৫ মে, ২০২৪ | ২২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৫ শাওয়াল, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  কক্সবাজারে শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক সার্জেন্ট রোবায়েত    ●  উখিয়ায় রোহিঙ্গা যুবককে গলা কেটে হত্যা   ●  বাহারছরা পুলিশের অভিযানে হত্যা চেষ্টা মামলার তিন আসামি গ্রেফতার   ●  নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে কচ্ছপিয়ার নোমান চেয়ারম্যানের হুমকি   ●  কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সিরাজুল হক ডালিম’র ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ   ●  নিরাপদ নুরুল আবছারকেই পছন্দ ভোটারদের   ●  আদালতে তিন মামলারই জবানবন্দি দিলেন অস্ত্র সহ গ্রেফতার সিরাজ   ●  টেকনাফে অপহরণ চক্রের সদস্য অস্ত্রসহ গ্রেফতার   ●  উপজেলা চেয়ারম্যান শফিউল্লাহর প্রার্থীতা বাতিলে হাইকোর্টে রিট   ●  প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর ৩০ বছরের পথচলা ও সাফল্য উদযাপন

শীতের সকালে কুটুম পাখি ডাকে ইস্টি কুটুম

শীতকালের শেষের দিকে বসন্তের আগমনে আগাম আবাস নিয়ে পাখিদের কোলাহল। সকালে কুটুম পাখি ডাকে ইস্টি কুটুুুম ।বসন্তের আগমনে গাছে ফুল ফোটে। বসন্তে পাখিরা গাছে ভিড় করে। কেউ ফুলের মধু চুষতে আসে। কেউবা আসে পোকার লোভে। কিছু পাখি আসে ভালোবাসার টানে। তবে ভালোবাসাটা তাদের গাছের ফুলের প্রতি নয়। সঙ্গিনীর টানে আসে ওইসব পাখিরা। চোখগেল, বসন্তবৌরি, বেনেবউ পাখিগুলো কিছুটা লাজুক প্রকৃতির। বছরের অন্যসময় লোকালয়ের ধারে কাছে এদের খুঁজে পাওয়া কঠিন। কিন্তু বসন্তকালে ওরা মরীয়া। তাছাড়া পুরুষ পাখিগুলো সঙ্গিনীকে ডাকার সময় এলাকা ভাগ করে নেয়। পারতপক্ষে একজনের এলাকায় আরেকজন পা দিয়ে যুদ্ধের জন্য আটঘাট বেঁধেই দেয়।

যেসব পাখি মাঠে সুবিধা করতে পারে না, তারা সঙ্গিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য বেছে নেয় লোকালয়। মানুষকে এড়িয়ে চলা পাখি। যে-সে গাছে বসলে মানুষের সান্নিধ্যে চলে আসার আশঙ্কা আছে। তাই বেছে নেয় শিমুলের মতো উঁচু গাছ। চোখগেল আর বসন্তবৌরি শিমুলের মগডালে বসে তারস্বরে চিৎকার করে। তবে ওদের কণ্ঠ মধুমাখা। আর বেনেবউ, যাকে আমরা হলদে পাখি বলি–ওদের গলায় অত জোর নেই। তাই সবসময় এক জায়গায় বসে ডাকে না। এ গাছে, ও গাছে ঘুরে ঘুরে ‘ইস্টি কুটুম… ইস্টি কুটুম’ স্বরে ডেকে বেড়ায়।এ পাখি গুলো যখন গাছের ডালে বসে ডাক দেয় তখন গ্রামের মানুষেরা বলেন কুটুম পাখি ডাকছে বাড়িতে মেহমান আসবে।

এমনিতে ওদের ওই ডাকে কেউ পাত্তা দিত না। কিন্তু যে বাড়ি নতুন বউ আছে, সে বাড়িতে খুশির রোল পড়ে যেত। সবাই ধরেই নিত নতুন বউয়ের গর্ভে একটা পুত্র সন্তান আসছে। পরে নতুন বউয়ের মেয়ে সন্তান জন্মালে হলদে পাখির কথা কেউ মনে রাখে না। তবে ছেলে হলে বলত–‘ওই দেখো, এ বাড়িতে ‘খোকা হও’ পাখি ডেকেছিল, খোকা না হয়ে যাবে কোথায়। যুগ যুগ ধরে বাংলার ঘরে ঘরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সংক্রিমত হয়েছে বিশ্বাসের ভিত। এই যুগে এসেও সে বিশ্বাস কিছুটা হয়তো নড়চড় হয়েছে, তবে একেবারে ধুয়েমুছে যায়নি।
হঠাৎ আমার চোখেই পড়ে হলদে পাখির বাসাটা। একটা আম গাছের ডালে।পাখিটা ধীর পায়ে ডাল বেয়ে এগিয়ে গেল বাসাটার দিকে।বিভিন্ন গাছের শুকনো পাতা দিয়ে বানানো ছোট্ট বাসাটা দেখতে ভারী সুন্দর। কিছু কিছু প্রজাতির পাখিদের শুধু পুরুষরাই বাসা বানায়। তারপর স্ত্রী পাখিদের আহবান করে তারা বাসাটা দেখার জন্য। যার বাসা স্ত্রী পাখি পছন্দ করে, তার সাথেই জোড়া বাঁধে।
পূর্ণবয়স্ক ‘কালোমাথা-বেনেবউ হলদে পাখি’ ঘাড়সহ মাথাটা পুরোয় কালো। কিন্তু তরুণ পাখির ঠোঁটের উপর থেকে মাথার উপরি ভাগটা কালো নয়। সাদার ওপর কালো তিলা দাগ।
বাংলাদেশে তিন ধরনের হলদে পাখি আছে। সোনাবউ, কালোমাথা-বেনেবউ, কালোঘাড়-বেনেবউ। এদের সবার শরীরের প্রধান রং হলুদ। এছাড়া এই পরিবারের আরও এক প্রজাতির পাখি আছে। তামারং-বেনেবউ। ওদের শরীরের প্রধান রং তামাটে। আমাদের এলাকায় এখনও পর্যন্ত শুধু কালোমাথা-হলদে পাখি দেখাই পেয়েছি।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।