নিজস্ব প্রতিবেদক
কক্সবাজার পৌর ১নং ওয়ার্ডের মধ্যম কুতুবদিয়াপাড়ার ডা: নুরুল ইসলামের ছেলে বিশিষ্ঠ শুটকীগুড়া (ফিশফিড) ব্যবসায়ী রুহুল কাদের এর বিরুদ্ধে কথিত মিথ্যা মাদক মামলার চার্জসিটে ফিরিস্তি হিসাবে আরও ৫টি গায়েবি মামলার তথ্য প্রদানের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল ৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে কক্সবাজার শহরের একটি অভিজাত হোটেলে এ সংবাদ সম্মেলন করেন কথিত মিথ্যা মামলার ভুক্তভোগী রুহুল কাদের। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে আমি কক্সাবজার পৌর ১নং ওয়ার্ডের নাজিরারটেকে শুটকিগুঁড়া (ফিসফিড) এর ব্যবসা করে আসছি। উক্ত শুটকী মাছের গুঁড়া (ফিশফিড) দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আমি সরবরাহ করে থাকি। দীর্ঘ দিন ব্যবসা করার সুবাধে আমার পরিবারের পূর্বের অবস্থার একটু পরিবর্তন হয়। এ পরিবতর্ন আমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। অল্প সময়েই আমি এলাকার কিছু পুলিশের দালালের নজরে চলে আসি। ওই দালাল চক্র প্রতিনিয়ত আমার কাছ থেকে খরচের টাকা দাবী করে। আমি তাদের জানিয়ে দিই আমার অর্জিত ডাল-ভাত অতি কষ্টের। যারা অবৈধ ব্যবসা করে তারই দেয় খরচের টাকা। এ কথটি আমার জন্য কাল হয়ে উঠে। ওই দালাল চক্র আমার বিষয়ে পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বেশ কয়েকবার আমার ঘর তল্লাশি করে। কিন্তু তাদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। আমি অভিযানকারীদের প্রশ্ন করলে কেন আমার বাড়িতে তল্লাশি। তারা বলে ইনফরমেশন আছে। কিসের? ইয়াবার। আমি তখন আশ্চর্য হয়ে গেলাম। তখন তাদের বুঝিয়ে বললাম ভাই আমি এ অবৈধ কাজের সাথে কোন ভাবেই জড়িত নই। আপনারা এলাকায় তদন্ত করে দেখেন আমি কি করি। তারা আমার কাছ থেকে কিছু খরচ-পাতি দাবী করে, আমি অপরগতা প্রকাশ করি। তারা চলে যায়। এদিকে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারী আমাদের আয়োজনে মধ্যম কুতুবদিয়া পাড়ায় একটি তাফসীর মাহফিল আয়োজন করি। মাহফিল যথারীতি চলছিল। ওই দিন রাত ৮টার দিকে ওই মাহফিলে আমি দায়িত্বরত অবস্থায় কক্সবাজার সদর মডেল থানার একদল পুলিশ সিভিল পোশাকে শতশত মানুষের সামনে কোন কথা ছাড়া আমাকে জোর করে সিএনজিতে তুলে দ্রæত থানায় নিয়ে আসে। পরে আমার আত্মীয় স্বজন যোগাযোগ করলে পুলিশ বলে তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ রয়েছে সকালে যাচাই-বাছাই করে ছেড়ে দেয়া হবে। রাত শেষে শুরু হল ১৬ জানুয়ারী। ওই দিনও শেষ। ১৭ জানুয়ারী আমাকে ৬০০ পিচ ইয়াবা দিয়ে চালান দেয়া হয় আদালতে। ঘটনাস্থল দেখানো হয় বালিকা মাদ্রাসা রোডের কবিতা চত্ত¡র সংলগ্ন নুতুন রাস্তার মাথা থেকে আমাকে আটক করা হয়। আরও একটি আশ্চর্যের বিষয় আমি নাকি ওই ৬০০পিচ ইয়াবা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অপর এক ব্যাক্তি থেকে কিনেছি। কাল্পনিক আমার অপরিচিত ওই ব্যক্তিকেও ওই মামলায় আসামী করা হয়। ওই লোকটা কে তাকে আমি এখনও ছিনতে পারিনি। তখন চিন্তা করলাম পুলিশ চাইলে পারে। জোর করে নিয়ে আসল মাহফিল থেকে কাগজে হয়ে গেল ইয়াবাসহ কবিতা চত্ত¡র সংলগ্ন রাস্তা থেকে। আমাকে মামলা দিয়েও তারা কান্ত হতে পারেনি। ওই মামলার চার্জসীট দেওয়ার সময় আমার পূর্বের ইতিহাস উল্লেখ করে আরও ৫টি গায়েবী মামলা চার্জসীটে উল্লেখ করে দেন। উক্ত মামলাগুলি হচ্ছে- ১। জিআর ১০২৭/১৫ (সদর)। কক্সাবজার মডেল থানার মামলা নং ৫৫(১২)১৫ইং, ধারা- ৩৯৯/৪০২ দ:বি: (সদর কোর্টে বিচারাধীন), ২। জিআর ১০২৬/১৫ (সদর)। কক্সাবজার মডেল থানার মামলা নং ৫৪(১২)১৫ইং, ধারা- ১৮৭৮ সনের অস্ত্র আইনের ১৯এ (সদর কোর্টে বিচারাধীন), ৩। জিআর ৬৮৮/১৮ (সদর)। কক্সাবজার মডেল থানার মামলা নং ২(৯)১৮ইং, ধারা- ১৮৭৮ সনের অস্ত্র আইনের ১৯এ, ১৯এফ (বর্তমানে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল নং-৪ এ বিচারাধীন) যাহার মামলা নং এসপিটি ৬৬/২০১৯ইং, ৪। জিআর ৮৭/১৫ (সদর)। কক্সাবজার মডেল থানার মামলা নং ৮৭(১)১৫ইং, ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৭/৯। (বর্তমানে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল নং-১ এ বিচারাধীন), ৫। জিআর ৯৫৬/১৫ (সদর)। কক্সাবজার মডেল থানার মামলা নং ৫৫(১১)১৫ইং, ধারা- ৩৯৯/৪০২ দ:বি: (সদর কোর্টে বিচারাধীন)। পর্যালোচনা করে দেখা গেছে উপরোক্ত মামলাগুলি হচ্ছে নুরুল কাদের পিতা- নুরুল ইসলাম, সাং পশ্চিম কুতুবদিয়া পাড়া, ১নং ওয়ার্ড, পৌরসভা, কক্সবাজার নামক ব্যক্তি। কিন্তু কেন? মামলাগুলি আমার বিরুদ্ধে করা ওই মিথ্যা মামলার চার্জসীটে উল্লেখ করা হল। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি ইয়াবা মামলাটি ছিল সাজানো। আমার বিরুদ্ধে সাজানো মাদক মামলাটি থেকে অব্যহতির আবেদন করছি এবং মামলার চার্জসীটে উল্লেখিত মামলাগুলির বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আকুল আবেদন জানাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার ভাইয়েরা এবং এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।