৪ মে, ২০২৪ | ২১ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৪ শাওয়াল, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  নিরাপদ নুরুল আবছারকেই পছন্দ ভোটারদের   ●  আদালতে তিন মামলারই জবানবন্দি দিলেন অস্ত্র সহ গ্রেফতার সিরাজ   ●  টেকনাফে অপহরণ চক্রের সদস্য অস্ত্রসহ গ্রেফতার   ●  উপজেলা চেয়ারম্যান শফিউল্লাহর প্রার্থীতা বাতিলে হাইকোর্টে রিট   ●  প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর ৩০ বছরের পথচলা ও সাফল্য উদযাপন   ●  কক্সবাজার পৌরসভায় ৩ টি প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা   ●  কুতুবদিয়ায় সুপারডাইকে বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও পারাপারে ফেরী সার্ভিস চালুর দাবী   ●  ‘সবাইকে ভালোর দিকে ছুটতে  হবে, খারাপের দিকে নয়’   ●  বিজয়ী হয়ে অভিভাবকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন নজির আহাম্মদ   ●  চকরিয়ায় সাবেক সাংসদের উপস্থিতিতে সাংবাদিকের উপর হামলা

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর কঠোর নির্দেশনা

অবরোধে অগ্নিসন্ত্রাস ঠেকাতে কক্সবাজারে কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকে চতুর্থ দফার সর্বাত্মক অবরোধের দ্বিতীয় দিন শুরু হয়েছে আজ সোমবার ভোর থেকে। ৪৮ ঘণ্টার এই কর্মসূচিতে সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে দলগুলোর পক্ষ থেকে। এদিকে অবরোধের নামে নাশকতা ঠেকাতে ‘বাংলাদেশ পুলিশ, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ( অপারেশনস) শাখা থেকে  নানা নির্দেশনা দিয়ে একটি চিঠিও দিয়েছে ইতিমধ্যে। ওই চিঠির কপিটি প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষণ রয়েছে।
অন্যদিকে ১০ নির্দেশনা দিয়ে গত ১২ নভেম্বর আরেকটি চিঠি দিয়েছে ডিএমপি কমিশনার। এইদিকে  অবরোধে অগ্নিসন্ত্রাস, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ ঠেকাতে কক্সবাজারে কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সোমবার ভোরে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে এবং বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে এই তথ্য জানা গেছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর কঠোরতায় বিএনপি -জামায়াতের লোকজন তেমন মাঠে নেই বললে চলে। বিশেষ করে পেট্রোল পাম্প সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নজরদারি জোরদার করার দৃশ্য চোখে পড়েছে।
দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকলেও মহাসড়ক, উপসড়কে ছোট যানবাহন চলাচল রয়েছে। সকাল থেকে কক্সবাজার শহর থেকে উপজেলা সমুহে সকল প্রকার যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলছে। সোমবার ভোরে কক্সবাজার বাসটার্মিনাল থেকে চট্রগ্রামগামী কিছু লোকাল বাস ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। তবে কয়েকজন পরিবহন সংশ্লিষ্ট  দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, কক্সবাজার থেকে দূরপাল্লার কোন বাস ছেড়ে যায়নি।
সোমবার ভোরে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কক্সবাজারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্ট ও মহাসড়কে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। প্রতিটি সড়কে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির টহল ও অবস্থান দেখা মিলেছে। টহল দিতে দেখা গেছে নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। এছাড়া কক্সবাজার চট্রগ্রাম মহাসড়কে ‘পেট্রোল বোমা’ নামে নাশকতা, অগ্নিসংযোগ রোধে চলাচলরত মোটরসাইকেল সহ অন্য যানবাহনে সন্দেহজনক লোকজনকে তল্লাসী করছে পুলিশ।
এদিকে আইনশৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি সোমবার ভোর থেকে কক্সবাজারের চকরিয়া-পেকুয়ায় স্থানীয় সাংসদ জাফর আলম এমএ নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগি সংগঠনের লোকজন অবরোধের নামে নাশকতা ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সাংসদের ব্যক্তিগত সহকারী আমিন চৌধুরী। তার তথ্য মতে, বেলা বাড়ার সাথে বিভিন্ন স্থানে শান্তি সমাবেশ ও অবরোধ বিরোধি বিক্ষোভ মিছিল বের হবে।
অন্যদিকে ভোর থেকে কক্সবাজার শহরের লালদিঘীর পাড়স্থ জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে জড়ো হচ্ছেন কক্সবাজার পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলামের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা। সেখানে শান্তি সমাবেশ ও অবরোধ বিরোধি বিক্ষোভ মিছিল বের করার কথা রয়েছে। শহীদ সরণীস্থ কক্সবাজার জেলা বিএনপির কার্যালয় সকাল থেকে তালাবদ্ধ থাকলেও অবস্থান করতে দেখা গেছে পুলিশের একটি দল।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী জানিয়েছেন, কক্সবাজারের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। কিছু লোকালবাস সহ বিছিন্ন ভাবে মানুষ চলাচল করছে। তিনি আরো বলেন, বিশেষ করে  রাতে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার বাস গুলো যাতে নিরাপদে পৌঁছতে পারে সে জন্য জেলা পুলিশের বিশেষ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মিজানুর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় পুলিশ সকল প্রকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গুরুত্ব পয়েন্টে পুলিশের অবস্থান নিশ্চিত করার পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে টহল। র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরাও মাঠে রয়েছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা বা নাশকতার চেষ্টার খবর পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আজ পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর কোন ঘটনা কক্সবাজার জেলায় হয়নি।
কুমিল্লা রিজিয়ন চট্টগ্রাম জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. নাসিম খান বলেন, হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের এসপি মহোদয়ের নির্দেশে কক্সবাজার চট্রগ্রাম মহাসড়কে চলাচলরত ছোট বড় যানবাহন গুলো চলাচলের ক্ষেত্রে বিশেষ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে  হাইওয়ে পুলিশের পেট্রোল টিম সতর্ক অবস্থান রয়েছে। তিনি আরো বলেন, নিরাপদে যাতে যানবাহন চলাচল করতে পারে সেই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ইউনিটের দায়িত্বশীলদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) মো. রাসেল জানান, উখিয়া-টেকনাফের মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছ। মাঠে টহলে রয়েছে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রটের নেতৃত্বে  পুলিশের একাধিক টিম। সরকারি-বেসরকারি অফিস গুলো খোলা, স্বাভাবিক রয়েছে যান চলাচল।
টেকনাফ মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, টেকনাফে পুলিশ সতর্ক অবস্থান রয়েছে।নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্ব পুলিশের পৃথক কয়েকটি টিম সবধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কাজ করছে।
পেকুয়া থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ওমর হায়দার বলেন, বিএনপি- জামায়াতের অবরোধ ও হরতালে পেকুয়ায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্তক অবস্থায় রয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট সহ পুলিশের পৃথক টিম মাঠে রয়েছে।
রামু থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু তাহের দেওয়ান বলেন, হরতাল অবরোধের নামে  নাশকতা ঠেকাতে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। এই পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা মাঠে রয়েছে।
মহাসড়কের চকরিয়া অংশে দায়িত্বরত চিরিঙ্গা হাইওয়ে থানার ইনচার্জ খোকন কান্তি রুদ্র জানান, কক্সবাজার মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে  হাইওয়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থান রয়েছে। পুলিশের পৃথক টিম মাঠে দায়িত্বপালন করছে।
তার দাবি মতে, বিশেষ করে হরতাল বা অবরোধের সময় ছদ্মবেশ এ মোটরসাইকেল যোগে চলাচল কালে কিছু দূস্কৃতকারী হঠাৎ যানবাহনে ‘পেট্রোল বোমা’ নিক্ষেপ করে দ্রুত ছিটকে পড়ে। যার কারনে সন্দেহ জনক লোকজনকে তল্লাসী করা হচ্ছে। এই তল্লাসীতে যাতে সাধারন মানুষ হয়রানীর শিকার না হয়, সে দিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে  বলে এই কর্মকর্তা দাবি করেন

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।