৪ মে, ২০২৫ | ২১ বৈশাখ, ১৪৩২ | ৫ জিলকদ, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  কক্সবাজার জেলা বিএনপির সদস্য সিরাজুল হক ডালিম’র সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ   ●  শ্রমিক দিবসে সামাজিক সংগঠন “মানুষ” এর ভিন্নধর্মী উদ্যোগ   ●  বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. আবদুল হাই এর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী ২৯ এপ্রিল   ●  লুৎফুর রহমান কাজলের মা সাবেক এমপি সালেহা খানমের ইন্তেকাল করেছেন   ●  টেকনাফে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতদলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১   ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১

প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষিত: ঘুমধুমে পাহাড় কাটা থেমে নেই

উখিয়ার পার্শ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে অবৈধ পাহাড় কাটতে গিয়ে ২ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু ও অপর ২ শ্রমিকের পঙ্গুত্বের ক্ষত না শুকাতেই ফের শুরু হয়েছে পাহাড় কাটা। পাহাড় কাটা বন্ধে প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট অবৈধ পাহাড় কেটে মাটি বাণিজ্য করে চলছে। জানা গেছে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক নির্মাণ কাজে ঘুমধুমের যত্রতত্র পাহাড় কেটে মাটি সরবরাহ দিয়ে আসছিল প্রভাবশালী একাধিক সিন্ডিকেট। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধ উপায়ে পাহাড় কাটলেও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছিলও নিরব। অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটতে গিয়ে ২ শ্রমিক নিহত ও ২ শ্রমিক পঙ্গুত্ববরণ করেন। তখনই স্থানীয় প্রশাসনের টনক নড়ে। পাহাড় কাটার শ্রমিক নিহতের ঘটনায় ঘুমধুম তদন্ত কেন্দ্র পুলিশের এএসআই রুপন বড়–য়া বাদী হয়ে পাহাড় কাটা ও শ্রমিক নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করে। এতে ঘুমধুম ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন সহ ৯ জনকে এজাহার ভূক্ত আসামী করা হয়। ঘুমধুমে পাহাড় কাটা ও শ্রমিক নিহতের ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসনের ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ওই সময় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল ঘুমধুমে পাহাড় কাটা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পাহাড় কাটা বন্ধের নির্দেশ দেন। সাপ্তাহ ধরে পাহাড় কাটা বন্ধ থাকলেও ফের শুরু করেছে পাহাড় কেটে মাটি বাণিজ্য। পূর্বে ঘুমধুম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি খালেদ সরওয়ার হারেছ, প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন ও কথিত ছাত্রলীগ নেতা নুর হোসেন পৃথক ভাবে ৩ টি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পাহাড় কেটে মাটি বাণিজ্য করে আসছিল। ২ শ্রমিক নিহত ও ২ শ্রমিক পঙ্গুত্বের ঘটনায় কামাল উদ্দিন সিন্ডিকেট মামলায় এজাহারভূক্ত হয়ে বর্তমানে জামিনে রয়েছে। সেই থেকে পাহাড় কাটা তার নেতৃত্বে বন্ধ। ইতিপূর্বে শ্রমিক জয়নাল আবেদীন নিহতের ঘটনায় রহস্যজনক কারণে অপর সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ঘুমধুমে শ্রমিক নিহত ও পাহাড় কাটার বিষয়ে প্রশাসনের নির্দেশ মত ক’দিন পাহাড় কাটা বন্ধ থাকলেও গত ক’দিন ধরে ফের পাহাড় কাটা শুরু করেছে কথিত ছাত্রলীগ নেতা নুর হোসেন সিন্ডিকেট। বর্তমানে তার নেতৃত্বে তার বসত বাড়ি ভিটির অংশ, মৃত নছরত আলীর পুত্র আলী জুহারের পাহাড়, মকছুদুর রহমানের পাহাড় থেকে অবৈধ ভাবে মাটি সরবরাহ দিচ্ছে বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক নির্মাণ কাজে। পাহাড় কাটা বন্ধে প্রশাসনের নির্দেশ থাকা স্বত্বেও কথিত ছাত্রলীগ নেতা নুর হোসেন স্থানীয় আইনশৃংখলা বাহিনীর ঘনিষ্টজন ও উপজেলা পর্যায়ের এক প্রভাবশালী নেতার প্রভাব খাটিয়ে পাহাড় কেটে মাটি বাণিজ্য করে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে চলছে। ঘুমধুম ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বলেন, ইতিপূর্বে যারা পাহাড় কাটায় জড়িত তারা আইনের আওতায় আসেনি। ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে আমাকে ও আমার আত্মীয় স্বজনকে মামলায় অভিযুক্ত করে হয়রানি করা হয়েছে। বর্তমানে আমরা জামিনে আছি এবং পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ প্রেরণের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ঘুমধুমে যত্রতত্র পাহাড় কাটার কারণে পরিবেশ বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে। ২ শ্রমিক নিহত ও ২ শ্রমিক পঙ্গুত্ব যেন ঘুমধুমবাসীকে সুখ সাগরে ভাসিয়েছে। সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছে সরকার দলের নামধারী কয়েকজন দালাল ফঁড়িয়া। ঘুমধুম তদন্ত কেন্দ্র পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ এসআই আমিনুর রহমান ফরহাদ জানান, পাহাড় কাটার বিষয়ে জড়িত যেকেউ হউক ব্যবস্থা নেওয়া হইবে। আমি একটু বৈঠকে আছি পরে আলাপ করব বলে লাইন কেটে দেন। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল জানান, সম্প্রতি ঘুমধুম সফর করে পাহাড় কাটা ও শ্রমিক নিহতের ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করে পাহাড় কাটা বন্ধের নির্দেশ দিই। ওই দিনই মাটিবর্তী ২টি মিনি ট্রাক জব্দ করে অর্থদন্ড করি। পরবর্তীতে পাহাড় কাটলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশকে জানানোর নির্দেশ দিই। প্রসঙ্গত ঘুমধুমে তুমব্র“ খাস পাহাড়, মাইল্যংতলী পাহাড়, আবুল ফরাজের পাহাড়, মৃত গাছ কালুর পাহাড়, মকছুদুর রহমানের পাহাড়, যুবদল নেতা গিয়াস উদ্দিন মামুনের পাহাড়, আলমের পাহাড়, নছরত আলীর পাহাড়, কথিত ছাত্রলীগ নেতা নুর হোসেন পাহাড় থেকে মাটি কাটা শুরু হয়ে বর্তমানে অব্যাহত আছে। কিছু পাহাড় মাটি কেটে নাড়া করে ফেলছে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।