১ মে, ২০২৫ | ১৮ বৈশাখ, ১৪৩২ | ২ জিলকদ, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. আবদুল হাই এর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী ২৯ এপ্রিল   ●  লুৎফুর রহমান কাজলের মা সাবেক এমপি সালেহা খানমের ইন্তেকাল করেছেন   ●  টেকনাফে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতদলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১   ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার

কলাতলীতে অবৈধ গাড়ি পার্কিং, যুবলীগ নেতা ও ট্রাফিক পুলিশের নামে চাঁদাবাজি

ইমাম খাইর, কক্সবাজার:

কক্সবাজার শহরের কলাতলীর ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ গাড়ি পার্কিং।
মূল সড়কের দুই পাশে যত্রতত্র গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকায় ঘটছে দুর্ঘটনা।

চলছে যুব লীগ নেতা ও ট্রাফিক পুলিশের নামে চাঁদাবাজি। পৌরসভা ও মালিক সমিতির জন্যও চাঁদা তোলা হয়।
মাসখানেক আগে কলাতলীর মোড়ে ৩ জনের প্রাণহানি ঘটে। এর আগে একই স্থানে দুর্ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ী, পথচারী, আইনজীবীসহ ৬ জন মারা যায়। ফুটপাতে গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে এসব দুঘটনা ঘটছে, দাবি স্থানীয়দের।
কলাতলী থেকে মেরিন ড্রাইভ সড়কে ঢোকার পথে দেখা যাবে অসংখ্য ছোট কার, মিনিবাস ও সিএনজি। যেগুলো মূল সড়ক ও ফুটপাথ দখল করে আছে। যে কারণে খালি পায়ে হাঁটাচলাও দায় পড়ে।
এ বিষয়ে মমতাজ মিয়া (বাবুল) নামক একজন গাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, প্রতি গাড়িকে কক্সবাজারে ২৩০ টাকা এবং টেকনাফে ২৩০ টাকাসহ মোট ৪৬০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। সেখানে ৪০০ টাকার কোন রশিদ দেয় না।
তিনি বলেন, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে একটি গাড়ি আসা-যাওয়া ভাড়া আদায় হয় ২৪০০ টাকা। সেখান থেকে গ্যাস খরচ ১০০০, চাঁদার টাকা ৪৬০ টাকা ও চালকের বেতন ৫০০ টাকা চলে যায়। অবশিষ্ট থাকে ৪০০ টাকার মতো। এ টাকায় কি সংসার চলে?
অন্যান্য চালকরা জানিয়েছে, এই সড়কে ৩৬টি গাড়ি যাতায়াত করে। মালিক সমিতির নামে প্রতিমাসে ট্রাফিক পুলিশের নামে টেকনাফে ১০০০ এবং কক্সবাজারে ৭০০ টাকা চাঁদা নেওয়া হয়। যারা এই টাকা দেয় না তাদের গাড়ি চলাচলের সুযোগ নেই।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেল, এসব নিয়ন্ত্রণে রয়েছে একটি সিন্ডিকেট, যারা ট্রাফিক পুলিশ, মালিক সমিতি, কক্সবাজার পৌরসভা ও সরকার দলীয় নেতাদের নামে প্রতিটি গাড়ি থেকে চাঁদা উত্তোলন করে। সরেজমিন গিয়ে কথা বলে তার কিছুটা সত্যতা মিলেছে।
দেখা গেল, ৪ জন যাত্রী ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ছোট কিছু কার গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে কলাতলী রাস্তার মোড়ে। এসব গাড়ি যায় সরাসরি টেকনাফ। প্রতি যাত্রী থেকে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৪০০ টাকা।

জানা গেছে, মালিক সমিতির নামে প্রতি গাড়ি প্রতি নেওয়া হয় ৪০০ টাকা চাঁদা। তার বাইরে কক্সবাজার পৌরসভার টোলের নামে ৩০ টাকার একটি রশিদও ধরিয়ে দেওয়া হয় চালকদের। আসা-যাওয়া মিলে গাড়িপ্রতি ৪৬০ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের প্রশ্ন, এসব টাকা কার পকেটে যায়? কলাকলীতে পৌরসভার গাড়ি পার্কিং এর নামে কোন ইজারা নেই। তবু চাঁদা নেওয়া হচ্ছে কেন?
এসব প্রশ্ন জানতে চাঁদা আদায় রশিদের বই হাতে দাঁড়িয়ে থাকা একজনের সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের। পরিচয় জানতে চাইলে সঠিক তথ্য দেননি। অনেক ভনিতা করে কথা বলেন। এড়িয়ে চলতে চান প্রতিবেদকের প্রশ্ন। পরে জানা গেল, তার নাম বেলাল।

মুঠোফোনে কথা হয় বেলালের সঙ্গে। লাইনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মালিক সমিতির সভাপতি বাহার মোল্লা এবং সাধারণ সম্পাদক জহির। লাইনের মালিক যুবলীগ নেতা বাহাদুর। টেকনাফে দেখাশোনা করেন নুরুল আলম চেয়ারম্যান।
লাইন পরিচালনা, চাঁদা আদায় সংক্রান্তে জানতে বাহার মোল্লা মুঠোফোনে (০১৬১৫…৬৪২) কল দিলে রিসিভ করেন নি।

সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক পুলিশ) রকিব উল রাজার নিকট জানতে চাইলে বলেন, কলাতলীতে এরকম কোন টার্মিনাল অনুমোদন নেই। আমরা বেশ কয়েকবার উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছি। অভিযানে গেলে তারা পালিয়ে যায়। আবার বসে। যেন ইঁদুর বিড়ালে খেলা। শীগ্রই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।

ট্রাফিক পুলিশের নামে টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে রকিব উল রাজা বলেন, আমাদের নামে টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। খোঁজখবর নিচ্ছি। এরকম কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।