১১ নভেম্বর, ২০২৫ | ২৬ কার্তিক, ১৪৩২ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  কক্সবাজার ৪আসনঃ প্রার্থী চুড়ান্ত, তবুও মনোনয়ন বঞ্চিত আবদুল্লাহর সমর্থকদের বিক্ষোভ   ●  চিকিৎসা বিজ্ঞানে উখিয়ার সন্তান ডাঃ আব্দুচ ছালামের উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন   ●  ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীদের হুমকিতে নিরাপত্তাহীন পরিবার, চার সন্তান স্কুলে যাওয়া বন্ধ   ●  রামুতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা রিজনের নেতৃত্বে এক ব্যক্তির দোকান দখলের অভিযোগ, চাঁদাবাজি মামলায় জিটু কারাগারে   ●  গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে ঢুকে হুমকি অভিযোগ ৪ এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে   ●  কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে স্কিলস অ্যান্ড ইনোভেশন কম্পিটিশন অনুষ্ঠিত   ●  আলোচিত ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে লুটপাট, পরে রফাদফা!   ●  দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ   ●  কক্সবাজারে ভূমি নিবন্ধনে আকাশচুম্বী বর্ধিত উৎসেকর বাতিল, প্রসংশায় পঞ্চমুখ সালাহউদ্দিন আহমদ   ●  হলদিয়ায় ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে উধাও ৩ যুবক

সীমান্তে বন্ধ হচ্ছেনা ইয়াবা পাচার

টেকনাফ সীমান্তে ইয়াবা অনুপ্রবেশ কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না। ইয়াবা অনুপ্রবেশ বন্ধ না হওয়ায় সীমান্ত এ জনপদের জনসাধারণ প্রতিনিয়ত ক্ষতির মুখে পড়ছেন। মানবঘাতি মাদক পাচার ও সেবনে সর্বপেশার মানুষ দিন দিন আশংকাজনক হারে ঝুঁকে পড়েছে। স্থানীয় কতিপয় ছাত্র-শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি,ছদ্মবেশী সংবাদকর্মী,এনজিও কর্মী, মেডিসিন কোম্পানীর প্রতিনিধি, চালক-হেলপার-মালিক,আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যসহ বেকার জনগোষ্টীর বিরাট অংশ ইয়াবা পাচারে জড়িয়ে পড়ছে। এসব পেশার লোকজন বিভিন্ন সময় হাতে নাতে ইয়াবাসহ আটক হয়েছেন। প্রশাসনের কতিপয় অসাধু সদস্যের কারণে এই ইয়াবা পাচার বন্ধ হচ্ছে না বলে বিভিন্ন সুত্রে দাবী। জানাগেছে,গত ৬দিনে বিজিবি এবং কোষ্টগার্ডের অভিযানে ২৩লক্ষ ১হাজার ৬শ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় ইয়াবা পাচারকারী-বিজিবির মধ্যে গুলি বিনিময়ে ঘটনা ঘটে। এতে মিয়ানমারের ১নারী নিহত ও ৩বিজিবি সদস্যসহ মোট ৭জন আহত হয়েছেন। এছাড়া মার্চ মাসে পুলিশ-বিজিবি-কোষ্টগার্ড অভিযান চালিয়ে ১৮লক্ষ ১৪হাজার ৮শ ৯৪পিচ ইয়াবাবড়ি উদ্ধার করে। ওই সময় ১১৫ মাদক পাচারকারীকে হাতে নাতে আটক করেন। প্রশাসনের হাতে প্রতিনিয়ত বড় বড় চালানসহ পাচারকারী আটক হলেও ব্যবসায় জড়িত রাঘববোয়ালরা ঠিকই ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। ইয়াবা বিরোধী কার্যকরী অভিযান জোরদার না থাকায় ইয়াবা কারবারীরা বীরদর্পে চোরাচালান চালিয়ে যাচ্ছে। ইয়াবা চোরকারীরা কৌশলে স্কুল-মাদ্রাসা পড়–য়া শিক্ষার্থীদের প্রলোভনে ফেলে ইয়াবা বহনে ব্যবহার করছে। অনেক শিক্ষার্থী ইয়াবাসহ আটক হয়ে কারাগারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অভিভাবকরা জানান,ইয়াবা আটকে বহনকারীরা গ্রেপ্তার হলেও রহস্যজনক কারণে ইয়াবার প্রকৃত মালিকরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাওয়ায় তারা আরো বেপরোয়া হয়ে এসব চোরাচালান পরিচালনা করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রণীত নতুন ইয়াবা তালিকার আলোকে মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার অভিযান জোরদার করা টেকনাফ সীমান্তে গণদাবীতে পরিণত হয়েছে। উপজেলা কমিউনিটি পুলিশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম জানান,টেকনাফকে বাঁচাতে হলে মাদক নির্মুলে এখন থেকে সাড়াশি অভিযান জোরদার করতে হবে। না হলে পরে ইয়াবার করাল গ্রাসে আগামী প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে। হুমকির মুখে পড়া প্রজন্ম রক্ষায় প্রশাসনসহ সর্বপেশার মানুষকে এক কাতারে দাঁড়াতে হবে। প্রয়োজনে ইয়াবা সংশ্লিষ্টদের বয়কট করতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। হ্নীলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মাষ্টার আব্দুস সালাম ও রঙ্গিখালী মহিলা মাদরাসার সুপার ফখরুল ইসলাম ফারুকী জানান,আসলে এসব বলে ও লিখে কোন লাভ নেই। ইয়াবা চোরাকারবারীদের আজকে ধরলে কয়েকদিন পর জামিনে এসে আবারও বুক ফুলিয়ে হাঁটতে দেখা যায়। তাদের দম্ভোক্তিতে পথে ঘাটে চলাও দায়। ২বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ আবুজার আল জাহিদ জানান, অভিযান কখনো বন্ধ হয়নি,এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। ইয়াবা বিরোধী অভিযান অব্যাহত আছে এবং থাকবে। ইয়াবা পাচার বন্ধ করতে হলে আইন শৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি জনসাধারণকে টেকসই ভূমিকা রাখতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় টেকনাফকে যে কোন মুল্যে মাদক মুক্ত করতে হবে। টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মাঈন উদ্দিন খাাঁন জানান, ইয়াবা শুধু টেকনাফ না, পুরো বাংলাদেশের যুব সমাজ ও সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। ইয়াবা চোরাচালান, পাচারকাজে সংশ্লিষ্টদের কোন প্রকারে রেহাই দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে এবং ইয়াবামুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সম্প্রতি ইয়াবা চোরাচালান আশংকাজনকহারে বেড়ে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানাযায়,গত বছরের ৯ অক্টোবর মিয়ানমারে সহিংস ঘটনার পর থেকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নিয়ে সারা বিশে^ তোলপাড় হলে মিয়ানমারের জাতিগত প্রতি হিংসার মুখোশ উন্মোচন হয়ে যায়। এতে নিন্দা ঝড় বইতে শুরু করে। এই পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে না হতেই মিয়ানমারে জিইয়ে থাকা ইয়াবা গডফাদার এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ইয়াবা চোরাচালানীরা আভ্যন্তরীণ যোগাযোগের মাধ্যমে এসব বড় বড় ইয়াবার চালান নানান কৌশলে বাংলাদেশ সীমান্তে পাচার করার সময় কোষ্টগার্ড, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ হাতে নাতে পাচারকারী আটক করতে সক্ষম হয়। সচেতন মহল মনে করছেন,মিয়ানমারের আলোচিত জাতিগত সহিংস ঘটনা আড়াল করার জন্য এসব মাদকের চালান বাংলাদেশ অভ্যন্তরে ঢুকিয়ে দিয়ে দেশীয় ও আন্তজার্তিক দৃষ্টি ভঙ্গি পরিবর্তনের কৌশল বলে মনে করছেন। কারণ হিসেবে জানাযায়, বাংলাদেশ সরকার রাষ্ট্রীয় ভাবে ভয়াবহ ইয়াবা কারখানা তালিকা,অবস্থান ও কুফল সম্পর্কে মিয়ানমারকে অবহিত করে সহায়তার আহবান জানালেও কোন বাঁধা ছাড়া বড় বড় ইয়াবা চালান আসায় সেদেশের সীমান্ত প্রশাসনের লোকজন জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ প্রবল হয়ে উঠছে। নদী ও সাগর পথসহ সীমান্ত এলাকা দুর্গম হওয়ায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিমশিম খাচ্ছেন।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।