১৮ মে, ২০২৪ | ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ৯ জিলকদ, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  ক্যাম্পের বাইরে সেমিনারে অংশ নিয়ে আটক ৩২ রোহিঙ্গা   ●  চেয়ারম্যান প্রার্থী সামসুল আলমের অভিযোগ;  ‘আমার কর্মীদের হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে’   ●  নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সবকিছু কঠোর থাকবে, অনিয়ম হলেই ৯৯৯ অভিযোগ করা যাবে   ●  উখিয়া -টেকনাফে শাসরুদ্ধকর অভিযানঃ  জি থ্রি রাইফেল, শুটারগান ও গুলিসহ গ্রেপ্তার ৫   ●  রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেড মাঝিকে  তুলে নিয়ে   গুলি করে হত্যা   ●  যুগান্তর কক্সবাজার প্রতিনিধি জসিমের পিতৃবিয়োগ   ●  জোয়ারিয়ানালায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত রামু কলেজের অফিস সহায়ক   ●  রামুর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায়  আসছে চোরাই গরু   ●  রামুতে ওসির আশকারায় এসআই আল আমিনের নেতৃত্বে ‘সিভিল টিম’   ●  ড. সজীবের সমর্থনে বারবাকিয়ায় পথসভা

সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

কক্সবাজারে হরতালের প্রভাব নেই, সক্রিয় আ’লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে। হরতালে নাশকতা ঠেকাতে সকাল থেকে কক্সবাজারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্ট ও মহাসড়কে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ফলে, সড়কে হরতালের তেমন কোন প্রভাব নেই বললে চলে। প্রায় প্রতিটি সড়কেই ভারি যানবাহন ছাড়া সবধরনের যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। নিত্যদিনের মতোই স্বাভাবিক চলছে আদালতের কার্যক্রম।
শনিবার বিএনপির সমাবেশ থেকে ঘোষণা আসে রবিবার (২৯ অক্টোবর) সকাল-সন্ধ্যা দেশব্যাপী হরতাল। সারাদেশের মতো শনিবার সন্ধ্যায় হরতালের বিপক্ষে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন এবং হরতালের পক্ষে বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠন মিছিল করে। অনেক সড়কে টায়ার জালিয়ে বিক্ষোভও দেখায় বিএনপি সমর্থকরা। বিএনপির হরতালকে সমর্থন দেয় নিবন্ধন বাতিল করা সংগঠন জামায়াতে ইসলামী ও সমমনা দলগুলো।
পূর্ব ঘোষণা মতে, হরতালে রবিবার মাঠে নামার কথা থাকলেও কক্সবাজার সদর ও অন্যান্য উপজেলা সমূহের কোথাও পিকেটিংয়ে নেই বিএনপি-জামায়তের নেতা-কর্মীরা। তবে, কক্সবাজার পৌর শহরের ঝাউতলা হোটেল রেনেসাঁসের সামনের প্রধান সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে লুকিয়ে যায় হরতাল সমর্থকরা।
সড়কে বিএনপি-জামায়াতের কেউ না থাকলেও অবস্থান নিয়েছে কক্সবাজার জেলা, পৌর আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। শহরের বিভিন্ন মোডে মোডে তাদের অবস্থান চোখে পড়ার মতো।
সড়কে যানবাহন নিয়ে বের হওয়া ক্ষুদ্রযানের চালকরা জানান, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া-ঈদগাঁও-রামু-উখিয়া-টেকনাফ ও কক্সবাজার সদরের কোথাও কোন পিকেটিং বা হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করা দলগুলোর নেতাকর্মীদের অবস্থান চোখে পড়েনি। যাত্রী নিয়ে চলাচলের সময় কোথাও কোন বাধার মুখে পড়তে হয়নি। তবে, শনিবার রাজধানীতে বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন লাগানোর দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মিডিয়ায় দেখেছি- তাই আমাদের মাঝে কিছুটা আতঙ্ক কাজ করছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কাইছার হামিদ বলেন, কক্সবাজার শহরের গুরুত্বপূর্ণ ১২টি পয়েন্টে পুলিশের টিম মাঠে রয়েছে।
কক্সবাজারের চকরিয়া চিরিঙ্গা হাইওয়ে থানার ইনচার্জ খোকন কান্তি রুদ্র জানান, হরতালে সরকারি সম্পত্তি, সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ও স্বাভাবিক চলাচল বজায় রাখতে কক্সবাজার মহাসড়কের বানিয়ারছড়া স্টেশনে হাইওয়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থান রয়েছে। তার নেতৃত্বে পুলিশের পৃথক দুইটি টিম মাঠে দায়িত্বপালন করছে। হরতালের নামে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনায় ছাড় দেয়া হবে না।
টেকনাফ মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, টেকনাফে পুলিশ সতর্ক অবস্থান রয়েছে। পুলিশের পৃথক চারটি টিম সবধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কাজ করছে।
পেকুয়া থেকে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান অপু জানিয়েছেন, পেকুয়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সর্তক অবস্হানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।তবে যান চলাচল খুব কম রয়েছে। দূর পাল্লার বাস ছাড়েনি।
রোববার(২৯ অক্টোবর) ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া হরতাল চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। হরতাল শুরু হলেও এখনো পর্যন্ত কোন  মিছিল ও মিটিং  হয়নি  বিএনপি-জামায়াত সমর্থকের পক্ষ থেকে। সকাল সাড়ে ৯টা ক্ষমতাশীল দলের পক্ষ থেকে শান্তি মিছিল করা হয়েছে। শান্তি মিছিল শেষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বক্তব্য রাখেন,এই সময় বাজারের দোাকানপাট খোলা রাখার জন্য আহবান করেন ও জামায়াত-বিএনপি হরতালকে প্রতিহত করার সব সময় প্রস্তত।
গণপরিবহনের সংশ্লিষ্টরা বলছে,হরতালের কারণে রাস্তা গাড়ি সংখ্যা কম।কতৃপক্ষ নির্দেশ দিলে পেকুয়া থেকে চট্টগ্রাম যাত্রীবাহী বাস ছাড়া হবে।
হরতালের কারণে সাধারণ জনগণ আতঙ্কে রয়েছে, বাজারে দ্রব্য মূল্যার বৃদ্ধি করা হয়েছে। স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজ খোলা থাকলেও ছাত্রছাত্রীর পরিবহনে কারণে যাতাযাতের ব্যাঘাত হচ্ছে।
বেলা ১২ টার দিকে পেকুয়া থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ওমর হায়দার বলেন, বিএনপি- জামায়াতের হরতালে পেকুয়া কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্তক অবস্থায় রয়েছে। পুলিশের পৃথক ৬টি টিম মাঠে রয়েছে।
রামু থেকে সাংবাদিক কপিল উদ্দিন জানান, বিএনপি ঘোষিত হরতালের রামুতে কোন চিহ্নই দেখা যায়নি। সকাল থেকে সতর্ক অবস্থান নেয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। মাঠে রয়েছে আওয়ামী লীগ অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
তবে, সকাল ৭ টার দিকে হরতাল সমর্থনে কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মিনিট দশেকের জন্য অবস্থান নিয়ে ফটোস্যুট করে আবার মাঠ ছাড়েন।
রামু থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু তাহের দেওয়ান বলেন, নাশকতা ঠেকাতে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। এই পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
উখিয়া থেকে সাংবাদিক সাঈদ মুহাম্মদ আনোয়ার  বলেন, উখিয়ায় মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছ। সরকারি-বেসরকারি অফিস গুলো খোলা, স্বাভাবিক রয়েছে যান চলাচল। কোনখানেই হরতাল সমর্থকদের অবস্থান নেই। মাঠে টহলে রয়েছে পুলিশের একাধিক টিম।
কক্সবাজার পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলাম জানিয়েছেন, হরতালের নামে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, সহিংসতা ঠেকাতে নেতা-কর্মীরা মাঠে রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনোর চেষ্টা করলে প্রতিহত করা হবে।
এছাড়া উখিয়া, টেকনাফ, চকরিয়া, মহেশখালীতে হরতাল বিরোধী মিছিল করেছে আওয়ামীলীগ।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মিজানুর রহমান বলেন, মহাসড়কসহ জেলা জুড়ে পয়েন্টে পয়েন্টে পুলিশ টিম সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। মাঠে রয়েছে র্যাবের কয়েকটি টিমও। কোথাও কেউ সহিংস ঘটনা ঘটাতে চাইলে প্রতিহত করা হবে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।