৩০ এপ্রিল, ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ, ১৪৩২ | ১ জিলকদ, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. আবদুল হাই এর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী ২৯ এপ্রিল   ●  লুৎফুর রহমান কাজলের মা সাবেক এমপি সালেহা খানমের ইন্তেকাল করেছেন   ●  টেকনাফে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতদলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১   ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার

রামু সহিংসতার সেই উত্তম বড়ুয়া কোথায়!

images-6
কক্সবাজার জেলার রামুতে যে ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্টকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বৌদ্ধদের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়েছিল, সেই উত্তম বড়ুয়া ঘটনার পর থেকে গত চার বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। সেসময় প্রশাসন তাকে ‘ভয়ঙ্কর’ আখ্যা দিলেও পরবর্তীতে জানা গেছে, তিনি পরিস্থিতির শিকার। সম্প্রতি নাসিরনগরে ফেসবুকে কথিত ছবি পোস্টকে কেন্দ্র করে রসরাজকে আটক করা হলে,আবারও উঠে আসে উত্তম বড়ুয়ার নাম। কোথায় সেই উত্তর বড়ুয়া? পুলিশের কাছে তিনি পলাতক।পরিবারের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। আর এলাকাবাসী বলছেন, উত্তম বড়ুয়ার বিষয়ে পুলিশ আত্মগোপনের কথা বললেও, তাকে খুঁজে বের করার বিষয়ে পুলিশের চেষ্টা নেই।

উত্তম বড়ুয়ার ফেসবুকে পবিত্র কোরআন শরিফ অবমাননার ছবি দেখা গেছে, এই অজুহাত তুলে ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর বৌদ্ধপল্লিতে হামলা হয়েছিল। তখন তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়, ছবিটি উত্তমের ফেসবুকে কেউ ট্যাগ করেছে। কিন্তু কে বা কারা এটা করেছে, চার বছরেও তা বের করতে পারেনি পুলিশ।

চার বছরে উত্তম বড়ুয়ার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ হয়েছে কিনা প্রশ্নে রামুর প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চার বছরে উত্তমকে আর খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি। তার স্ত্রী সন্তান এখনও এখানেই আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে জানতে চেষ্টা করেছি, উত্তম দেশে আছে কিনা কিংবা বেঁচে আছে কিনা। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।’ রামুর পরিবেশ এখন অনেকটা শান্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যা ঘটেছিল সেসময় তা আমাদের চিন্তার বাইরে। যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা অপূরণীয়। কিন্তু যাকে ঘিরে এই পুরো বিষয়টা ঘটানো হলো, তাকে আর পাওয়ায় যাবে না, সেটা ভাবা যায় না ।’

উত্তম বড়ুয়া রামু সদরের চেরাংঘাটা গ্রামের সুদত্ত বড়ুয়ার ছেলে। স্ত্রী রিতা বড়ুয়া ও একমাত্র ছেলে আদিত্য বড়ুয়াকে নিয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে মেরংলোয়া গ্রামের হৃদয় রঞ্জন দাশের বাসায় ভাড়া থাকতেন তিনি। সত্যিই কি চার বছর যোগাযোগ হয়নি উত্তমের সঙ্গে, এ প্রশ্নের জবাবে স্ত্রী রিতা বলেন, ‘না।তার খোঁজ করব প্রথম দিকেতো সেই সাহসটুকুও হয়নি। সবাই খেপে ছিল মানুষটার ওপর। কেউ বুঝে, কেউ না বঝে। আমাদেরকে বলতে গেলে একঘরে করে রাখার অবস্থা। তারপর পরিস্থিতি যত ঠাণ্ডা হলো, তত আমার মনের মধ্যে কু ডাকে। কোথায় আছে, কেমন আছে, জানি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগে মনে করতাম প্রাণ বাঁচাতে কোথাও লুকিয়ে আছেন, ফিরবেন। এখন আর ভরসা পাই না।’

উত্তম বড়ুয়ার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় তাকে প্রধান আসামি করে চার্জশিটও দেওয়া হয়েছে । যে ফেসবুক অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে কোরআন অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছিল, সেটি নিখোঁজ উত্তম বড়ুয়ার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বলে নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে অবমাননার ছবি তিনি নিজে আপলোড করেছেন, নাকি অন্য কেউ তাকে ট্যাগ বা যুক্ত করেছেন, সে বিষয়ে তদন্তকারীরা নিশ্চিত হতে পারেননি।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও রামুর ঘটনায় হাইকোর্টে শুনানির জন্য অপেক্ষমান মামলার আইনজীবী ব্যরিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চার বছর পার হয়ে যাওয়ার পরও আমরা জানি না, উত্তম বড়ুয়া কোথায়। পরিবারের কাছেও তার খোঁজ নাই। অথচ নিরাপত্তা নিশ্চিতকারী সংস্থাগুলোর দায়িত্ব ছিল তাকে খুঁজে বের করা। সেটা তারা পালন করেনি। ফলে উত্তম কোথায় সে প্রশ্নের উত্তর তারাই দিতে পারবেন।’

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রভাষ চন্দ্র ধরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘উত্তম বড়ুয়া ঘটনার দিনের পর থেকে এখনও পলাতক। আমরা খোঁজখবর করছি। তিনি পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করেননি বলেই আমরা জানি।’ মামলাগুলোর পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবগুলো মামলাই বিচারাধীন রয়েছে।
সূত্র: বাংলাট্রিবিউন

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।