১৯ আগস্ট, ২০২৫ | ৪ ভাদ্র, ১৪৩২ | ২৪ সফর, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  “প্লাস্টিক উৎপাদন কমানো না গেলে এর ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব নয়”   ●  নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কক্সবাজারে তাঁতীদলের খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন   ●  বৃহত্তর হলদিয়া পালং বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল আজিজ মেম্বারের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ   ●  মরিচ্যা পালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা   ●  রামুতে বনবিভাগের নির্মাধীন স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে প্রশাসন ও বনকর্মীদের মাঝে প্রকাশ্যে বাকবিতন্ডা   ●  সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ নুরের মৃত্যুতে জেলা বিএনপির শোক   ●  চুরি করতে গিয়ে পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রী ধর্ষণ   ●  আজ রিমান্ডে পেকুয়া নেওয়া হচ্ছে জাফর আলমকে, নিরাপত্তার শঙ্কা!   ●  কক্সবাজারে ঝটিকা মিছিলে ঘুম ভাঙলো পুলিশের, গ্রেফতার ৫৫   ●  হাসিঘর ফাউন্ডেশন উখিয়া শাখার নবগঠিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন

‘প্রাণের কলেজে আবার ফিরে যাওয়া’


দূর-দুরান্ত থেকে হাজারো নবীন-প্রবীণ প্রাণ এসে মিলিত হয়েছে একজায়গায়। আনন্দ-উল্লাশ, হৈ-হুলোড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে চারপাশ। দীর্ঘদিনের পুরনো বন্ধুকে দেখে হৃদয়ের সবটুকু নির্যাস ভালোবাসা দিয়ে জড়িয়ে ধরছে একে-অপরকে। এ যেন স্মৃতির কলেজে আনন্দের বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস। বলছে, বড় আনন্দের ছিলা সেইসব দিনগুলি। আহ! আবার যদি পেতাম ফিরে।

শনিবার (৪ফেব্রুয়ারি) এ দৃশ্য দেখা যায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি হাজী এম.এ.কালাম ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে। কলেজের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘গৌরবের অতীতের উপর গড়ি সমৃদ্ধ ভবিষ্যত’ স্লোগানে বর্ণিল আবহে দিনব্যাপী পূর্তি উৎসবের আয়োজন করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। বান্দরবান এবং কক্সবাজারের শীর্ষনেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ অংশ গ্রহণ করায় অনুষ্ঠান আরো অলোকময় হয়ে উঠেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেছেন- দেখতে দেখতে হাজী এম এ কালাম ডিগ্রি কলেজ ২০ বছর পেরিয়ে গেল। আগামীতে এ কলেজ বিশ^বিদ্যালয় কলেজ ও অনার্স-মাষ্টার্স চালু করা হবে। এতদূর আসার পেছনে যিনি প্রথমে এগিয়ে এসেছেন হাজী এম এ কালাম, যেসব শিক্ষক শ্রম দিয়েছেন তাদের প্রতি প্রতিমন্ত্রী কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন-আগামীতে শিক্ষার্থীদের মেধা দিয়েই যুদ্ধ করতে হবে। শুধুমাত্র এ প্লাস সার্টিফিকেট নিয়ে সেখানে টিকতে পারবা না। চলে যাওয়া সময় ফিরে আসবেনা। শিক্ষক, ছাত্র, অভিভাবক এ তিনে মিলে যদি সঠিক পথে এগিয়ে যেতে হবে, তাহলে আমাদের ছেলেমেয়ে মানুষ হবে।

বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা তাঁর বক্তব্যে বলেন- ২০০০ সনের পূর্ব থেকে হাজী এম এ কালাম কলেজের সাথে আমি জড়িত। সে সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য যখন পেরেছি উন্নয়নে সহযোগিতা করেছি। এ প্রাণপ্রিয় কলেজ থেকে শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে হবে সারাদেশে। আগামীতে কলেজের আরো বেশি সফলতা বয়ে আনার জন্য অভিভাবক, শিক্ষকদের নিরলস ভাবে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বান চাকমা, পৌর মেয়র ইসলাম বেবী, জেলা পরিষদ সদস্য লক্ষী পদ দাশ, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এড. সিরাজুল মোস্তফা, পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য শফিকুর রহমান, কাজল কান্তি দাশ, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম সরওয়ার কামাল, লামা কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম ও নাইক্ষ্যংছড়ি হাজী এম.এ.কালাম ডিগ্রী কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ ইকবাল।

সভাপতির বক্তব্যে কলেজ অধ্যক্ষ ও.আ.ম রফিকুল ইসলাম বলেন-পশ্চাদপদ এ জনপদে যখন শিক্ষার আলো নিভে যাচ্ছিল। উচ্চ শিক্ষার যখন কোন ব্যবস্থা ছিলনা ঠিক সেই মুহুর্তে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানসহ তাঁর সহযাত্রীদের মাধ্যমে কলেজ স্থাপনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। রক্তের কোন আত্মীয় সম্পর্ক না থাকার পরও কলেজ স্থাপনের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন হাজী এম এ কালাম। সেই থেকে শুরু হয় কলেজের পথচলা। কলেজ উন্নয়নে দায়িত্ব নেন বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। যার কারণে আমাদের আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। পরিপূর্ণতা লাভ করে হাজী এম এ কালাম কলেজ।

কলেজের সহকারী অধ্যাপক নিলোৎপল বড়–য়ার প্রাণবন্ত পরিচালনায় অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম, মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকসুদ মিয়া, নাইক্ষ্যংছড়ি থানা অফিসার ইনচার্জ তৌহিদ কবির, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবীদ হাসান, উপজেলা আওয়ামী লীগ আহ্বায়ক ক্যউচিং চাক, যুগ্ম আহ্বায়ক আবু তাহের কোম্পানী, অধ্যাপক মো: শফি উল্লাহ, তসলিম ইকবাল চৌধুরী, সদস্য সচিব মো: ইমরান মেম্বার, কলেজের উপাধ্যক্ষ বশির আহমদ, অধ্যাপক শাহ আলম, মোজাহিদুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক প্রিয়তোষ শর্মা চন্দন, জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জনি সুশীল প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা শেষে সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মাতিয়ে তুলেন বাংলাদেশ আইডল মংসহ কক্সবাজারের স্থানীয় শিল্পিরা। অনুষ্ঠানের শুরুতে আমন্ত্রিত অতিথিদের ক্রেষ্ট দিয়ে বরণ করে নেন কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ। পরে অনুষ্ঠানে বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ম্যাগাজিন উদ্ভাস এর মোড়ক উম্মোচন করেন অতিথিরা।

এর আগে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী নাইক্ষ্যংছড়ি পৌছে প্রথমে রেষ্ট হাউজ দ্বিতল ও শিশু পার্কের উদ্বোধন করেন। পরে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বদুর উল্লাহর সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতার পুরষ্কার প্রদান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম সরওয়ার কামালের সভাপতিত্বে বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যাক্তি পর্যায়ে ঢেউটিন এবং শীতাত্রদের মাঝে কম্বল বিতরণ কর্মসূচী উদ্বোধন করেন। পরে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে কলেজ হোষ্টেলের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন শেষে হাজী এম এ কালাম ডিগ্রি কলেজের ২০ বছর পূর্তি উৎসবে যোগদান করেন অতিথিরা।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।