১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ২৩ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  কক্সবাজার শত্রুমুক্ত দিবস ১২ ডিসেম্বর   ●  বৌদ্ধ সমিতি কক্সবাজার জেলা কমিটি গঠন সভাপতি অনিল, সম্পাদক সুজন   ●  সভাপতি পদে এগিয়ে ছাতা প্রতিকের প্রার্থী জয়নাল আবেদিন কনট্রাক্টর   ●  প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে উখিয়ার নুরুল হকের প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যা   ●  ইয়াবার কথোপকথন ভাইরাল হওয়া ডালিম এখনো অধরা   ●  বৃত্তি পরীক্ষায় বিশেষ গ্রেড পেল খরুলিয়ার রোহান   ●  মরিচ্যা চেকপোস্টে ৪০ হাজার ইয়াবাসহ ভুয়া নৌবাহিনী সদস্য আটক   ●  উখিয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার আবুল কাশেমের ইন্তেকাল   ●  উখিয়ায় নিখোঁজের ৪দিনেও সন্ধান মেলেনি শিশু নুরশেদের   ●  উখিয়ায় প্রায় ৫ কোটি টাকার ইয়াবাসহ বাহক আটক, অধরা মাদক সম্রাট ছোটন ও মামুন

লোহাগাড়ায় কলাউজানে প্রাচীন নিদর্শন ৫’শ বছরের গাববৃক্ষটি কালের স্বাক্ষী

রায়হান সিকদার,(লোহাগাড়া): চট্টগ্রাম লোহাগাড়া উপজেলার একটি ইউনিয়নের নাম কলাউজান। গাবতল এই ইউনিয়নের একটি পরিচিত নাম। পরিমার্জিত ভাষায় একে গাবতলা বলা হয়। প্রায় ৫’শ বছর পূর্বের গাববৃক্ষটি ঐ এলাকার পরিচিতির স্বাক্ষর বহন করছে। রূপ-লাবণ্যময়ী যৌবন শক্তি আজো ধারণ করে আছে প্রাচীন নিদর্শন এই গাব বৃক্ষটি। সঠিক জন্মবৃত্তান্ত সম্পর্কে তেমন কেউ তথ্য দিতে পারেননি। তবে এলাকাবাসীর ধারণা অতীতে কেউ সখ করে ঐ স্থানে গাববৃক্ষের চারাটি রোপন করেছিলেন। কালের আবর্তন-বিবর্তনের সাথে বৃক্ষচারাটি বড় হতে থাকে। ফলে জনপদে বেড়ে যায় এর কদর। মূল-কান্ড ও শাখা-প্রশাখা বিস্তার লাভ করলে এ সুশীতল ছায়া পথিকের দৃষ্টি কেড়ে নেয়। অবসাদ ঘুচাতে কর্মক্লান্ত দেহে বিশ্রাম নিতে থাকে ঐ গাছের নিচে বসে ক্লান্ত পথিকেরা। শুধু তাই নয় সভ্যতার ক্রমবিকাশে জনপদে সৃষ্টি হয় কর্ম-কোলাহল। ১৯৫৯ বা ১৯৬০সাল থেকে জমে উঠে আড্ডা। ফলে ঐ এলাকার চৌধুরী বাড়ির জনৈক ইসলাম চৌধুরী (মাইজ্জা মিয়া)। ঘোড়দৌঁড় মেলার আয়োজন করেন। তাতে ঐ স্থানের নামকরণ হয় মাইজ্জা মিয়ার বাজার। পরবর্তীতে ফুলে-ফলে শোভিত হয় বৃক্ষটি। সন্ধ্যায় পাখির কলরবে মুখরিত হত স্থানটি। স্থানীয় লোকজনের সমাগম ঘটতে থাকে অহরহ। সামন্য ব্যবধানে বয়ে গেছে টংকাবতীখাল এবং অদুরে রয়েছে দুটো বৌদ্ধ কেয়াং ও বনাঞ্চল। খালের চরে জেগে উঠেছে সবজিক্ষেত। চারদিকে সৃষ্টি হয় সবুজের সমারোহ। তাতে জনগণের আনাগোনাও বাড়তে থাকে ঐ স্থানে। সময়ের প্রয়োজনে চাহিদা পূরণে গাববৃক্ষকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে ছোটখাট দোকানপাট। গাবতল নামের স্থানটি পরিচিতি লাভ করে সুদর প্রসারী। সভ্যতার ক্রমবিকাশে বাড়তে থাকে এর পরিচিতি। ক্রেতার সংখ্যাও বাড়তে থাকে দিন দিন। অদূরে রয়েছে একটি সিনিয়র মাদ্রাসা এবং যাতায়াতে রয়েছে সুপ্রশস্ত সড়ক। যানবাহন যাতায়ত শুরু করে প্রতিনিয়ত। বর্তমানে স্থানটি গাবতল বাজার নামে খ্যাত। সন্ধ্যায় অবসর যাপনে লোকজনের আগমন ঘটে অসংখ্য। কালের স্বাক্ষী সেই গাববৃক্ষটি বর্তমানে যৌবন হারা বেদনায় শোকাহত। বহু অতীত স্মৃতির স্বাক্ষর এই গাববৃক্ষ। পরিবেশ প্রেমিকেরা এর গোড়ায় বৃত্তাকারে ইটের প্রচীর নির্মাণ করে দিয়েছেন। মৌণা-বাক্যহীনা এ গাববৃক্ষটি হয়তো বর্তমান প্রজন্মদের দিকে থাকিয়ে নীরবে অশ্র“রোদন করে যাচ্ছে। নেই কোন জৌলুস ও বাদ-প্রতিবাদ। গাবতল বাজার সংলগ্ন এলাকায় বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এম.এ.ওয়াহেদের বাড়ী। প্রসঙ্গক্রমে গাববৃক্ষ সম্পর্কে তাঁর সহিত আলাপ হয়। তিনি জানান, কে বা কারা এবং কখন এ গাববৃক্ষের চারা রোপন করেছিলেন তার সঠিক তথ্য কেউ জানেন না। তবে এবৃক্ষের স্মৃতি বিজড়িত গাবতলা বাজার বর্তমানে বহুল পরিচিত এবং সুনাম সুদরপ্রসারী। ওই বাজরের প্রচীন দোকানী নুরুচ্ছফা সওদাগর জানান, তিনি বাল্যকাল থেকে এ গাববৃক্ষটি একই ভাবে দেখে আসছেন। এর বয়স আনুমানিক ৫’শ বছর হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, উক্ত গাববৃক্ষটি অতি প্রচীন কালের ইতিহাসের নীবর স্বাক্ষী। তাই এর যতœ ও সেবা করা বর্তমান প্রজন্মদের জন্য অপরিহার্য।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।