৫ মে, ২০২৪ | ২২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৫ শাওয়াল, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  কক্সবাজারে শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক সার্জেন্ট রোবায়েত    ●  উখিয়ায় রোহিঙ্গা যুবককে গলা কেটে হত্যা   ●  বাহারছরা পুলিশের অভিযানে হত্যা চেষ্টা মামলার তিন আসামি গ্রেফতার   ●  নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে কচ্ছপিয়ার নোমান চেয়ারম্যানের হুমকি   ●  কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সিরাজুল হক ডালিম’র ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ   ●  নিরাপদ নুরুল আবছারকেই পছন্দ ভোটারদের   ●  আদালতে তিন মামলারই জবানবন্দি দিলেন অস্ত্র সহ গ্রেফতার সিরাজ   ●  টেকনাফে অপহরণ চক্রের সদস্য অস্ত্রসহ গ্রেফতার   ●  উপজেলা চেয়ারম্যান শফিউল্লাহর প্রার্থীতা বাতিলে হাইকোর্টে রিট   ●  প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর ৩০ বছরের পথচলা ও সাফল্য উদযাপন

মহা পরিচালকের ঘুমধুম রেজু গর্জনবনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন

index
উখিয়ার পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন ঘুমধুমের রেজু গর্জনবনিয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অনিয়ন, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার রোষানলে পড়ে এ শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গোয়ালঘরে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘ সময়কাল বিদ্যালয়টি অতি কষ্টের মাধ্যমে শিক্ষকেরা চালিয়ে আসলেও ম্যানেজিং কমিটির অনিয়মের কারনে সু-নজর পড়েনি জনপ্রতিনিধি অথবা সরকারী-বেসরকারী কোন কর্তাব্যক্তির। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সম্প্রতি জাতীয়, আঞ্চলিক ও স্থানীয় পত্রিকায় ছাপানো হলে টনক নড়ে প্রাথমিক ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। যার ফলশ্রুতিতে গত সপ্তাহে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা পরিবীক্ষণ ইফনিট, প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, মহা পরিচালক উক্ত বিদ্যালয়টি সরজমিন পরিদর্শন করেছেন। এতে পরিচালনা কমিটির যাবতীয় অনিয়ম, দুর্নীতি এবং শিক্ষা নীতির বর্হিভূত ২জন শিক্ষককে অবৈধ ভাবে নিয়োগ দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পেয়েছেন মহা পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল হালিম।

সুত্রে জানা গেছে, ১৯৯২ সালে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতায় ২ কক্ষ বিশিষ্ট্য এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়, বর্তমানে ৪জন শিক্ষক কর্মরত আছে। পাহাড়ী-বাঙ্গালী মিলে ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা ১১১জন। বিগত ৩বছর পিএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পার্শের পাশাপাশি উপজেলার শ্রেষ্টত্ব অর্জন করতে সক্ষম হন এ বিদ্যালয়। ২০১০সালে পাঠদান অনুমতি লাভ করেন। পরবর্তীতে বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দীর্ঘ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকার ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারী ঢাকায় অনুষ্ঠিত্বব্য শিক্ষক সমাবেশ থেকে দেশে ২৯ হাজার বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে তিন ধাপে জাতীয়করণের ঘোষনা দেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে প্রথম ধাপের প্রায় ২৬ হাজার ৯শত বেসরকারী রেজিষ্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। বাদবাকী স্কুল গুলোর মধ্যে দ্বিতীয় ধাপে মানসম্মত ক্যাটাগরি অনুসারে ২০১৩ সালের জুলাইতে এবং তৃতীয় ধাপে ২০১৪ সালে জানুয়ারী থেকে সমস্ত বেসরকারী, এনজিও পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয় করণের আওতায় আনা হয়। সরকারী বিধি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপে উক্ত বিদ্যালয়টি উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটি সব কিছু যাচাই-বাছাই করে কর্মরত ৪জন শিক্ষক যথাক্রমে প্রধান শিক্ষক ছৈয়দ হামজা, সহকারী শিক্ষক শফিউল ইসলাম, সিরাজুল হক, বুলবুল আকতারের নাম প্রস্তাব আকারে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির নিকট প্রেরণ করিলে জেলা টাস্কফোর্স কমিটি ওই প্রস্তাবটি গ্রহন করে রেজুলেশন আকারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। যদি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগের তৎকালীন নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহমদ জামিল একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যার নং-০৫, তাং-২৯/১১/১২ইং। রেজু গর্জনবনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিউল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ ঘোষণার পর থেকে সভাপতি উপেন্দ্র লাল তংচংগ্যা তার একান্ত আপনজন মামলায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ছৈয়দ হামজা ব্যতিত ৩জন সহকারী শিক্ষকদের নিকট থেকে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। দরিদ্র শিক্ষকেরা ওই টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ষড়যন্ত্রের শুরু হয়। এ সময় থেকে দীর্ঘ ৯/১০ বছর ধরে কর্মরত ৩জন নিয়মিত শিক্ষককে বাদ দেওয়ার জন্য সভাপতি উঠেপড়ে লেগে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নামে-বেনামে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে আসছে। তার এ মিথ্যা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়টিতে এশাধিকবার সরেজমিন তদন্ত করে জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। এসব তদন্ত প্রতিবেদনে সভাপতি উপেন্দ্র লাল তংচংগ্যার অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা উঠে আসে। পরিশেষে সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মহাপরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল হালিম বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসে দেখতে পান এসব অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি বাস্তব চিত্র, এসব দেখে তিনি গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেন, এসময় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও সরকারী নিয়মনীতি উপেক্ষা করে অর্থাৎ ২০১০সালের পরে পরিচালনা কমিটি কোন প্রকার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতা না থাকার সত্বেও উক্ত সভাপতি তার ভাতিজা উকচাইন চাকমা ও ১৭ বছর বয়সী এক মহিলাকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য ও সাবেক ইউপি মেম্বার ফরিদুল আলম বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তার কারণে এ শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অচলাবস্থার কারণ হয়ে স্থানীয় প্রশাসনের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তিনি সহ ম্যানেজিং কমিটির অপরাপর সদস্যরা তার এ অপকর্মের প্রতি ধিক্কার জানানোর পাশাপাশি কর্মরত শিক্ষকদের বেতন ভাতা প্রদানের দাবী জানান।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।