৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ২৩ ভাদ্র, ১৪৩২ | ১৪ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  ইয়াবাসহ পুলিশে সোপর্দ, চোর সন্দেহে চালান, এলাকায় ক্ষোভ   ●  শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান   ●  “প্লাস্টিক উৎপাদন কমানো না গেলে এর ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব নয়”   ●  নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কক্সবাজারে তাঁতীদলের খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন   ●  বৃহত্তর হলদিয়া পালং বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল আজিজ মেম্বারের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ   ●  মরিচ্যা পালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা   ●  রামুতে বনবিভাগের নির্মাধীন স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে প্রশাসন ও বনকর্মীদের মাঝে প্রকাশ্যে বাকবিতন্ডা   ●  সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ নুরের মৃত্যুতে জেলা বিএনপির শোক   ●  চুরি করতে গিয়ে পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রী ধর্ষণ   ●  আজ রিমান্ডে পেকুয়া নেওয়া হচ্ছে জাফর আলমকে, নিরাপত্তার শঙ্কা!

উখিয়ার ছাত্রলীগ নেতা জাবু হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়নি


দোকান থেকে পেয়াঁজ রসুন আনতে পাঠিয়েছেন মা। মাংস রান্না করে ছেলেকে খাওয়াবেন। পেয়াঁজ রসুনের পরিবর্তে অভাগী মা পেয়েছেন ছেলের লাশ। এখনো সেই মাংস রেখে দিয়েছেন ছেলেকে খাওয়াবেন বলে। ছেলের কথা বলতেই আবেগাকুল মায়ের চোখ গড়িয়ে নামে জলের ধারা। এই অশ্র“ বেদনার, নাড়ি ছেঁড়া ধনকে ফিরে না পাওয়ার। মায়ের দুপাশে দাঁড়িয়ে আছে আরো দুছেলে। এর পরও অত্যন্ত আদরের ছেলে জাবুকে খোঁজে বেড়াচ্ছেন মা। বাবা হারা ছেলেকে আকঁড়ে রেখেছেন এতোদিন, আমার ছেলে কী আর ফিরে আসবে না?এ প্রতিবেদকের সাথে কথা বলার সময় জাবুর মা সাজেদা বেগমের এমন ব্যাকুলতায় উপস্থিত সবাই অশ্র“সজল হয়ে পড়েন। মায়ের কান্না যেন থামতে চাইছিল না। সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, গত ৭ মে রাত ৮ টায় পালংখালী ইউনিয়নের বটতলী ষ্টেশনের পশ্চিম পাশে সৈয়দ নুরের দোকানে প্রতিপক্ষ শাহরিয়ার শাকিলের নেতৃত্বে পালংখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ সভাপতি মুজিবুর রহমান জাবুকে উপর্যুপরি চুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় জাবুর বড় ভাই লৎফুর রহমান ১২ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পূর্ব ফারির বিল গ্রামের নিহত মুজিবুর রহমান জাবু ও হত্যাকারী ছগির আহমদের ছেলে শাহরিয়ার শাকিলের মধ্যে চিংড়ি বিক্রির টাকা লেনদেনের সূত্র ধরে বিরোধের সৃষ্টি হয় বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি তদন্ত কায় কিসলু। ছাত্রলীগ নেতার খুনের ঘটনায় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন জুয়েল জানান, গেল ইউপি নির্বাচনে জাফর মেম্বার পরাজয় বরণ করেন সোলতান মেম্বারের কাছে। এর পর থেকে জাফর মেম্বার সোলতান মেম্বারকে এমনকি তার আতœীয় স্বজনকেও সহ্য করতে পারে না। তাছাড়া পালংখালীতে প্যারা সংক্রান্ত ব্যাপারে ও দুইটি গ্র“প রয়েছে। এতে একটিতে আছেন সোহেল মোস্তফা ও অন্যটিতে লতিফ আনোয়ার চৌধুরী। তাছাড়া এখানে আওয়ামীলীগের দলীয় কোন্দল ও ব্যর্থতার কারণে দলে গ্র“পিং রয়েছে। নিহত জাবু ও তার হত্যাকারীরা আমার আতœীয়। জাবুদের ৯ জনের ১টি গ্র“প ছিল। তাদের চিংড়ি প্রজেক্টের টাকা বেশির ভাগ নিহত জাবু ভেঙ্গে দিয়েছিল। এই টাকার কারণে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। সুযোগ সন্ধানী একটি পক্ষ উস্কানি দিয়ে এই হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে। ৯ নং ওয়ার্ডের সোলতান মেম্বার এ প্রসঙ্গে বলেন, আলী আহমদ ও জাফরুল ইসলাম বাবুল যুব সমাজের হাতে ইয়াবা ও অস্ত্র তুলে দিয়েছে। তাদের ইন্দনে জাবুকে হত্যা করা হয়েছে। আমি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তারা আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আমাকে গাড়ী চাপা দিয়ে মারতে চেয়েছিল। আমাকে না পেরে আমার পরিবারের মেধাবী ছাত্র মুজিবুর রহমান জাবুকে সু পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। নিহত জাবুর দাদা হাজী আবুল হোসেন বলেন, আমার নাতিকে যারা হত্যা করেছে তারা চিহ্নিত। জাবুর চাচা শামসুল আলম ও নুরুল ইসলাম বলেন, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে জাবুকে হত্যা করা হয়েছে। জাবুর ছোট ভাই কামরুল হাসান ও ওমর ফারুক বলেন, ভায়ের কথা বললে মা পাগলের মতো হয়ে যান। এখনো মা তার ছেলের অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। আমরা আমার ভায়ের হত্যাকারীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করছি। কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলি আহমদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ঘটনার সময় আমি ঢাকায় ছিলাম। ঘটনাটি মর্মান্তিক এবং দুঃখ জনক। এর আগেও প্যারাকে কেন্দ্র করে জুয়েলের ভ্রাতুস্পুত্রকে হত্যা করা হয়েছে। সেখানেও আমাকে জড়ানোর অপচেষ্টা চালিয়েছিল। এবারে ও আমাকে নিয়ে যারা কথা বলছেন তারাই ইন্দনদাতা। এঘটনায় জুয়েল জড়িত। প্যারা দখলদারদের মধ্যে আমার চৌদ্দ গোষ্টি জড়িত নাই। প্রকৃতপক্ষে যারাই অবৈধ প্যারার দখলদার তারাই এসব অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিছ্যুক এলাকার কয়েকজন বলেছেন, আলী আহমদ বলবে জুয়েলের কথা আর জুয়েল বলবে আলী আহমদের কথা। এরা দুজনই ইউপি নির্বাচনের প্রতিদন্ধি চেয়ারম্যান প্রার্থী। এখানে রাজনীতিতে জুয়েলের চেয়ে আলী আহমদ পাকাপুক্ত। এছাড়াও এক সময় এখানে স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। স্বর্ণ বহনকারি ছিলেন, মৃত আমির হোছনের ছেলে জহুর আলম। স্বর্ণ চোরাকারবারি ছিলেন, হ্নীলার মৌলভি ফরিদ। এই স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনার পর থেকে দু পক্ষের মধ্যে দ্বন্ধের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া প্যারার ঘটনার পাশাপাশি ইয়াবা তো আছেই। যাই হোক এখানকার অবস্থা ভালো না। আমরা শান্তিপ্রিয় জনগণ শান্তিতে থাকতে চাই। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে দোষিকে আইনের আওতায় আনা হউক। পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এই হত্যাকান্ডের ঘটনাটি সু-পরিকল্পিত এবং পূর্ব শত্র“তার জের। ঘটনার পর রাজনৈতিক কিছু নেতা ফাইদা হাসিলের জন্য সত্য ঘটনাটিকে সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের বলেছেন, আসামীরা স্থান পরিবর্তন করছে। তাদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।