১৯ মে, ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১০ জিলকদ, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  এভারকেয়ার হসপিটালের শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তাহেরা নাজরীন এখন কক্সবাজারে   ●  কালেক্টরেট চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী সমিতির সভাপতি আব্দুল হক, সম্পাদক নাজমুল   ●  ক্যাম্পের বাইরে সেমিনারে অংশ নিয়ে আটক ৩২ রোহিঙ্গা   ●  চেয়ারম্যান প্রার্থী সামসুল আলমের অভিযোগ;  ‘আমার কর্মীদের হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে’   ●  নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সবকিছু কঠোর থাকবে, অনিয়ম হলেই ৯৯৯ অভিযোগ করা যাবে   ●  উখিয়া -টেকনাফে শাসরুদ্ধকর অভিযানঃ  জি থ্রি রাইফেল, শুটারগান ও গুলিসহ গ্রেপ্তার ৫   ●  রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেড মাঝিকে  তুলে নিয়ে   গুলি করে হত্যা   ●  যুগান্তর কক্সবাজার প্রতিনিধি জসিমের পিতৃবিয়োগ   ●  জোয়ারিয়ানালায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত রামু কলেজের অফিস সহায়ক   ●  রামুর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায়  আসছে চোরাই গরু

৭ ই মার্চ মঞ্চে দৃপ্তপায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পাকিস্তানের সামরিক শাসক গোষ্ঠী এই দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে বিলম্ব করতে শুরু করে। প্রকৃতপক্ষে তাদের উদ্দেশ্য ছিল, যে কোনভাবে ক্ষমতা পশ্চিম পাকিস্তানী রাজনীতিবিদদের হাতে কুক্ষিগত করে রাখা। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ৩রা মার্চ জাতীয় পরিষদ অধিবেশন আহ্বান করেন। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে ১লা মার্চ এই অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতবি ঘোষণা করেন। এই সংবাদে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ২রা মার্চ ঢাকায় এবং ৩রা মার্চ সারাদেশে একযোগে হরতাল পালিত হয়। তিনি ৩রা মার্চ পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত এক বিশাল জনসভায় সমগ্র পূর্ব বাংলায় সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সেদিন ৭ ই মার্চ
ঢাকার রমনায় অবস্থিত রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান)
বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে মুক্তির বাণী শোনার জন্য সেদিন সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ দলে দলে রেসকোর্স ময়দানে সমবেত হয়। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নারী-পুরুষের রেসকোর্স ময়দান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, টিএসসি, রমনা পার্কসহ আশপাশের এলাকা ছিল পূর্ণ। মঞ্চের সামনে নারীদের বসার জন্য ছিল বিশেষ ব্যবস্থা। কারও হাতে লাঠি, কারও হাতে বাঁশ। পোস্টার, ফেস্টুন, ফানুস সঙ্গে ‘জাগো জাগো-বাঙালি জাগো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা-পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘তোমার নেতা আমার নেতা শেখ মুজিব, শেখ মুজিব’, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর-বাংলাদেশ স্বাধীন কর’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত ছিল সেদিনকার রেসকোর্স।

বাঙ্গালির দুঃখ, দুদর্শার সারথী লাখো
বঙ্গবন্ধু এসেছেন জাতির উদ্দ্যেশে পরবর্তী
সময়ের জন্যে আগাম বার্তা দিতে।
বিকাল আনুমানিক ৩টা ২০ মিনিটে মঞ্চে উঠেছিলেন সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি আর হাতকাটা কালো `জহর` কোট পরে বাঙালির প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধু দৃপ্তপায়ে উঠেন মঞ্চে। দাঁড়ান মাইকের সামনে
মূল উদ্দেশ্য ছিল সামরিক আইন প্রত্যাহার এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবীটির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা সেদিন অনুষ্ঠিত জনসভায় শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত এক ঐতিহাসিক ভাষণ।
দীর্ঘ ১৮ মিনিট স্থায়ী এই ভাষণে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহবান জানান।
এই ঐতিহাসিক ভাষণের শুরুতেই তিনি বলেছিলেন ভায়েরা আমার, আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি
মধ্যেকার দিকে বলেছিলেন
আমি, আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না। আমরা এদেশের মানুষের অধিকার চাই।
প্রত্যেক মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোল। তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু – আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি, তোমরা বন্ধ করে দেবে।
আমরা ভাতে মারবো, আমরা পানিতে মারবো।

সামরিক বাহানীকে হুশিয়ার করে দিয়ে বঙ্গবন্ধু সেদিন বলেছিলেন।
তোমরা আমার ভাই, তোমরা ব্যারাকে থাকো, কেউ তোমাদের কিছু বলবে না। কিন্তু আর আমার বুকের ওপর গুলি চালাবার চেষ্টা করো না। সাত কোটি মানুষকে দাবায়া রাখতে পারবা না।

ভাষণে শেষদিকে বাঙ্গালীর
মনে শক্তি জাগরনের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু বলেন
“তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। রক্ত যখন দিয়েছি, আরো রক্ত দেবো। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম জয় বাংলা
হাজার বছরের সর্ব শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, বাংলার অবিসংবাদী নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ ই মার্চের ডাক পরর্বতী পাড়ায় মহল্লায় সংগ্রাম, পরিষদ গড়ে উঠতে শুরু হয়েছিলো সেই ভাষণের সূত্র ধরে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত হয় এই বাংলার বিজয়।

 

 

ইব্রাহীম আজাদ বাবু,

 
যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক,
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ,
কক্সবাজার জেলা শাখা।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।