাকে খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে।

তবে আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে পুলিশ, র‌্যাব, ডিবি ও সিআইডি বলেছে, তারা সালাহ উদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তার করেনি।

এমন প্রেক্ষাপটে ১৯ মার্চ স্বামীকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি স্মারকলিপি দেন হাসিনা আহমেদ। এতে স্বামীকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং সাক্ষাতের অনুমতি চান তিনি।

তবে সোমবার হাসিনা আহমেদ জানালেন, তার লেখা চিঠির কোনো জবাব এখন পর্যন্ত তিনি পাননি। হাসিনা আহমেদের ভাষ্যে, ‘প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে আমি তার সঙ্গে দেখা করার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু এখনো তার কোনো জবাব আমি পাইনি।’

কথাগুলো বলার সময় বার বার চোখ মুছতে থাকেন হাসিনা আহমেদ। কথা আটকে যেতে থাকে তার। পাশে বসা ছোট মেয়ে ফারিবা আহমেদ রাইদা ও ছোট ছেলে সৈয়দ ইউসুফ আহমেদও মায়ের এ অবস্থা দেখে কেঁদে ফেলে।

হাসিনা আহমেদ বলেন, ‘আমি বারবার বিভিন্ন মাধ্যমে আমার স্বামীকে ফেরত পেতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করে চলেছি। সংবাদ মাধ্যমেও তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাইনি।’

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কথা বললে তিনি আমার মনোকষ্টের কথা বুঝতে পারবেন। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিলে স্বামীকে আমি অক্ষত অবস্থায় জনসম্মুখে পেতে পারি। আমার পরিবার, আমার সন্তানদের কথা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী সদয় হবেন, নিরাশ করবেন না বলেও আমি এখনো আশাবাদী।’

সাবেক এই এমপি বলেন, ‘আমি শতভাগ নিশ্চিত- আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উত্তরার একটি বাসা থেকে সালাহ উদ্দিনকে তুলে নিয়ে গেছে। আমাদের কাছে অনেক সাক্ষ্য-প্রমাণ আছে, যা ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে এসেছে। এরপরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবাই তা অস্বীকার করছে।’

‘বাবা সালাহ উদ্দিনকে না পেয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ছোট মেয়ে ফারিবা আহমেদ রাইদা ও ছোট ছেলে সৈয়দ ইউসুফ আহমেদ। মেয়ে দশম শ্রেণি এবং ছেলে নবম শ্রেণিতে পড়ে। যারা এই রাজনৈতিক পরিবারের খোঁজ নিতে যান, তাদেরই জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয় রাইদা-ইউসুফ, কোনো কথা বলতে পারে না, বলে চলেন হাসিনা আহমেদ।

তিনি জানান, সারাক্ষণ ওরা চুপচাপ থাকছে। বাবার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করছে। বাবাকে ফিরে পেতে নফল রোজাও রাখছে রাইদা ও ইউসুফ।

অন্যদিকে, বিদেশে থাকা সন্তানরা ভেঙে পড়েছেন বাবার নিখোঁজের খবরে। বড় ছেলে সৈয়দ ইব্রাহিম আহমেদ (২৩) কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছেন। দ্বিতীয় সন্তান পারমিজ আহমেদ ইকরা (১৯) মালয়েশিয়ায় একটি মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করছেন।

দুজনেই তাদের মায়ের কাছে বাবার খবর জানতে ঘণ্টায় ঘণ্টায় ফোন দেন। নির্বাক মা তাতের কোনো সান্ত্বনাই দিতে পারেন না।

সালাহ উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী আরও বলেন, ‘বড় দুই সন্তান ঘণ্টায় ঘণ্টায় ফোন করে বাবার খবর জানতে চাইছে। ফোন করে তারা কান্নাকাটি করে। আমি নির্বাক হয়ে থাকি। কিছুই বলতে পারি না ওদের। বাবাকে ফিরে পেতে তারা নামাজ পড়ে, আল্লাহর কাছে হাত তুলে দোয়া করছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, আমার স্বামী এখনও বেঁচে আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতেই রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমার প্রতি একটু সদয় হলেই আমার সন্তানরা তার বাবাকে ফিরে পাবে।’

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।