২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ৯ পৌষ, ১৪৩২ | ৩ রজব, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  সিবিআইউ’র আইন বিভাগের ১৭তম ব্যাচের বিদায় অনুষ্ঠান সম্পন্ন   ●  ক্ষোভ থেকে হত্যার ছক আঁকেন অপরাধী চক্র   ●  রামুর ধোয়াপালংয়ে পোল্ট্রি ব্যবসায়ী অপহরণ : ৩ লাখ টাকা ও মোবাইল লুট   ●  খুনিয়াপালংয়ে বিএনপি সভাপতির সহযোগিতায় শতবর্ষী কবরস্থান দখলের পাঁয়তারা   ●  কক্সবাজার শত্রুমুক্ত দিবস ১২ ডিসেম্বর   ●  বৌদ্ধ সমিতি কক্সবাজার জেলা কমিটি গঠন সভাপতি অনিল, সম্পাদক সুজন   ●  সভাপতি পদে এগিয়ে ছাতা প্রতিকের প্রার্থী জয়নাল আবেদিন কনট্রাক্টর   ●  প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে উখিয়ার নুরুল হকের প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যা   ●  ইয়াবার কথোপকথন ভাইরাল হওয়া ডালিম এখনো অধরা   ●  বৃত্তি পরীক্ষায় বিশেষ গ্রেড পেল খরুলিয়ার রোহান

কক্সবাজারে ওএমএস চাল কেলেঙ্কারির অভিযোগ দুই সেন্টার সীলগালা : মামলার নির্দেশ

আরফাতুল মজিদ, কক্সবাজারঃ সরকারের ভতূর্কি দিয়ে ভিয়েতনাম থেকে কিনে আনা উন্নতমানের আতপ চাল কালোবাজারে বিক্রি করে দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কক্সবাজার শহরের ওএমএস (খোলা বাজারে বিক্রি) ডিলাররা। কক্সবাজার শহরের ১২ জন ডিলারের মধ্যে অধিকাংশই কালোবাজারে চাল বিক্রির সাথে জড়িত। গত দুই মাসে অনন্ত ২০০ মেট্রিক টন চাল চুরি করে কালোবাজারে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া কালোবাজারে বিক্রির পর যেসব চাল ওএমএস এর মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে তাও অত্যান্ত নি¤œমানের। ভিয়েতনামের উন্নতমানের চাল সরকারি গুদাম থেকে নিয়ে ডিলাররা বেশি দামে বাইরে বিক্রি করে দিচ্ছে। আর বাইরের দোকান থেকে মিয়ানমারের পঁচা ও অতিনি¤œমানের চাল উপকারভোগীদের বিক্রি করা হচ্ছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চাল কেলেঙ্কারির এমন ভয়াবহ তথ্য পেয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ওএমএস ডিলারদের কেন্দ্রে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন।

শনিবার বেলা ১২টার দিকে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন কক্সবাজার শহরের রুমালিয়ারছড়ার শাহেদ এমরান ও টার্মিনালের আবুল কাশেমের ওএমএস সেন্টারে অভিযান চালান। সেখানে অনিয়ম পাওয়ায় সেন্টার দু’টি সীলগালা করে দেয়া হয়েছে। খবর পেয়ে অন্যান্য ডিলাররা দৌঁড়ঝাপ শুরু করেন।

কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তিনি আবুল কাশেম ও শাহেদ এমরান নামের দু’টি ওএমএস সেন্টারে অভিযান চালান। এসময় চাল কেলেঙ্কারির ভয়াবহ চিত্র দেখা যায়। সেখানে ভিয়েতনাম থেকে ভতূর্কি দিয়ে সরকারের কেনা চালের পরিবর্তে মিয়ানমারের অতিনি¤œমানের চাল ওএমএস সেন্টারে বিক্রি করা হচ্ছে। সেন্টার দু’টিতে সরকারি চালের বস্তায় মিয়ানমারের নি¤œমানের চাল ভর্তি পাওয়া গেছে। এছাড়া একজন ডিলারের ৩ মেট্রিক টন চাল থাকার কথা থাকলেও সেখানেও কম পাওয়া গেছে।

ইউএনও আরো জানান, ওএমএস সেন্টার দু’টি সীলগালা করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির জিম্মায় চাবি দেয়া হয়েছে। একই সাথে ওই দুই সেন্টারের ডিলারশিপ বাতিল এবং তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়েরের জন্য খাদ্য বিভাগকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, সরকারি চাল নিয়ে তালবাহানা কোনভাবেই সহ্য করা হবেনা। চাল কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের ডিলারশিপ বাতিল এবং তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজুর জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

চাল কেলেঙ্কারির ঘটনায় ডিলারশিপ বাতিল এবং নিয়মিত মামলা দায়েরের নির্দেশ পেয়েছেন জানিয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দেবাশীষ চাকমা জানান, সরকারি গুদাম থেকে ভিয়েতনামের চাল ওএমএস ডিলারদের সরবরাহ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু তারা অন্য চাল বিক্রি করছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ডিলারশিপ বাতিল ও মামলা করার জন্য বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নিব। তবে খাদ্য বিভাগ থেকে তদারক কর্মকর্তা না দেয়ায় ডিলাররা এমন জালিয়াতির আশ্রয় নিতে পেরেছে বলেও মনে করেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাজারে চালের দাম বাড়তি থাকায় বিপাকে পড়ে সাধারণ মানুষ। নিন্মবিত্ত ও মধ্যবিত্ত লোকজন চাল কিনতে যখন হিমশিম অবস্থায় তখন সরকার ন্যায্যমূল্যে খোলা বাজারে বিক্রি’র (ওএমএস) আওতায় চাল বিক্রি শুরু করে। কক্সবাজার শহরে খাদ্য বিভাগের এই কার্যক্রম শুরু হয় গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে। শহরের ১২টি ওএমএস সেন্টারে ১২ জন ডিলারের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু করে খাদ্য বিভাগ। কিন্তু অদৃশ্য কারণে বিষয়টি ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়নি।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।