২ মে, ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২২ শাওয়াল, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  টেকনাফে অপহরণ চক্রের সদস্য অস্ত্রসহ গ্রেফতার   ●  উপজেলা চেয়ারম্যান শফিউল্লাহর প্রার্থীতা বাতিলে হাইকোর্টে রিট   ●  প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর ৩০ বছরের পথচলা ও সাফল্য উদযাপন   ●  কক্সবাজার পৌরসভায় ৩ টি প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা   ●  কুতুবদিয়ায় সুপারডাইকে বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও পারাপারে ফেরী সার্ভিস চালুর দাবী   ●  ‘সবাইকে ভালোর দিকে ছুটতে  হবে, খারাপের দিকে নয়’   ●  বিজয়ী হয়ে অভিভাবকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন নজির আহাম্মদ   ●  চকরিয়ায় সাবেক সাংসদের উপস্থিতিতে সাংবাদিকের উপর হামলা   ●  উখিয়ায় কৃষি বিভাগের উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত   ●  দুর্নীতির মডেল উখিয়া পল্লীবিদ্যুৎ! ডিজিএম বললেন- ‘ভেতরের খবর’ আপনাকে দিবো কেন?

নাইক্ষ্যংছড়িতে জেগে উঠেছে সম্ভাবনাময়ী চা শিল্প

Ca bagan3

চা বাগানের কথা উঠলেই মনে পড়ে সিলেটের কথা। কিন্তু সিলেট, ফটিকছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবানের পর পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায়ও চা উৎপাদনে উজ্জল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে এ উপজেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে আশারতলীর জামছড়ি এলাকায় এন.আলম ট্রি এস্টেট ব্যাক্তি মালিকানায় প্রায় ২৫ একর ভূমিতে চা বাগান সৃজন করা হয়েছে। এটাই নাইক্ষ্যংছড়ির একমাত্র চা বাগান। বাগানটি গড়ার উদ্যেগ নিয়েছেন এলাকার বিশিষ্ট শিল্পপতি নুরুল আলম কোম্পানী। অন্তত শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এ বাগানে। যার বেশির ভাগই ওই এলাকার অভাবী নারী-পুরুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৩ কি:মি ও আশারতলী বিজিবি ক্যাম্প থেকে মাত্র দুই কি:মি দূরে সীমান্ত এলাকায় ব্যাক্তি মালিকানায় সবুজের বিস্তৃর্ণ সমারোহে প্রকৃতির অপরূপ সাজে এ চা বাগান গড়ে উঠেছে। তার মধ্যে আশারতলীকে আরো সুন্দর্য্য করে তোলেছে একই মালিকানার রাবার বাগান। উচু নিচু টিলা এবং টিলা ঘেরা সমতলে সবুজের চাষাবাদ করা হয়েছে। পাহাড়ের কিনার ঘেষে ছুটে গেছে আকাবাঁকা মেটোপথ। সম্প্রতি সময়ে এ চা বাগানটি অনেক পর্যটকের বিনোদনের তৃঞ্চা মিটিয়েছে। আশারতলী এলাকায় সম্ভাবনাময়ী এ শিল্পকে অর্থনৈতিক সহায়তা ও সরকারী পৃষ্টপোষকতা প্রদান করলে সিলেটের ন্যায় পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ির চায়ের উৎপাদনও জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে সক্ষম হবে।
সরেজমিনে গিয়ে বাগানের বিভিন্ন অংশে ঘুরে বাগান ম্যনেজার এম.এ জাহিদ হাসান এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, ২০০৬ সন থেকে কোন ঋণ ছাড়াই মালিকপক্ষ চারা এনে চা বাগান শুরু করেন। বর্তমানে প্রায় ২৫ একর ভূমি বিস্তৃত এ চা বাগান। আরো কিছু জমি চা চাষের আওতায় এনে চা প্রক্রিয়াজাত কার্যক্রম শুরু করা যাবে। এ বাগানে কার্টিং পদ্ধতিতে চা এর চারা তৈরীর নার্সারীও করা হয়েছে দুটি। তিনি আরো জানান, চা বীজ সংগ্রহ করে বীজতলায় ২০ সেন্টিমিটার থেকে ২০ সেন্টিমিটার ত্রিভুজ দূরত্ব পদ্ধতিতে লাগাতে হয়। বীজ বা কাটিং লাগানোর আগেই নার্সারির মাটি নেমাটোডমুক্ত রাখতে হবে। বীজতলায় ছায়া প্রদান আবশ্যক। প্রতি বেডে ৬০ থেকে ৭৫ সেন্টিমিটার উঁচুতে ছন বা বাঁশের চাটাই দিয়ে ছায়ার ব্যবস্থা করতে হয়। নার্সারির চারার বৃদ্ধি ও সজীবতার জন্য রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন। কাটিং নার্সারিতে ১৫০ থেকে ১৮০ সেন্টিমিটার উঁচুতে ছন বা বাঁশের চাপ্টা দিয়ে ছায়ার ব্যবস্থা করতে হয়। নার্সারিতে নিয়মিত পানি সেচ দিতে হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, চা বাগানে নারী-পুরুষ গ্রুপ পর্যায়ে বাগান পরিচর্যায় নিয়োজিত রয়েছে। ভবিষ্যতে বাগানটি আরো প্রসার করা হলে আশারতলী এলাকায় স্থানীয় মানুষের ব্যাপক কর্মক্ষেত্র তৈরী হবে।
এন এলম ট্রি এস্টেট এর মালিক নুরুল আলম কোম্পানী বলেন, গত কয়েক বছর পূর্বে পরীক্ষা মূলক ভাবে বাগানটি গড়ে তোলা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই বাগানের সফলতা দেখা যাচ্ছে। তাই চা বোর্ডের রেজিভুক্ত হওয়ার পর ২০১৬ সাল নাগাদ চা প্রক্রিয়াজাত কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।
সচেতনমহল মনে করেন, সুষ্ট ব্যবস্থাপনা, প্রশিক্ষণ, মালিকপক্ষকে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান এবং বাজারজাতকরণের সমস্যা না থাকলে এবং চা বাগান এলাকায় সরকারী ভাবে সড়ক নির্মাণ করা হলে অর্থনৈতিক সম্মৃদ্ধির পাশাপাশি আশারতলী এলাকায় চা চাষে সফলতা আসবে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: জাহিদুর রহমান জানান, চা বাগানটির খবর প্রথমে তিনি শুনে নিজ উদ্যেগেই বাগানটি পরিদর্শন করেছেন। বাগান পরিদর্শন কালীন চা কাটিং এবং ওখানকার পরিবেশ খুবই ভালো মনে হয়েছে। যার কারনে এখানে ব্যাপক চায়ের আবাদ করা সম্ভব। তবে উৎপাদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এছাড়াও মালিক পক্ষকে কৃষি অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাসও দেন তিনি।
উল্লেখ্য, অভিজ্ঞ মহলের মতে, সম্ভাবনাময় চা শিল্পের সর্বোচ্চ বিকাশের জন্য রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানো দরকার। এখানকার চা শিল্পের সঠিক উন্নয়ন হলে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা জোগান দেওয়ার পাশাপাশি রফতানি আয় যথেষ্ট বাড়বে। একই সঙ্গে বহু দক্ষ ও অদক্ষ লোকের কর্মসংস্থান হবে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।