১৭ মে, ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ৮ জিলকদ, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  ক্যাম্পের বাইরে সেমিনারে অংশ নিয়ে আটক ৩২ রোহিঙ্গা   ●  চেয়ারম্যান প্রার্থী সামসুল আলমের অভিযোগ;  ‘আমার কর্মীদের হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে’   ●  নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সবকিছু কঠোর থাকবে, অনিয়ম হলেই ৯৯৯ অভিযোগ করা যাবে   ●  উখিয়া -টেকনাফে শাসরুদ্ধকর অভিযানঃ  জি থ্রি রাইফেল, শুটারগান ও গুলিসহ গ্রেপ্তার ৫   ●  রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেড মাঝিকে  তুলে নিয়ে   গুলি করে হত্যা   ●  যুগান্তর কক্সবাজার প্রতিনিধি জসিমের পিতৃবিয়োগ   ●  জোয়ারিয়ানালায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত রামু কলেজের অফিস সহায়ক   ●  রামুর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায়  আসছে চোরাই গরু   ●  রামুতে ওসির আশকারায় এসআই আল আমিনের নেতৃত্বে ‘সিভিল টিম’   ●  ড. সজীবের সমর্থনে বারবাকিয়ায় পথসভা

কেন আপনাকে স্বার্থপর হতে হবে?

একেএম লিয়াকত আলী :
যখন আপনি বিমান ভ্রমন করবেন, তখন ফ্লাইট উড্ডয়ন করার আগে বিমান বালা জরুরী পরিস্থিতিতে করনীয় সম্পর্কে বলে, “একটি অক্সিজেন মাস্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার সামনে উপস্থিত হবে। যদি আপনার কোন শিশুকে বা অন্য কাউকে সহায়তার করার প্রয়োজন হয়, তবে প্রথমে অক্সিজেন মাক্স আপনার মুখে লাগাইয়া নিজেকে নিরাপদ করুন এবং তারপর অন্যান্যদের সাহায্য করার চেষ্টা করুন।”
দেখুন,
জীবনটা ঠিক এইরকমই। আগে যেতে এবং অন্য কাউকে সাহায্য করার আগে, আপনাকে প্রথমে নিজেকে সাহায্য করতে হবে এবং আপনার নিজেকে নিরাপদ করতে হবে। এটাকে কিছু লোক স্বার্থপরতা বলতে পারে, কিন্তু যদি আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয় বা ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস নেন অথবা আপনার অজ্ঞান হওয়ার মত অবস্থা হয় এই অবস্থায় আপনি অন্য কাউকে সাহায্য করার চেষ্টা করছেন? এক্ষত্রে আপনার অভিপ্রায় যতই মহৎ বা মানবিক হোক না কেন – আমার কাছে এই মহৎ গুনের কোনো মূল্যই নেই। কেননা এটা বৃথা চেষ্টা মাত্র। প্রকৃতপক্ষে আপনি কারো কোনো সাহায্যই করতে পারবেন না। উল্টা নিজের প্রাণ প্রদীপ সবার আগে নিভে যেতে পারে।
দেখুন,
বিমান বালাদের এটা বলার একটা কারণ আছে, “এমনকি শিশুদের সাহায্য করার আগে প্রথমেই আপনার মাস্ক লাগিয়ে নিজেকে নিরাপদ করুন।” আপনার নিজেকে প্রথমেই স্থিতিশীল করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কেননা আপনি স্থিতিশীল হলে, আপনি সুস্থ থাকলে, তখন আপনি শিশুকে সাহায্য করতে পারবেন, আপনি বৃদ্ধা ভদ্রমহিলাকে, বৃদ্ধ মানুষকে অথবা কিশোরকে সাহায্য করতে পারবেন। আমি যা বলতে চাচ্ছি তা হলো -এটাকেই জীবন বলে- একজন বড় মনের পরোপকারী হতে হলে- প্রথমেই আপনার নিজের মাস্কটি সুরক্ষিত করার জন্য আপনাকে সময় নিতে হবে। সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আপনাকে সময় নিতে হবে নিজেকে আধ্যাত্মিকভাবে, শারীরিকভাবে এবং মানসিকভাবে নিরাপদ করার জন্য। এর মানে প্রয়োজনে আপনি বন্ধু, পরিবার ছেড়ে চলে যাবেন। এমনি কি নিশ্চিত নোবেল পুরস্কার পাবেন – এমন কোনো গবেষনাও বন্ধ করতে হবে। শুধু নিজের স্বার্থ সবার আগে দেখুন। কারন একটা অপারেশান রুমের দিকে তাকান- কোনো দর্শক প্রবেশ করার অনুমতি নেই – কোন গেস্ট, কোন বন্ধু, এমনকি পরিবার – কেউ না।
কিন্তু কেন?
কারণ রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতির কাজ চলছে।
ওয়েল,
একইভাবে, আপনি নিজের সেরা মহত্ব প্রকাশ করতে হলে, প্রথমেই আপনাকে আত্মকেন্দ্রিক হতে হবে – নিজের স্বার্থ দেখতে হবে – নিজেকে Well Secured করতে হবে।
পরিশেষে বলবো,
আপনার অক্সিজেন মাস্ক সঠিকভাবে সুরক্ষিত করতে পারলে – আপনি শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিকভাবে নিতে সক্ষম হবেন। তখন অন্যদের সাহায্য করার জন্য তাদের মাস্ক বা মুখোশ সঠিকভাবে লাগিয়ে সুরক্ষিত করা আপনার বাধ্যবাধকতা, আপনার কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়। তাই শুরুতে স্বার্থপর হওয়া কোনো ভাবেই অন্যায় বা ‘ভুল নয়। কিন্তু শুরুতে স্বার্থপর হলেও শেষ রেজাল্টটি নিঃস্বার্থ হতে হবে – তা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। তবে একটু গভীরভাবে চিন্তা করলে দেখবেন এখানেও পরোক্ষভাবে স্বার্থপরতা আছে। কারন আপনি জানেন যে, বিমানটি নিশ্চিত বিধ্বস্ত হবে – আশু বিপর্যয় অনিবার্য – শুধুমাত্র আপনি একজনই শ্বাস নিতে পারছেন, অন্য সবাই অজ্ঞান – এরূপ হলে তো আপনি মরার আগেই মরে যাবেন -তাই আপনার একাকিত্ব নিঃসঙ্গতা থেকে বাঁচার জন্য হলেও অন্যদের সাহায্য করে সঠিকভাবে তাদের মুখে মাস্ক লাগিয়ে ক্ষনিকের জন্য হলেও বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন।
লেখক : অফিসার ইনচার্জ, রামু থানা, কক্সবাজার।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।