
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় নব গঠিত ৫নং সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহান মার্মার বিরুদ্ধে বিবিধ অনিয়ম, দূর্ণীতি, স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। গরীব অসহায় দরিদ্র মানুষের জন্য বন্টরকৃত ভিজিডি তালিকায় চেয়ারম্যানের দুই কন্যাকে অর্ন্তভুক্ত, পরিষদের দফাদার পদে নিয়োগ দেওয়ার আশ্বাসে অর্থ আদায়, পার্বত্য মন্ত্রণালয়য়ের বিশেষ বরাদ্দের ২০০ মে:টন খাদ্যশস্য ভাগবাটোয়ারা, প্রাইমারী শিক্ষক নিয়োগে প্রার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়, টিআর প্রকল্পে হরিলুটসহ জম্মনিবন্ধন ও জাতীয় সনদ বিতরণে অর্থ আদায়ের কারনে ফুসে উঠেছে স্থানীয় জনসাধারণ। চেয়ারম্যানের এহেন অনিয়ম দূর্নীতির কারণে পরিষদের সকল সদস্যদের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা জানানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে ইউপি সদস্যরা। এদিকে রবিবার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বারদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মার্মা সোনাইছড়ি ইউপি চেয়ারম্যানকে ইঙ্গিত করে শিক্ষক নিয়োগে অর্থ আদায়ের বিরুদ্ধে হুসিয়ারী দেন।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৫নং সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহান মার্মা ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) প্রকল্পে ১৭.৫০ মে:টন বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়মের আশ্রয় নেন। এ বরাদ্দে তিনি ঝর্ণাকুম আনু ফকিরের মাজার মেরামত ও ঝর্ণারকুম ব্রিজের দুই পার্শ্বে মাটি ভরাট, অস্থায়ী সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ঢেউটিন চাউনী ও বেড়া মেরামত এবং গ্রাম আদালতের এজলাস নির্মাণে ১৫/২০ হাজার টাকার কাজ করেই সম্পূর্ণ প্রকল্প শেষ করে মোটা অংকের টাকা পকেটস্থ করেছেন। এছাড়াও চেয়ারম্যানের দুই নিজ মেয়েকে অসহায় দরিদ্রদের নামে বরাদ্দকৃত ভিজিডি তালিকায় অর্ন্তভুক্ত, সম্প্রতি দফাদার নিয়োগ দেওয়ার নামে জনৈক খোরশেদ আলম থেকে ৮০ হাজার ও ছৈয়দ নুর থেকে ৬০ হাজার টাকা উৎকোচ আদায় করার অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন গোয়েন্দা প্রতিনিধিদের নিকট স্থানীয়রা অভিযোগ করলে ইউএনওর চাপের মুখে বাহান মার্মা নিয়োগ বাতিল করতে বাধ্য হন। এছাড়াও সম্প্রতি পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২০০ মে:টন বিশেষ বরাদ্দে কোন ইউপি সদস্যকে প্রকল্প না দিয়ে উপজেলা সদরসহ বহিরাগতদের একটি ভূয়া প্রকল্প তালিকা দেখিয়ে উপজেলা পর্যায়ের প্রভাবশালী দুই নেতার মাধ্যমে সম্পূর্ণ টাকা নিজেই আত্মসাত করে নেন। এ ব্যাপারে সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ৯জন ইউপি সদস্যের প্রত্যেকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কেউই ২০০টন বিশেষ বরাদ্দের বিষয়ে জানেনা বলে জানান। ভিজিড়ি চাউর বিতরণ কালে কার্ডধারীদের চাউল কম দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। দুস্থদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে সরকারের দেয়া একশ দিনের কর্মসূচীর অর্থও তিনি আত্মসাৎ করেছেন। প্রতিদিন যেখানে ২২৫ জন লেবারের কাজ করানোর কথা সেখানে তিনি ৫০-৭৫ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ করিয়ে বাকি অর্থ আত্মসাত করেছেন।
অভিযোগে আরো জানাযায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করার জন্য বার বার বলিলেও তা তিনি তোয়াক্কা করেন না। তিনি আইনকে বৃদ্ধা আঙ্গুলী দেখিয়ে নিজ ইচ্ছামত চালাচ্ছে তার পরিষদ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ইউপি সদস্য জানিয়েছেন, চেয়ারম্যান বাহান মার্মা মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন অভিযোগের রায় প্রদান করার কারনে সাধারণ জনগণ প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এছাড়াও পরিষদ বর্গের সাথে কোন প্রকার মিটিং বা আলোচনা ছাড়াই নিজের পছন্দ মত সরকারী বরাদ্দের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
অভিযোগের বিষয়ে ৫নং সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহান মার্মার সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি, তাঁর বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ একবাক্যে অস্বীকার করেন।
পাহাড় সমান এন্থার অভিযোগে দূর্নীতির প্রতিভূ চেয়ারম্যান বাহান মার্মার বিরুদ্ধে সরেজমিন তদন্ত পূর্বক দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন ইউপির সকল সদস্য-সদস্যা ও সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোক্তভোগী জনসাধারণ।
২০২১ ফেব্রুয়ারি ০৮ ০৮:৩১:১১
২০২০ জুলাই ২৮ ০৬:০২:৪৫
২০২০ জুন ২৭ ১১:১৮:৫৪
২০২০ জুন ২২ ১২:৫৩:২৯
২০২০ মে ২৯ ০৫:৫৩:৩৫
২০২০ মে ০৯ ০১:০৫:২৩
২০২০ মে ০৭ ০৫:০৩:৩০
২০২০ মে ০৫ ১১:৫৩:৩৯
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।