সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়ন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান আরও ফলপ্রসূ করতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট বাধ্যতামূলক করতে একটি খসড়া পরিপত্র জারি করেছে মন্ত্রণালয়। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট নেই, তাদের ৩০ জুনের মধ্যে ওয়েবসাইটের ঠিকানা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়েছে।

ওয়েবসাইট তৈরি ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত ব্যয় সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারের বিধিমোতাবেক নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করতে পারবে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ওয়েবসাইট তৈরি করতে বলা হয়েছে।

ই-মেইল [email protected] -এর মাধ্যমে অাগামী ৩১ মার্চের মধ্যে সর্বসাধারণের মতামত দিতে পরিপত্রটি শিক্ষামন্ত্রণালয় তার নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব স্বাক্ষরিত ওই খসড়ায় ওয়েবসাইট ও তা হালনাগাদ করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্টদের ১০টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, সেখানে জেলা/উপজেলা পরিষদ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং শিক্ষানুরাগীদের সহযোগিতা নিয়ে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।

খসড়া পরিপত্রে বলা হয়, ওয়েবসাইটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন তথ্য ও ছবি যেমন- প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি, ইতিহাস, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের তথ্য, কনটেন্ট, ভূমির তফসিল ও মালিকানা, ভবন, কক্ষ সংখ্যা, প্রতিটি ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের অাসন সংখ্যা, পরিবহনসহ অন্যান্য সুবিধার তথ্যাদি, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম, কম্পিউটার ল্যাব, কম্পিউটারের ব্যবহার, পরিচ্ছন্নতা, শরীরচর্চা ও স্যানিটেশন সংক্রান্ত তথ্য, পঠিত বিষয়, বিভিন্ন অনুষ্ঠান, স্মরণীকা, অনুমোদিত পদ ও পূরণকৃত পদ, বিগত তিন বছরের পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল, ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি, প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত অাইন, বিধি, নীতিমালা, সার্কুলার, খেলার মাঠ, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, বিভিন্ন সফলতার তথ্য ও ছবি গ্যালারি অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে।

তবে শিক্ষার্থীদের তথ্য শুধু শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট অভিভাবকরা দেখতে পারবে। এ জন্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে খসড়া পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিদিন ক্লাস শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে শ্রেণি অনুসারে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতির সংখ্যা ওয়েবসাইটে অাপলোড করতে বলা হয়েছে।

ওয়েবসাইটে ক্লাস রুটিন, একাডেমিক ক্যালেন্ডার, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষাগুলোর ফলাফল, টিসি, জরুরি নোটিস, প্রশংসাপত্র, শিক্ষার্থী সম্পর্কিত সকল প্রকার রিপোর্ট, প্রতিষ্ঠানের একাউন্ট তথা প্রাত্যহিক কালেকশন, খরচ ও বিবরণসহ সব হিসাব ব্যবস্থাপনা, ই-বুক ইত্যাদি ছাড়াও নতুন সেবা অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা চলমান রাখতে বলা হয়েছে পরিপত্রে।

ওয়েবসাইট হালনাগাদ করতে বা কোনও সমস্যা দেখা দিলে তা ঠিক করতে অাউটসোর্সিং করা যাবে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিয়মিত ওয়েবসাইট হালনাগাদ করা যাবে।

উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজাররা বিষয়টি দেখভাল করবেন এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবেন। তার ভিত্তিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবেন এবং জেলা শিক্ষা অফিসার ওয়েবসাইট তৈরি এবং হালনাগাদ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে জমা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপজেলা ও জেলা শিক্ষা কমিটি সভায় পর্যালোচনা এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও অাইসিটি) বিষয়টি মনিটরিং করতে খসড়া পরিপত্রে বলা হয়েছে।