৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ১৪ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  সভাপতি পদে এগিয়ে ছাতা প্রতিকের প্রার্থী জয়নাল আবেদিন কনট্রাক্টর   ●  প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে উখিয়ার নুরুল হকের প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যা   ●  ইয়াবার কথোপকথন ভাইরাল হওয়া ডালিম এখনো অধরা   ●  বৃত্তি পরীক্ষায় বিশেষ গ্রেড পেল খরুলিয়ার রোহান   ●  মরিচ্যা চেকপোস্টে ৪০ হাজার ইয়াবাসহ ভুয়া নৌবাহিনী সদস্য আটক   ●  উখিয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার আবুল কাশেমের ইন্তেকাল   ●  উখিয়ায় নিখোঁজের ৪দিনেও সন্ধান মেলেনি শিশু নুরশেদের   ●  উখিয়ায় প্রায় ৫ কোটি টাকার ইয়াবাসহ বাহক আটক, অধরা মাদক সম্রাট ছোটন ও মামুন   ●  ১৩ নভেম্বরকে ঘিরে কক্সবাজারে সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী   ●  কক্সবাজার ৪আসনঃ প্রার্থী চুড়ান্ত, তবুও মনোনয়ন বঞ্চিত আবদুল্লাহর সমর্থকদের বিক্ষোভ

মহামারীতে হোমিওপ্যাথির রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও চিকিৎসার সাফল্য

ডাঃ মোঃ জয়নাল আবেদীন চৌ:

সকল প্রকার সাধনার প্রধান অবলম্বন মানুষের শরীর।এই শরীরকে অবলম্বন করে আমরা সকল প্রকার শিক্ষা লাভ করি। এই শরীরের মধ্যে আমাদের সাধনার সমস্ত উপাদান নিহিত আছে। সেজন্য প্রথমে শরীর সম্পর্কে কিছু বলা প্রয়োজন। প্রতিটি মানুষের মাঝে আত্মা ও জীবনী শক্তি রয়েছে এবং দুটোই অদৃশ্য সত্তা। হোমিওপ্যাথির জনক ডা: স্যামুয়েল হ্যানিম্যান “জীবনীশক্তি “মতবাদ গ্রহণ করে হোমিওপ্যাথিকে প্রতিষ্ঠা করেন। হ্যানিম্যান এ বিষয়ে বলেন যে জড় দেহের সকল চেতনা, শক্তি, সামর্থ্য, অনুভূতি, সুখ দুঃখ অনুভব, চিন্তা ভাবনা, স্মৃতি শক্তি সহ সকল প্রকার জৈব ক্রিয়াকলাপের মূলে হল জীবনীশক্তি। আত্মার অন্তর প্রবাহ জীবনী শক্তির মাধ্যমে জীব দেহকে সকল কর্ম কান্ডের উপযোগী করে রাখে। আত্মা ও জীবনীশক্তি উভয় অদৃশ্য কিন্তু একই জিনিস নয়। স্রষ্টার আদেশ ঘটিত আত্মার অন্তর প্রবাহের দরুন জড়দেহ চেতনা লাভ করে। এই আত্মাটি অমর কিন্তু জীবনীশক্তি ক্ষয়শীল এবং জ্বড় দেহটি ধ্বংসশীল।

বর্তমানে যে ইমিউনিটি সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার কথা বলছে তা ডা: স্যামুয়েল হ্যানিম্যান দুই শত বৎসর আগেই বলে গিয়েছেন মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ করা, রোগাক্রান্ত হওয়া, রোগ যন্ত্রনা ও রোগ লক্ষণ প্রকাশ করা, ইন্দ্রিয় সমূহের মাধ্যমে অনুভুতি প্রকাশ করা, ইন্দ্রিয় সমূহের মাধ্যমে অনুভুতি গ্রহণ করা এবং রোগ আক্রান্ত হবার পর যথার্থ সদৃশ ঔষধ শক্তির সাহায্যে রোগ আরোগ্য করা ইত্যাদি জীবনীশক্তির প্রধান কাজ। আমরা তখনি পীড়িত হয় যখন আমাদের জীবনীশক্তি কোন রোগ শক্তির প্রতি সংবেদনশীল হয়। রোগ শক্তির বিরুদ্ধে জীবনীশক্তি বা ভাইটাল ফোর্স অবিরত সংগ্রাম করে চলে। সংগ্রামে পরাভূত হলেই সৃষ্টি করে অস্বাভাবিক লক্ষণ সমূহ।সাহায্যের নিমিত্তে বলবত্তর অধিক শক্তিশালী সদৃশ ঔষুধ শক্তি যখন জীবনী শক্তির বা ভাইটাল ফোর্স এর সংস্পর্শে আসে তখন অপেক্ষাকৃত দুর্বল রোগ শক্তি আর টিকে থাকতে পারেনা। দ্রুত অপসৃত হয়। ঔষুধ শক্তির সীমিত ক্রিয়া শেষ হলে জীবনী শক্তি বা ভাইটাল ফোর্স সম্পূর্ণ মুক্ত হয় ও রোগী আরোগ্য লাভ করে। এটাকে হোমিও ডাক্তারগণ বলে থাকে জীবনী শক্তি বা ভাইটাল ফোর্স এর কাজ নামে অভিহিত করে ও এলোপ্যাথি ডাক্তারগণ এটাকে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউনিটি সিস্টেম এর কাজ বলে অভিহিত করে আসছে।

চিকিৎসা সাফল্য :
মহামারী রোগে ১৮০১খ্রিষ্টাব্দে ডা: স্যামুয়েল হ্যানিম্যান এর হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিজ্ঞান এর সংবিধান অর্গানন অব মেডিসিন গ্রন্থ এর এফোরিজম ৩৩ ফুটনোট ১৭তে হোমিওপ্যাথিক প্রতিষেধক আছে এবং হোমিও ঔষুধ প্রয়োগ করে ভাল ফলাফল পেয়েছেন তা উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও দি লেজার রাইটিং গ্রন্থ এর ৩৭৬ থেকে ৩৮৩ পৃষ্ঠায় হোমিওপ্যাথিক প্রতিষেধক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। ১৭৯৯ ও ১৮০১ সালে Scarlet fever এর জন্য তিনি হোমিও ঔষধ Belladonna ৩০ প্রতিষেধক হিসাবে ব্যবহার করে ছিলেন এবং ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছিলেন। ১৮১৩ সালে জার্মানির টাইফাস ফিভার মহামারিতে প্রচলিত চিকিৎসা ধারায় মৃত্যু হার ছিল ৩০% আর হোমিও চিকিৎসায় মৃত্যু হার ছিল ২%। ১৮৩১ সালে অস্ট্রেলিয়ার কলেরা মহামারিতে হোমিও চিকিৎসায় মৃত্যু হার ছিল ১০%। ১৮৪৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সিনসিনাটির কলেরায় হোমিওপ্যাথির সাফল্য ছিল ৯৭%। ১৮৫৪ সালে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের কলেরায় হোমিও চিকিৎসায় ৯%। ১৮৫৫ সালে আফ্রিকার রিও এর কলেরায় হোমিও চিকিৎসায় মৃত্যু হার ছিল মাত্র ২%। ১৮৬২ থেকে ১৮৬৪ সালের নিউইয়র্ক ডিপথেরিয়ার সংক্রমনে হোমিও চিকিৎসায় মৃত্যু হার ছিল ১৬.৪% যা প্রচলিত চিকিৎসায় মৃত্যু হার ছিল ৮৩.৬%। ১৮৭৮সালে আমেরিকার ইয়োলো ফিভার মহামারিতে হোমিও চিকিৎসায় মৃত্যু হার ছিল ৬%। এবং ১৯১৮সালে স্প্যানিশ ফ্লু মহামারিতে হোমিও চিকিৎসায় মৃত্যু হার ছিল ১.০৫% এবং প্রচলিত চিকিৎসায় মৃত্যু হার ছিল ২৮.২%।

এছাড়াও ১৯৭৪সালে ব্রাজিলের ম্যানিনজাইটিস, ১৯৭১সালে ভারতের জাপানিজ এনসেফালাইটিস, স্মরণ কালের ডেঙ্গু , চিকনগুনিয়া জ্বরে হোমিও চিকিৎসায় সফলতা পাওয়া যায়। ভারত সরকারের আয়ুশ মন্ত্রণালয় কোভিড ১৯ করোনা ভাইরাস এর প্রতিষেধক হিসাবে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ Arsenic alb 30 প্রয়োগ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন।এছাড়াও সম্প্রতি ২০১৫ সালে বাংলাদেশে বেসরকারি আশা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিবিসি বাংলা যৌথ গবেষণায় জানা যায় দেশের মোট জনসংখ্যার ৪০% লোক হোমিও চিকিৎসা গ্রহন করেন।

ডাঃ মোঃ জয়নাল আবেদীন চৌধুরী,
ডি.এইচ.এম.এস (বিএইচবি) ঢাকা।
চেম্বার, চৌধুরী হোমিও ফার্মেসি
ইউনিয়ন পরিষদ মার্কেট, মরিচ্যা বাজার,
উখিয়া, কক্সবাজার।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।