১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ৪ আশ্বিন, ১৪৩২ | ২৬ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ   ●  কক্সবাজারে ভূমি নিবন্ধনে আকাশচুম্বী বর্ধিত উৎসেকর বাতিল, প্রসংশায় পঞ্চমুখ সালাহউদ্দিন আহমদ   ●  হলদিয়ায় ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে উধাও ৩ যুবক   ●  দুর্ধর্ষ প্রতারক দিদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি   ●  ইয়াবাসহ পুলিশে সোপর্দ, চোর সন্দেহে চালান, এলাকায় ক্ষোভ   ●  শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান   ●  “প্লাস্টিক উৎপাদন কমানো না গেলে এর ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব নয়”   ●  নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কক্সবাজারে তাঁতীদলের খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন   ●  বৃহত্তর হলদিয়া পালং বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল আজিজ মেম্বারের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ   ●  মরিচ্যা পালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা

পেকুয়ায় গৃহহীনদের ঘর, তালিকা তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ

পেকুয়ায় গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগসহনীয় ঘর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গত ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ধীর গতিতে এখনো চলছে গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ প্রকল্পের কাজ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গৃহহীনদের এ প্রকল্প থেকে অর্থ লুটপাটের জন্য ঘর নির্মাণে প্ল্যান, ডিজাইন, নির্মাণসামগ্রী গুণগত মান বজায় রাখা হচ্ছেনা। ঘর নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী। শ্রমিকদের খাবার ও নির্মাণসামগ্রী আনতে উপকারভোগীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে টাকা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি টইটং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল ইসলাম স্থানীয় সাংসদের ব্যক্তিগত সহকারী হাসানুল ইসলাম আদরকে দিয়ে এসব ঘর নির্মাণ করাচ্ছেন। তাই তাদের ক্ষমতার প্রভাবের বিরুদ্ধে গিয়ে এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে টো-শব্দ করতে পারছে না কেউ।
অভোযোগ উঠেছে, ঘরগুলো বরাদ্দের তালিকা তৈরীতেও অনিয়ম করা হয়েছে। প্রকৃত গৃহহীনদের ঘর বরাদ্ধ না দিয়ে সিংহভাগ ঘর দেওয়া হয়েছে সচ্ছল পরিবারকে। যারা দাবিকৃত টাকা দিয়েছে তারাই উপকারভোগীর তালিকাভুক্ত হতে পেরেছে। যা নিরপেক্ষ তদন্তে প্রমাণ করা যাবে।
জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের অধীনে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় গৃহহীনদের জন্য পেকুয়া উপজেলায় ১২টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২লাখ ৫৮ হাজার ৫৩১টাকা। প্রতিটি ঘর হবে দুইকক্ষ বিশিষ্ট। ২০ ফুট লম্বা ও পাশ হবে ৮ ফুট। চারপাশে হবে ইটের দেয়াল, উপরে টিনের ছাউনি। ছাউনিতে মেহগনি অথবা কড়াই কাঠ ব্যবহার করতে হবে। গৃহের মেঝেতে তিন ইঞ্চি ঢালাই হবে। রান্নাঘর ও টয়লেট হবে ১৩ ফুট। ইট হবে এক নম্বর, ছাউনির টিন হবে পয়েন্ট ৪৬ মিলিমিটার পুরত্বের রঙিন ঢেউটিন। ঘর ও রান্নাঘরের মাঝখানে সাত ফুট করিডোর থাকবে। যার উপরে থাকবে টিনের ছাউনি। এছাড়াও ঠিকাদার নিয়োগের কোন ধরণের নিয়ম না থাকলেও প্রকল্প কর্মকর্তা ও ব্যয় কমিটির সদস্য সচিব সৌভ্রাত দাশ ও প্রকল্প সভাপতি জাহেদুল ইসলাম টাকার বিনিময়ে আদর নামের এক ব্যক্তির হাতে প্রকল্পটি তুলে দেন। তিনিই যেনতেন ভাবে কাজটি করে যাচ্ছে। তবে ঠিকাদার হাসানুল ইসলাম আদর ঠিকাদার হওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি ঠিকাদার নই। জাহেদ চেয়ারম্যানের পক্ষ হয়ে কাজটি তদারকি করছি মাত্র।

উপকারভোগীদের অভিযোগ, পেকুয়া উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য এসব ঘর নির্মাণের নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে দায়সারা ভাবে কাজ করা হচ্ছে। অনুমোদিত নকশা না মেনে কাজ করা হচ্ছে। সিংহভাগ ঘর নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ইট, সিমেন্ট ও কাদাযুক্ত বালু। আড়াই ফুটের কথা থাকলেও এক ইটের গাথুনি দিয়ে করা হয়েছে এক থেকে দেড় ফুটের বেইজমেন্ট। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে প্রতিটি ঘর। এছাড়া এসব ঘরে টিন ব্যবহার করা খুবই নিম্নমানের। টিন ফিটিংসে পেরেকে দেওয়া হয়নি ওয়াটার প্রুফ। এতে বৃষ্টির পানি ঢুকছে সদ্য নির্মিত প্রতিটি ঘরে।
রাজাখালী ইউনিয়নের মাতবর পাড়া গ্রামের উপকারভোগী জেবর মুল্লুক বলেন, বারবার বলার পরেও দূর্বল কাঠামোর উপর আমার ঘরটি তুলেছে ঠিকাদার। এক ইটের একফুট গাথুনি দিয়ে আমার ঘরটি নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ঘরটি ঝড়োবাতাসে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এছাড়া নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে খুবই নিম্নমানের। এসব বিষয় সংশ্লিষ্টদের জানানোর পরেও আমি কোন সুরাহা পাইনি।

পেকুয়া সদর ইউনিয়নের চৈরভাঙ্গা এলাকার উপকারভোগী খালেদা বেগম বলেন, টিন ফিটিংসে পেরেক লাগানোর সময় ওয়াটার প্রুফ ব্যবহার না করায় সদ্য নির্মিত ঘরে বৃষ্টি ও কুয়াশা ঢুকছে। এছাড়া নিম্নমানের ইট দিয়ে ঘরটি নির্মাণ করায় এর স্থায়ীত্ব নিয়ে সবাই প্রশ্ন তুলছে।
অনিয়ম দুর্নীতির এসব অভিযোগ অস্বীকার করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি জাহেদুল ইসলাম জানান, এসব ঘর সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী নির্মাণ করা হচ্ছে। অনিয়ম দূর্নীতির প্রশ্নই উঠে না।

পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সৌভ্রাত দাশ সরকারিভাবে গৃহহীনদের ঘর নির্মাণে কোন অনিয়ম হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।