৮ মে, ২০২৪ | ২৫ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৮ শাওয়াল, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  কক্সবাজারে শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক সার্জেন্ট রোবায়েত    ●  উখিয়ায় রোহিঙ্গা যুবককে গলা কেটে হত্যা   ●  বাহারছরা পুলিশের অভিযানে হত্যা চেষ্টা মামলার তিন আসামি গ্রেফতার   ●  নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে কচ্ছপিয়ার নোমান চেয়ারম্যানের হুমকি   ●  কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সিরাজুল হক ডালিম’র ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ   ●  নিরাপদ নুরুল আবছারকেই পছন্দ ভোটারদের   ●  আদালতে তিন মামলারই জবানবন্দি দিলেন অস্ত্র সহ গ্রেফতার সিরাজ   ●  টেকনাফে অপহরণ চক্রের সদস্য অস্ত্রসহ গ্রেফতার   ●  উপজেলা চেয়ারম্যান শফিউল্লাহর প্রার্থীতা বাতিলে হাইকোর্টে রিট   ●  প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর ৩০ বছরের পথচলা ও সাফল্য উদযাপন

‘সব অপকর্মের কারিগর চকরিয়া থানার দারোগা শাহাদাত

unnamed-33

ফেনীর লালপুর এলাকা সহকারি উপ-পরিদর্শক (এ এস আই) মাহফুজু রহমান প্রায় ৭লাখ ইয়াবাসহ আটক হলেও তার অন্যতম সহযোগি চকরিয়া থানার বিতর্কিত উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহাদাত হোসেনের দাপট এখনো কমেনি। প্রতিরাতে ও দিনের বেলায় ইয়াবা উদ্ধারের নামে কক্সবাজার –চট্রগ্রাম মহাসড়কে দূরপাল্লার যানবাহন আটকিয়ে সাধারণ যাত্রী সাধারণকে হয়রানি করে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খোদ চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধরের আস্কারা পেয়ে দারোগা শাহাদাত হোসেন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে ওই থানায় কর্মরত একাধিক পুলিশ সদস্য জানিয়েছেন।
গত শনিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে চকরিয়ার ফাসিয়াখালি এলাকায় ঢাকামুখী একটি যাত্রীবাহি থামিয়ে গণহারে তল্লাসীর নামে হয়রানির শুরু করে চকরিয়া থানার বহু বির্তকিত উপ-পরিদর্শক ( এসআই) শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ।
এইসময় ওই গাড়ির যাত্রী কক্সবাজার অনলাইন প্রেসক্লাবের কার্য্যকরী সদস্য ও বাংলাদেশ অনলাইন জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসলাম মাহমুদ প্রতিবাদ করলে তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উল্টো তাকে নাজেহাল করে এবং সাংবাদিক ইসলামের ব্যবহৃত ব্যাগে ইয়াবা ঢুকিয়ে দিয়ে মাদক মামলায় ফাসিয়ে দেয়ার হুমকিও দেয় সেই বিতর্কিত দারোগা শাহাদাত।
গত এক বছরের অধিক সময় ধরে বিতর্কিত উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহাদাত হোসেন চকরিয়া থানায় যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে ইয়াবা আটকের পর ‘ওসি’কে ভাগ দিয়ে ওসি প্রভাষের কাছের লোক বনে যান শাহাদাত। ওসিও নিয়মিত নানা সুবিধা পেয়ে শাহাদাতের লাগাম ছেড়ে দেন। এতে করে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠে দারোগা শাহাদাত হোসেন। এমনকি থানার অন্য সিনিয়র দারোগারাও তার আচরে ক্ষুব্দ।
এছাড়া চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারী সীতাকুন্ড এলাকায় চকরিয়া থানার এক দারোগা বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ আটক হয়। ওই ইয়াবা গুলো দারোগা শাহাদাত হোসেনের ছিল বলে জানা গেছে। বলতে গেলে দারোগা শাহাদাত যেন ইয়াবা গায়েব এর একজন কারিগর!
তাছাড়া চলতি বছরের এপ্রিল মাসে চকরিয়া থানার এসআই শাহাদাত হোসেন দুই লাখ টাকার বিনিময়ে চার্জশীট থেকে আসামী বাদ দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় মামলার বাদী ওই চার্জসীটের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজির দরখাস্ত দেয়।
মামলার বাদি এম শাহজাহান চৌধুরী জানান, ২১ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ফুলছড়ি এলাকায় মনজুর বাহিনীর হামলার শিকার হন দুই নারীসহ একই পরিবারের ৪ জন। এঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ২৫ জানুয়ারী চকরিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত আহতদের স্বচক্ষে দেখে মামলার প্রধান আসামী মনজুর আলমকে কারাগারে প্রেরণ করেছিলেন।
এ ঘটনায় আহতদের ভাই এম.শাহজাহান চৌধুরী বাদী হয়ে গত ২২ ডিসেম্বর চকরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ( মামলা নং ৫৩, জিআর ৬৪৯,তাং-২২/১২/২০১৪, ধারা-১৪৩/৪৪৭/৩২৩/২২৫/৩২৬/৩০৭/৩৫৪/৩৭৯/৫০৬)। মামলায় প্রধান আসামী করা হয় ইসলামপুর ধর্মেরছড়া গ্রামের আলী হোছনের ছেলে মনজুর আলমকে। যিনি মধ্যম নাপিতখালী গ্রামের ব্যবসায়ী সৈয়দ করিম লটকাইয়া হত্যা মামলা, বনকর্মীদের রাইফেল লুটসহ আরও ডজনাধিক মামলার আসামী। এ মামলায় আসামী করা হয় আরও ৭ জনকে। ২৫ জানুয়ারী রবিবার চকরিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আত্মসর্মপন করেন এ মামলার অন্যতম আসামী মনজুর আলম। এসময় আহত ভিকটিমকেও আদালতে হাজির করা হয়। চিকিৎসা সনদ ও আহত করার বিষয়সহ আহত নারীর অবস্থা আদালতের বিচারক স্বচক্ষে দেখে প্রধান আসামী মনজুর আলমকে কারাগারে প্রেরণ করেন। এ মামলায় ৬ জন আসামী জামিনে থাকলেও ৩নং আসামী নুরুল আজিম ডাকাত পলাতক ছিল।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) এসআই শাহাদত হোসেন ২ লাখ টাকার বিনিময়ে স্পর্শকাতর এই মামলা হতে ৩২৬ ধারা বাদ দিয়ে অভিযুক্ত মুল আসামী মনজুর আলম ও নুরুল আজিম চার্জসীট হতে বাদ দিয়ে চকরিয়া থানার অভিযোগপত্র নং-১০৮ চকরিয়া ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে দাখিল করেন।
এদিকে প্রতিনিয়ত ইয়াবা উদ্ধার করে দারোগা শাহাদাত হোসেন কুমিল্লা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বেচা-বিক্রি করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সূত্রটি জানিয়েছেন, দারোগা শাহাদাত হোসেনের গ্রামের বাড়ি চাদপুর হলেও তা কুমিল্লা’র সীমানায়। যার কারনে কুমিল্লা’র সিন্ডিকেটের সাথে তার রয়েছে গভীর সখ্যতা।
অধিকাংশ সময় দারোগা শাহাদাত হোসেন উদ্ধারকৃত ইয়াবা ডিবি থেকে বদলিকৃত দারোগা বিল্লাল হোসেনের কাছে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। আটককৃত মাহফুজের অন্যতম সহযোগি বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

তার সাথে শনিবার রাতে দায়িত্ব পালনকারি এক পুলিশ কনষ্টেবল নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, শনিবার রাতেও বহু গাড়ি আটক করে তল্লাসী চালান দারোগা শাহাদাত। ওই সময় কিছু সংখ্যক ইয়াবা পেলেও তা তিনি গায়েব করে পেলে।
ওই পুলিশ কনষ্টেবল দাবি করেন, কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খোলবে না! তার সাথে ডিউটি কারি সকল পুলিশ সদস্যদের টাকা দেয় দারোগা শাহাদাত হোসেন।

গতকাল রাতে দৈনিক সাগর দেশের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত দারোগা শাহাদাতের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।