
টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে ভেসে গিয়ে এবং বাড়ির দেয়াল ও পাহাড় ধসে মারা গেছেন ছয়জন। অপরদিকে সেন্টমার্টিনে নারকেলগাছ চাপায় মারা গেছেন এক মা ও শিশু।
শহরের দক্ষিণ ঘোনারপাড়ায় পাহাড় ধসে মোহাম্মদ আবছার (৩) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পাহাড় ধসের পৃথক ঘটনায় সাতজন আহত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে এসব ঘটনা ঘটে। অপরদিকে, চকরিয়া ও রামুতে ঢলের পানিতে ভেসে গিয়ে তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।
পাহাড়ি ঢলের পানিতে জেলার রামু, চকরিয়া, সদর, পেকুয়াসহ আট উপজেলার ৪০ ইউনিয়নের দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়েছেন অন্তত তিন লাখ মানুষ।
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন জানান, উপজেলার কচ্ছপিয়া, উখিয়ার ঘোনা, কাউয়াখোপ ও জোয়ারিয়া নালা এলাকায় ঢলের পানিতে ভেসে গিয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
তারা হলেন— খতিজা বেগম (৩৫), হালিমা বেগম (২৭), মোহাম্মদ রিদুয়ান (৬) ও জুনু মিয়া (৬০)। বৃহস্পতিবার বিকেলে দু’জন এবং শুক্রবার সকালে দু’জন পানিতে ভেসে যান। দুপুরে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ছাড়া শুক্রবার সকালে রামু উপজেলার কাউয়াখোপ এলাকায় মাটির দেয়াল ধসে আমির হোসেন (৪০) নামে একজন মারা যান। নির্বাহী কর্মকর্তা আরও জানান, রামু উপজেলার আট ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বাঁকখালী নদীর ঢলের তোড়ে রামু সদরের হাইটুপি বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেছে।
অপরদিকে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে প্রবল ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার সকালে বয়ে যাওয়া ঝড়ো হাওয়ায় অসংখ্য গাছপালা ও ঘরবাড়ি উপড়ে গেছে। ঝড়ে নারকেল গাছচাপা পড়ে মারা গেছেন এক মা ও শিশু।
তারা হলেন— সেন্টমার্টিনের কোনারপাড়ার নূর মোহাম্মদের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (২৫) ও তাদের শিশুপুত্র মোহাম্মদ জিশান (৪)।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান, শুক্রবার সকালে সেন্টমার্টিনে প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া আঘাত হানে। এতে বহু গাছপালা, বাড়িঘর, মসজিদ ও মাদ্রাসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঝড়ো হাওয়ায় নারকেলগাছের নিচে চাপা পড়ে মা ও শিশু মারা যান। আহত হন বেশ কয়েকজন।
দ্বীপের হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক না থাকায় আহতরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না।
তিনি আরও জানান, ঝড়ো হাওয়ায় দ্বীপের সর্বত্র কম-বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় এখনও শত শত বাড়ি পানির নিচে রয়েছে। সপ্তাহ ধরে ভারি বর্ষণ ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে খাদ্য সংকটে পড়েছেন দ্বীপবাসী।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল মজিদ খান বলেন, শুক্রবার দুপুরে শহরের দক্ষিণ ঘোনারপাড়া এলাকার পাহাড় ধসে আবছার নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ সময় দুই শিশুসহ আহত হন ছয়জন। দুপুর আড়াইটার দিকে বসতঘরের উঠানে খেলা করার সময় আকস্মিক পাহাড়ের একাংশ ধসে পড়ে।
আহতদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম জানা যায়নি।
এদিকে, কক্সবাজার শহরের ফাতেরঘোনা ও সাহিত্যিকা পল্লী এলাকায় পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় আরো চারজন আহত হয়েছেন। তাদেরও হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আহতরা হলেন— জয়নাব বেগম, মো. সাগর, আব্দুল মান্নান, শিশু উম্মে উর্মিলা, ইছমত আরা ও সাহারা খাতুন।
অপরদিকে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আলম জানান, উপজেলার কাকারা ইউনিয়নে শুক্রবার দুপুরে কাউসাঈন করিম (১৪) নামে এক কিশোর ঢলের পানিতে ভেসে গেছে। সে এখনো নিখোঁজ রয়েছে।
রামু উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, রামু উপজেলার উখিয়ার ঘোনায় শুক্রবার দুপুরে ঢলের পানিতে দু’জন ভেসে গেছেন। এখন পর্যন্ত তাদের উদ্ধার করা যায়নি।
২০২১ ফেব্রুয়ারি ০৮ ০৮:৩১:১১
২০২০ জুলাই ২৮ ০৬:০২:৪৫
২০২০ জুন ২৭ ১১:১৮:৫৪
২০২০ জুন ২২ ১২:৫৩:২৯
২০২০ মে ২৯ ০৫:৫৩:৩৫
২০২০ মে ০৯ ০১:০৫:২৩
২০২০ মে ০৭ ০৫:০৩:৩০
২০২০ মে ০৫ ১১:৫৩:৩৯
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।