৭ মে, ২০২৫ | ২৪ বৈশাখ, ১৪৩২ | ৮ জিলকদ, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  উখিয়ার প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী ফরিদ আহম্মদ চৌধুরীর ৬ষ্ট মৃত্যুবার্ষিকী আজ   ●  কক্সবাজার জেলা বিএনপির সদস্য সিরাজুল হক ডালিম’র সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ   ●  শ্রমিক দিবসে সামাজিক সংগঠন “মানুষ” এর ভিন্নধর্মী উদ্যোগ   ●  বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. আবদুল হাই এর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী ২৯ এপ্রিল   ●  লুৎফুর রহমান কাজলের মা সাবেক এমপি সালেহা খানমের ইন্তেকাল করেছেন   ●  টেকনাফে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতদলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১   ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা

কে সঠিক ? কক্স টুডে নাকি জেলা প্রশাসন

ফাইল ছবি

বিশেষ প্রতিবেদকঃ মূল্য তালিকা না টাঙ্গানো, একই ফ্রিজে তাজা ও রান্না করা খাবার রাখা, রান্নাস্থানের পাশেই আর্বজনার স্তুপ ও নিষিদ্ধ পিলিথিনে খাবার মুড়িয়ে রাখার দায়ে ৩০ জানুযারী কক্সবাজার শহরের তারকা মানের হোটেল দ্য কক্স টুডেকে একলক্ষ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত। আর এই নিয়ে ৩১ জানুয়ারী (বুধবার) বিকাল ৫ টায় কক্স টুডে কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে দাবী করেছে বকেয়া বিল চাওয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের দিয়ে জরিমানা আদায় করেছে জেলা প্রশাসন ।
ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরবর্তী কক্স টুডে কর্তৃপক্ষের এই সংবাদ সম্মেলনকে ঘিরে শহরে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। সচেতন মহলের মনে একটি প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছেন। কে সত্য বলছেন। হোটেল দ্য কক্স টুডে নাকি জেলা প্রশাসন ।

সংবাদ সম্মেলনে হোটেল কক্সটুডেরর নিরাপত্তা কর্মকর্তা তপন কুমার চক্রবর্তী লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত থার্টি ফাস্ট নাইটের (৩১ ডিসেম্বর) দিন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে জেলা প্রশাসন লাবণী পয়েন্টের গোলঘরে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেই অনুষ্ঠানে হোটেল কক্স টুডে থেকে খাওয়ার অর্ডার করা হয়। যথারীতি ওই অনুষ্ঠানে অর্ডার অনুযায়ী ৩৫ হাজার টাকার খাওয়ার সরবরাহ করা হয়।

তিনি আরো বলেন, হোটেল কক্স-টুডে’র রেষ্টুরেন্ট ম্যানেজার ইকবাল হোসেন ওই খাওয়ারের বিল নিয়ে কয়েকবার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জয়ের কাছে যান। ওই সময় পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জয় খাওয়ার বিল দেখে উত্তেজিত হয়ে উঠেন। ওই সময় সাইফুল ইসলাম জয় হোটেল দি কক্স টুডে’র রেষ্টুরেন্ট ম্যানেজার ইকবাল হোসেনকে বিল প্রদানে অস্বীকৃতি জানান। একই সময় তিনি কক্স টুডের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ আছে মর্মে হুমকি দেন। এবং হোটেল দি কক্স টুডে’কে দেখে নেওয়ার হুমকি প্রদান করে।

তপন চক্রবর্তী আরো জানিয়েছেন, আমরা আমাদের খাওয়ারের বকেয়া টাকা চাইতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের পর্যটন সেলে ২৮ জানুয়ারী আবারো যোগাযোগ করি। কিন্তু এখন অবধি বিল পরিশোধ করা হয়নি।

হোটেল কক্স টুডের পরিচালক (অপারেশন) শাখাওয়াত হোসেন বলেন, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জয় পূর্বের হুমকির প্রতিফলন স্বরূপ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যেমূলক ভাবে অভিযানটি পরিচালনা করেছেন। রেষ্টুরেন্টে কোন ধরণের অপরাধ না পাওয়া স্বত্বেও তিনি বকেয়া বিল চাওয়ার ব্যক্তিগত আক্রোশের জায়গা থেকে ওই সময় আমাদের হোটেলের প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারির সাথে আশ্রাব্য ভাষায় দুর্ব্যবহার করতে থাকেন। পরে রেষ্টুরেন্টে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাওয়ার রাখার মিথ্যা অপরাধ দেখিয়ে এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে ।

এই ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট সাইফুল ইসলাম জয় জানিয়েছেন, বকেয়া বিল পাবে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে। এটি নিয়ম মাফিক পরিশোধ করা হবে। তারা তাদেরে অপরাধ ডাকতেই সাংবাদিকদের কাছে বিলের তথ্যটি উপস্থাপন করেছেন।

তিনি আরো বলেন, প্রতিষ্ঠানকে যেকারণে জরিমানা করা হয়েছে তার প্রতিটির স্থিরচিত্র ভ্রাম্যমান আদালতের কাছে রয়েছে। আমার সাথে কক্স টুডের ব্যক্তিগত কোন দ্বন্দ। জনস্বার্থে
অভিযানটি পরিচালনা করা হয়েছে।

তবে হোটেল কক্সটুডের পরিচালক ( অপারেশন) শাখাওয়াৎ হোসেন মুঠোফোনে বলেন, তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা। কোন তারকা মানের হোটেলে মূল্য তালিকা টাঙ্গানো থাকেনা। এছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের বিষয়টিও সঠিক নয়।
সেসময় তিনি আরো বলেণ, বকেয়া বিল চাওয়ার দায়ে কক্সটুডের ম্যানেজারের সাথে নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট সাইফুল ইসলাম জয়ের খারাপ আচরণের বিষয়টি তারা জেলা প্রশাসনের কাউকেও অবহিত করেননি। কারণ তিনি খারাপ ব্যবহারের বিষয়টি মঙ্গলবার রাতে জানতে পেরেছেন।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (এডিএম) খালেদ মাহমুদ বলেন, বিল পাবে জেলা প্রশাসনের কাছে। খাবার অর্ডার করেছিল এডিসি রেভিনিউ কাজী আবদুর রহমান। তিনি বর্তমানে জাপানে রয়েছে। কাজেই এই বিলের সাথে ভ্রাম্যমান আদালতের কোন সম্পর্ক নেই।
তিনি আরো বলেন, কক্স টুডে জেলা প্রশাসনের কাছে তাদের বিল জমা দিয়েছে ১২ জানুয়ারী। স্বাভাবিকভাবে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে একটি বিল পাস হতে মাসখানেক সময় লাগে। সেহিসেবে এখনো বিলটি পাশ না হওয়াটাই স্বাভাবিক।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন বলেন, নিজেদের অপরাধকে আড়াল করতেই কক্স টুডে কর্তৃপক্ষ বকেয়া বিলের বিষয়টি সামনে এনেছেন। জেলা প্রশাসনের কি ৩৫ হাজার টাকা দেওয়ার ক্ষমতা নেই যে তাদের টাকা না দেওয়ার জন্য অভিযান চালাবে। আসলে হোটেল কর্তৃপক্ষের উচিৎ ছিল নিজেদের ভুল শুধরে নিয়ে পর্যটন সেবায় মনযোগ দেওয়া। কিন্তু তারা সেপথে না হেটে সাংবাদিকদের ভুল তথ্য সংগ্রহ করছেন। এটি অত্যন্ত দু:খজনক।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।