১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ২ পৌষ, ১৪৩২ | ২৫ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  খুনিয়াপালংয়ে বিএনপি সভাপতির সহযোগিতায় শতবর্ষী কবরস্থান দখলের পাঁয়তারা   ●  কক্সবাজার শত্রুমুক্ত দিবস ১২ ডিসেম্বর   ●  বৌদ্ধ সমিতি কক্সবাজার জেলা কমিটি গঠন সভাপতি অনিল, সম্পাদক সুজন   ●  সভাপতি পদে এগিয়ে ছাতা প্রতিকের প্রার্থী জয়নাল আবেদিন কনট্রাক্টর   ●  প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে উখিয়ার নুরুল হকের প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যা   ●  ইয়াবার কথোপকথন ভাইরাল হওয়া ডালিম এখনো অধরা   ●  বৃত্তি পরীক্ষায় বিশেষ গ্রেড পেল খরুলিয়ার রোহান   ●  মরিচ্যা চেকপোস্টে ৪০ হাজার ইয়াবাসহ ভুয়া নৌবাহিনী সদস্য আটক   ●  উখিয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার আবুল কাশেমের ইন্তেকাল   ●  উখিয়ায় নিখোঁজের ৪দিনেও সন্ধান মেলেনি শিশু নুরশেদের

‘ঐতিহ্য বহন আর স্মৃতি জাগানিয়া শুধুই কালের স্বাক্ষী’ বিলুপ্তির পথে কাঠের লাঙ্গল

Langolকৃষিপ্রধান আমাদের দেশে এক সময় ক্ষেতে-খামারে কৃখকের লাঙ্গল ও মই দিয়ে চাষাবাদের দৃশ্য সবার নজর কাড়ত। হাজার বছরের ঐহিত্যবাহী চাষাবাদে বহুল ব্যবহৃত কাঠের হাতল ও লোহার ফাল বিশিষ্ট কাঠেল লাঙ্গল আজ বিলুপ্তির পথে। চাষাবাদের অন্যতম উপকরণ হিসাবে কাঠের লাঙ্গল ছিল অপরিহার্য।
এক সময় কাঠের লাঙ্গল ছাড়া গ্রাম বাংলার চাষাবাদের কথা চিন্তাই করা যেত না। কিন্তু আধুনিক যুগে পদার্পন করে চাষাবাদের যান্ত্রিক সব উপকরণ। আবিস্কারের প্রভাবে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে কৃষি কাজে ব্যবহৃত ওই সব লাঙ্গল, জোয়াল, মই ও হালের বলদ।
এসবের ব্যবহার স্বল্প আয়ের কিছু সংখ্যক কৃষক পরিবারে কোন রকমে টিকে থাকলেও বিজ্ঞানের ক্রমশ উৎকর্ষের যুগে কৃষি কাজে ঠাই করে নিয়েছে পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টর। এর ফলে মানুষ আগের তুলনায় সময়, শ্রম এবং অর্থ উভয়ই সাশ্রয় ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। তবে যন্ত্রটির মূল্য সবার সাধ্যের মধ্যে না থাকায় এককভাবে অনেকেরই কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এসব যন্ত্র দিনে দিনে কৃষকের কাছে বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়েছে। যন্ত্রটির ব্যাপক চাহিদা থাকায় বর্তমানে চাষাবাদের সব ধরনের কাজেই এটি ব্যবহার করছে কৃষক।
অপরদিকে ব্যাপক চাহিদা থাকায় কেউ কেউ আবার বানিজ্যিক ভিত্তিতে পাওয়ার টিলার কিংবা ট্রাক্টর ভাড়াও দিচ্ছেন। এখনও গ্রাম-গঞ্জের অনেকেই কৃষি মৌসুমে গ্রাম্য হাটবাজারে বিক্রির উদ্যোশে চাষাবাদের পুরনো দিনের কালের স্বাক্ষী লাঙ্গল, মই, জোয়াল ইত্যাদি সরঞ্জামের পসরা সাজিয়ে বসে। যারা এ গুলোকে পেশা হিসাবে নিয়ে তৈরী করেছেন, তাদের অনেকেই এজন্য বেশির ভাগ সময় বেকার বসে থাকতে হচ্ছে। তখনকার সময় এটিও ছিল কারও কারও পেশা। যার মাধ্যমে তারা জীবিকা নির্বাহ করত।
বাইশারী বাজারে সাপ্তাহিক হাটবাজারে কাঠের লাঙ্গল বিক্রি করতে আসা গর্জনীয়া ইউনিয়নের বড়বিল গ্রামের জাফর আলম বলেন, আমি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এই লাঙ্গল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। আগে একটি কাঠের লাঙ্গল বিক্রি হতো মাত্র ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। বর্তমানে সেই লাঙ্গল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে এই পেশা মৌসুম ভিত্তিক হওয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে বেকার থাকতে হয় এবং বর্তমানে এই পেশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভব নয় বলেও জানালেন তিনি।
বেশ কিছুকাল আগেও গ্রামাঞ্জলের কৃষকরা জমিতে চাষাবাদ করতে হালের বলদ, লাঙ্গল ও মইয়ের ব্যবহার ছাড়া জমিতে চাষাবাদের কথা কল্পনাও করতে পারত না। তখন লাঙ্গল-মই সহ কৃষি সরঞ্জাম তৈরীতে ব্যস্ত থাকত গ্রামাঞ্জলের অজ¯্র শ্রমিক। সেই কাঠের লাঙ্গল যেন আজ ঐতিহ্য বহন আর স্মৃতি জাগানিয়া শুধুই কালের স্বাক্ষী।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।