১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ১ পৌষ, ১৪৩২ | ২৪ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  কক্সবাজার শত্রুমুক্ত দিবস ১২ ডিসেম্বর   ●  বৌদ্ধ সমিতি কক্সবাজার জেলা কমিটি গঠন সভাপতি অনিল, সম্পাদক সুজন   ●  সভাপতি পদে এগিয়ে ছাতা প্রতিকের প্রার্থী জয়নাল আবেদিন কনট্রাক্টর   ●  প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে উখিয়ার নুরুল হকের প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যা   ●  ইয়াবার কথোপকথন ভাইরাল হওয়া ডালিম এখনো অধরা   ●  বৃত্তি পরীক্ষায় বিশেষ গ্রেড পেল খরুলিয়ার রোহান   ●  মরিচ্যা চেকপোস্টে ৪০ হাজার ইয়াবাসহ ভুয়া নৌবাহিনী সদস্য আটক   ●  উখিয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার আবুল কাশেমের ইন্তেকাল   ●  উখিয়ায় নিখোঁজের ৪দিনেও সন্ধান মেলেনি শিশু নুরশেদের   ●  উখিয়ায় প্রায় ৫ কোটি টাকার ইয়াবাসহ বাহক আটক, অধরা মাদক সম্রাট ছোটন ও মামুন

কুতুবদিয়া হাসপাতাল চলছে ২ জন ডাক্তার দিয়ে

বজলুল আহমেদ। বয়স ৬৫। শ্বাস কষ্টে ভোগছেন বেশ কিছু দিন ধরে। উপজেলার উত্তর বড়ঘোপ এলাকা থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে হাসপাতালে এসেছেন। সকাল ৯টায় আসলেও ঘড়ির কাটা এগার পার হচ্ছে। তারপরও চিকিৎসকের দেখা পাননি তিনি। তাই অধির আগ্রহে বসে থাকা। কপালে বিরক্তির চাপ দেখা যাচ্ছে ষ্পষ্ট। এ রোগীকে চিকিৎসা নিয়েছেন কিনা জিজ্ঞেস করলে রেগে বেগে প্রতিবেদককে বলেন, হাসপাতাল আমার বাবার নাকি? চাইলে চিকিৎসা পাব? ডাক্তার সাহেবের জন্য বসে আছি দেখতে পাচ্ছেন না? ডাক্তার কোথায় জানেন কিনা জিজ্ঞেস করলে বলেন, ডাক্তার সাহেব ফার্মেসীতে রোগী দেখতেছেন। চাপ একটু বেশী তাই আসতে দেরী হচ্ছে। ফার্মেসীতে গিয়ে দেখা গেল চিকিৎসক রোগী দেখায় ব্যস্ত। হাসপাতালে রোগীদের ভীড়ের কথা শুনে দৌঁড়ে এলেন চিকিৎসক। ততক্ষণে রোগীদের মধ্যে হাতাহাতি। এক পর্যায়ে ডাক্তারের ওপর চড়াও। তারপর হাসপাতল ঘিরেই হৈ চৈ…। এক বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি। তেরই মার্চের চিত্র এটি। পনের মার্চ দিবাগত রাতে হাসপাতালে ভর্তি হন লেমশীখালী সাইরা পাড়া গ্রামের নেজাম উদ্দিনের সাত মাসের অন্তঃস্তা স্ত্রী রুমি আক্তার (১৯) । রাত না পোহাতেই সীট কেটে দেওয়া হল তার। বিষয়টি নিয়ে হৈ চৈ পড়ে যায় হাসপাতাল এলাকায়। ফার্মেসীগুলোতে কর্তব্যরত ডাক্তারকে মারার জন্য খোঁজতে থাকে সাধারণ জনগন। জটপট বন্ধ হতে থাকে দোকান পাট। পরে জানা যায়, অন্তঃসত্বা এ মহিলাকে গর্ভপাত করার জন্য তার স্বামী নিকট আত্মীয়কে দায়িত্ব দেয়। তার নির্দেশমতে ঔষুধ কোম্পানীর এক এমআর ডাক্তারের সাথে সখ্যতার খাতিরে রুমি আক্তারকে ছাড়পত্র দিয়ে গর্ভপাতের ঔষধ লিখে একটি চিরকুট দেন। এভাবেই প্রতিটি দিন পার হচ্ছে কোন না কোন নতুন ঘটনার জন্ম দিয়ে। মূলত চিকিৎসকসহ জনবল সংকটে ভোগছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। চিকিৎসকের অভাবে প্রতিনিয়তই অনাকাংখিত ঘটনার সৃষ্টি হচ্ছে হাসপাতালে। ২৭ জন চিকিৎসকের স্থলে কাজ করছেন মাত্র দুই জনে। যদিও চার জন রয়েছেন কাগজে কলমে। অন্যান্য পদগুলোর মধ্যেও প্রায় অর্ধেকেরই বেশী খালী রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট অফিস। ঝাড়ু–দারের অভাবের কথা জানালেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুল মাবুদ। হাসপাতালের শূণ্য পদগুলো পূরণে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে, বললেন তিনি। হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মান দিন দিন কমছে বলে জানালেন সচেতন নাগরিক মহল। উপজেলার মেডিকেল গেইট এলাকার ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার নুরুল আনছার চৌধুরী বলেন, হাসপাতাল এলাকার ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। হাসপাতালকে ঘিরে প্রতিদিন একটি না একটি ঘটনা ঘটছে এখানে। তাই যে কোন মুহূর্তে বন্ধ করে দিতে হয় দোকান। হাসপাতালের চিকিসৎকসহ পর্যাপ্ত জনবল না থাকার ব্যপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম. নুরুল বশর চৌধুরী বলেন,কুতুবদিয়া হাসপাতাল দ্বীপের দু’লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যের রক্ষা কবচ। কিন্তু চিকিৎসক সংকটে ইদানীং হাসপাতাল ঘিরে অনাকাংখিত ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। যার ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ রোগীরা।এই দূর্ভোগ লাগবে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী পদক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি। কুতুবদিয়ার একমাত্র সরকারি হাসপাতালটি এভাবে চলতে থাকলে রোগী শূণ্য হাসপাতালে পরিণত হতে বেশী দিন সময় লাগবে না বলে জানালেন দ্বীপের সচেতন নাগরিক মহল। তারাও দাবী করেন জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালের চিকিৎসকসহ জনবল সংকট সমাধান করা হোক।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।