২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ১৪ আশ্বিন, ১৪৩২ | ৬ রবিউস সানি, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে স্কিলস অ্যান্ড ইনোভেশন কম্পিটিশন অনুষ্ঠিত   ●  আলোচিত ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে লুটপাট, পরে রফাদফা!   ●  দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ   ●  কক্সবাজারে ভূমি নিবন্ধনে আকাশচুম্বী বর্ধিত উৎসেকর বাতিল, প্রসংশায় পঞ্চমুখ সালাহউদ্দিন আহমদ   ●  হলদিয়ায় ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে উধাও ৩ যুবক   ●  দুর্ধর্ষ প্রতারক দিদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি   ●  ইয়াবাসহ পুলিশে সোপর্দ, চোর সন্দেহে চালান, এলাকায় ক্ষোভ   ●  শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান   ●  “প্লাস্টিক উৎপাদন কমানো না গেলে এর ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব নয়”   ●  নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কক্সবাজারে তাঁতীদলের খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন

হঠাৎ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ফার্মেসি বন্ধ, রোগীদের দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : হঠাৎ তালা ঝুলছে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ফার্মেসিতে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে রোগীরা। কোন নোটিশ বা নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া ফার্মেসি বন্ধ করে দেওয়ায় রোগিদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। জানা গেছে, রোববার দুপুর ২টার দিকে হঠাৎ কিছু লোক গিয়ে হাসপাতালের ফার্মেসি বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে রোগিরা ওষুধ কিনতে গিয়ে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। ফজল করিম নামে রোগির স্বজন বলেন, কক্সবাজারের তেমন কিছু তিনি চিনেন না। ফার্মেসি বন্ধ করে দেওয়ায় তাকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। একই সঙ্গে বাইরের ফার্মেসি তাঁর কাছ থেকে দাম বেশি নিয়েছেও বলে দাবী করেন তিনি। সূত্র মতো, কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ফার্মেসিতে প্রতিটি ওষুধ ৯ শতাংশ কমে বিক্রি করে ফার্মেসি কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে অন্যান্য ফার্মেসির চেয়েও এই ফার্মেসিতে স্বাভাবিকভাবে দাম কম। এটি হাসপাতালের একমাত্র ফার্মেসি। এই ফার্মেসি নিয়ে এ ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটায় ফুঁসে উঠছে রোগির স্বজনেরা। এতে সচেতন মহলও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ইসলামপুর ইউনিয়নের নাপিতখালী এলাকা থেকে সন্তানকে নিয়ে গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে এসেছেন ছালেহা বেগম। তিনি বলেন, এই ফার্মেসিতে ওষুধ পাওয়া যায় একটু কম দামে। কিন্তু হঠাৎ অতর্কিতভাবে বন্ধ করে দেওয়ায় রোববার বিকালে তিনি ওষুধ কিনতে পারেননি। পরে পুরাতন শেভরনের নিচতলায় অবস্থিত একটি ফার্মেসি থেকে তিনি বেশি টাকা দিয়ে ওষুধ কিনেছেন। হাসপাতালে দেখাশুনা করার জন্য অনেক রোগির স্বজন হিসাবে থাকে নারীরা। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা রোগির নারীর স্বজনদের সবকিছু চেনা জানা না থাকার কারণে হাসপাতাল এরিয়ার বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে গিয়ে হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বেশ কয়েক জন রোগির স্বজনেরা। রোববার রাত আটটার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সদর হাসপাতালের নিচতলার একমাত্র ফার্মেসিটি তালাবদ্ধ। দলে দলে রোগির স্বজনেরা এসে ফার্মেসি বন্ধ দেখে ফেরত যাচ্ছে। অনেক রোগির স্বজনেরা হাসপাতালে আর কোন ফার্মেসি আছে কিনা জানতে চাচ্ছেন হাসপাতালের ভেতরের গেইটের দারোয়ানদের কাছে। সেখানে কথা হয় নুর বাহার (৪৫) নামে এক নারীর সাথে। তিনি বলেন, সকালেও তিনি এই ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনেছেন। কিন্তু এখন ফার্মেসি বন্ধ। তাই তিনি ওষুধ কিনতে কোথায় যাবেন এ প্রতিবেদকের কাছে জানতে চান। নিচতলার ওয়ার্ডের বাইরে রোগি ভর্তি রয়েছে আব্দুস শুক্কুরের। তিনি রোহিঙ্গা নাগরিক। তাঁর বাবাকে নিয়ে গত শুক্রবার হাসপাতালে আসেন তিনি। আব্দুস শুক্কুর বলেন, দুপুরে হঠাৎ কয়েকজন লোক এসে ফার্মেসিটি বন্ধ করে দিয়ে চলে যায়। তবে এসময় কোন ধরণের মারামারি বা কথা কাটাকাটি হতে দেখেননি। হাসপাতালের ফার্মেসিটির নাম ‘আলম মেডিকেল হল’। এটি পরিচালনা করেন মীর মোহাম্মদ আমিন নামে এক ব্যক্তি। ফার্মেসি বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুপুরের দিকে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির লোকজন এসে ফার্মেসিতে তালা ঝুলিয়ে দেয়। তবে কেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নে মীর মোহাম্মদ আমিন বলেন, হাসপাতালের সাথে তাঁর চুক্তিপত্র অনুযায়ী তার সব কাগজপত্র বৈধ। এবং মেয়াদও শেষ হয়ে যায়নি। তিনি ধারণা করছেন কতিপয় ব্যক্তিরা সাংসদকে তাদের সম্পর্কে ভুল বুঝিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সাংসদ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হচ্ছে বলে জানান। সাময়িকভাবে দুর্ভোগ সৃষ্টি হওয়ায় তিনি রোগি ও রোগির স্বজনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। জানা গেছে, ২০০২ সালে হাসপাতালের ফার্মেসিটি মেসার্স আলম মেডিকেল হলকে টেন্ডার অনুযায়ী ভাড়া দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চুক্তি অনুযায়ী এখন পর্যন্ত তারা বৈধ। এছাড়াও সারাদেশের জেলা সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের ফার্মেসি গুলোর আপাতত চুক্তি মালিকানা পরিবর্তন বা টেন্ডার না দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়ে ২০১৫ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে গেজেট প্রকাশ হয়। গতকাল রোববার রাতে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. পু চ নু বিষয়টি তাঁর কাছে জানা নেই বলে দাবী করেন। দুপুর থেকে ফার্মেসি বন্ধ থাকায় ওষুধ না পেয়ে রোগির স্বজনদের মধ্যে হাহাকার সৃষ্টি হলেও বিষয়টিকে তেমন গুরুত্বই দেননি হাসপাতালের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এই কর্মকর্তা। খোঁজ খবর নিয়ে পরে জানানোর কথা বললেও পরবর্তীতে তিনি আর ফোন ধরেননি।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।