১২ মে, ২০২৪ | ২৯ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৩ জিলকদ, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  রামুর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায়  আসছে চোরাই গরু   ●  রামুতে ওসির আশকারায় এসআই আল আমিনের নেতৃত্বে ‘সিভিল টিম’   ●  ড. সজীবের সমর্থনে বারবাকিয়ায় পথসভা   ●  কক্সবাজারে শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক সার্জেন্ট রোবায়েত    ●  উখিয়ায় রোহিঙ্গা যুবককে গলা কেটে হত্যা   ●  বাহারছরা পুলিশের অভিযানে হত্যা চেষ্টা মামলার তিন আসামি গ্রেফতার   ●  নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে কচ্ছপিয়ার নোমান চেয়ারম্যানের হুমকি   ●  কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সিরাজুল হক ডালিম’র ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ   ●  নিরাপদ নুরুল আবছারকেই পছন্দ ভোটারদের   ●  আদালতে তিন মামলারই জবানবন্দি দিলেন অস্ত্র সহ গ্রেফতার সিরাজ

চকরিয়া-পেকুয়ায় বন্যা

‘বাবা-মেয়ের নির্ঘুম রাত!

গত কয়েকদিনের টানা ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে কক্সবাজারের চকরিয়া-পেকুয়ায় স্মারণকালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ছুটে গেছেন  কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম এমএ। তাঁর সাথে সমানতালে ছুটে যাচ্ছেন তাঁর কন্যা কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান তানিয়া আফরিন। বলতে গেলে বন্যার্তদের খোঁজ নিতে বাবা-মেয়ের নির্ঘুম রাত কাটছে।

সাংসদ জাফর আলমএম এ ব্যক্তিগত সহকারী আমিন চৌধুরী বলেন, ভয়াবহ এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এমপি জাফর আলমের চেষ্টার কমতি ছিল না। সেই ভোর থেকেই শুরু করে গভীর রাত অবদি এই ইউনিয়ন থেকে ওই ইউনিয়নে ছুটে গেছেন রান্না করা খাবারসহ ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে। প্রতি রাতে মাত্র কয়েকঘন্টা ঘুম যাওয়া ছাড়া প্রতিদিনই তিনি ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন বন্যাকবলিতদের পাশে থাকতে।
তিনি আরও বলেন, বন্যা শুরুর প্রথমদিনই শুরু করে দেন ১০ হাজার মানুষের জন্য বিরিয়ানি রান্নার আয়োজন। এর পর প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের মাধ্যমে নগদ ১ লক্ষ টাকা করে অর্থ সহায়তা দিয়েছেন বন্যার্তদের তাত্ক্ষণিক খাবারের ব্যবস্থা করতে। এছাড়াও বন্যার্তদের মাঝে তিনিও বিলিয়েছেন নগদ টাকা।

এদিকে এমপি জাফর আলমের পক্ষ থেকে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নে রান্না করা খাবার, চালসহ ত্রাণ সামগ্রী ছুটে যাচ্ছেন এমপির কন্যা কক্সবাজার জেলা পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান তানিয়া আফরিন ও একমাত্র পুত্র তানভীর আহমদ সিদ্দিকী তুহিন।

এক প্রতিক্রিয়ায় সংসদ সদস্য জাফর আলম বলেন, ৫০ বছরের ইতিহাসে স্মরণকালের এই ভয়াবহ বন্যা যেদিন থেকে শুরু হয়েছে তখন থেকেই দুই উপজেলার ২৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি ব্যক্তিগত সহায়তা নিয়ে। প্রতিটি ইউনিয়নে সশরীরে উপস্থিত থেকে ব্যক্তিগতভাবে বরাদ্দ দিয়েছি ১ লক্ষ টাকা করে। এছাড়াও লক্ষাধিক মানুষকে প্রতি বেলায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে রান্না করা বিরিয়ানি, সুপেয় পানিসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী। এতে কোন মানুষকে অভুক্ত থাকতে হয়নি।
তিনি আরও বলেন, এবারের বন্যায় কম করে হলেও সর্বক্ষেত্রে হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় যেসব পরিবার বসতবাড়ি হারিয়েছেন তাদেরকে পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
চিরিঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামাল হোছাইন চৌধুরী বলেন, তার ইউনিয়নে বন্যা কবলিত মানুষের জন্য জাফর আলম এমপি  বরাদ্দ দিয়েছে। নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন তিনি।
এদিকে এমপি জাফর আলমের পাশাপাশি তাঁর কন্য কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান তানিয়া আফরিনও ছুটে চলছে বন্যার্তদের মাঝে। গতকাল পেকুয়া সদর, শীলখালী, বারবাকিয়া সহ  উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২০০০ মানুষের মাঝে জেলা পরিষদের পক্ষে চাল বিতরণ করেন তিনি। ওই সময় জেলা পরিষদ সদস্য এইচএম শওকতও তার সাথে ছিলেন।

এক প্রতিক্রিয়ায় কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান তানিয়া আফরিন বলেন সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারের পাশে দাঁড়াতে। শেষ পর্যন্ত এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে ইনশাল্লাহ।

প্রসঙ্গতঃ কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্য মতে, জেলায় ৬০ ইউনিয়নে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৫০৩ জন বন্যার কবলে পড়েন। সে সময় চকরিয়া এবং পেকুয়া উপজেলায় ১৬২টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নেন। এসব মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের পাশাপাশি ৩৭ হাজার ৫০০টি পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করা হয়। মজুদ রয়েছে আরো ৫০ হাজার। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৯ কিলোমিটার সড়ক-উপসড়ক। এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে পেকুয়ার ৬টি এবং চকরিয়ার ১৩টি ইউনিয়ন। প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এক কোটি সাড়ে ৪০ লাখ টাকা। পানি কমে গেলে চুড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।