কাল বৈশাখীর লন্ডভন্ড হয়ে গেছে পুরো টেকনাফ। দফা দফা বৃষ্টিতে ভেসে গেছে কোটি কোটি টাকার লবণ। ভেঙে পড়েছে অসংখ্য গাছপালা, ফসলের ও ইট ভাটা, খড়ের ঘরের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশির ১৩ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পানিতে পড়ে ও গাছের ডাল পড়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে থেমে থেমে হালকা ও ভারী বৃষ্টিতে উপজেলার সদর, সাবরাং, বাহারছড়া, হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার ভেঙে পড়েছে অসংখ্য বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা ও রোরো ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের কারণে রাত ৩টা থেকে বিকেল ৪টার পর্যন্ত টানা ১৩ঘন্টা উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। হ্নীলা সিকদার পাড়া এলাকার লবণ চাষী:দেলোয়ার হোছাইন জানান, এবারের লবণ মৌসুমে এক মাসের মধ্যে কয়েক দফা ভারী বৃষ্টিতে লবণ উৎপাদন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সদ্য সমাপ্ত র্মাচের শেষের দিকে বৃষ্টির কারণে মাঠ পর্যায়ে লবণ উৎপাদন ১০ দিন বন্ধ ছিল। এরপর এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে পুরোদমে লবণ উৎপাদন শুরু হয়। মাঠে প্রতি মণ লবণের দাম ৮০-১০০ টাকা বিক্রি হওয়ায় উৎপাদিত লবণ মাঠে খোলা অবস্থায় মজুত রাখা হয়েছিল। কিন্তু গতকাল বুধবার ভোররাতে বৃষ্টিতে চাষিদের হাজার হাজার মণ লবণ মাঠে গলে গেছে। এছাড়া চিংড়ী ঘের ও বসত বাড়ির ক্ষতি, ইট ভাটার ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি সাধন হলেও কোথাও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে পুরো উপজেলায় ধান, আমসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এলাকা ভিত্তিক সরেজমিনে পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতি নিধারণ করা হবে।
পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি টেকনাফ জোনের ব্যবস্থাপক বলাই মিত্র বলেন, রাতে কালবৈশাখী ঝড়ে টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কের কয়েকটি স্থানে বড় বড় গাছপালা উপড়ে পড়ে কক্সবাজার-৩৩ কেভি বৈদ্যুতিক লাইনে বিকাল ৪ট পর্ডন্ত সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল বর্তমানে লাইন চালু রয়েছে। উপজেলা লবণচাষি কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শফিক মিয়া জানান, চলতি মৌসুমে দুই দফা ভারী বৃষ্টিতে লবণ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ১০হাজার একর জমিতে লবণের চাষ করা হলেও বৃষ্টিতে দুই দফায় বন্ধ থাকায় লবণ উৎপাদন কম হতে পারে। গতকালের ঝড়ের মাঠে থাকা প্রায় তিন লাখ মণ লবণ গলে পানি হয়ে গেছে। এদিকে উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়ন বাহারছড়ার উত্তর শিলখালীতে বৈশাখের ঝড়ো হাওয়ায় আম কুড়াতে গিয়ে গাছের ডাল পড়ে সৈয়দ আলমের পুত্র ফারুক আহমদ (১৩) ও বৃষ্টির পানিতে ডুবে হ্নীলা ইউনিয়নের ফুলের ডেইল এলাকার মো: আলমের শিশু কন্যা সুমাইয়ার (৪) মর্মন্তিক মৃত্যু হয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।