প্রচন্ড গরম। এই গরমে খুব প্রয়োজন ছাড়া লোকজন তেমন একটা বাহির হতে চায়না। কিন্তু জীবিকার তাগিদে ঠিকই প্রতিদিন ঘাম ঝরাতে হচ্চে শ্রমজীবি লোকজনকে। তাদের রিক্সা’র চাকা না ঘুরলে বন্ধ হয়ে যায় সংসারের চাকা। মাঠিতে কোদালের কুপ না পড়লে খাবার জুটেনা স্ত্রী-সন্তানের। তাই এই প্রচন্ড গরমের মাঝেও ঘাম ঝরিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করছে শ্রমজীবি লোকজন। আর এই একমাত্র উর্পাযনের মানুষটি যদি অসুস্থ্য হয়ে অক্ষম হয়ে পড়ে তাহলে খাবার বন্ধ হয়ে যায় পরিবারের সদস্যদের। তাই তাকে থাকতে হয় সুস্থ্য।
রিক্সা চালক লোকমান মিয়া জনান, এই খাঁ খাঁ রোদের মধ্যে এক মুহুত্বের জন্য’ও ঘর থেকে বের হতে মন চায়না। কিন্তু একদিন রিক্সা না চালালে ঘরের সবাইকে না খেয়ে থাকতে হবে। ক’দিন আগে ডায়রিয়া হওয়ার ৩ দিন পর্যন্ত রিক্সা চালাতে পারেনি। আর এদিকে ঘরের অবস্থা হয়েছিল খুবই খারাপ।
শুধু লোকমান মিয়া নয় এই চিত্র শ্রমজীবি বেশিরভাগ মানুষের। জীবন সংসার চালাতে তাদেরকে অনেকটা বাধ্য হয়ে এই রোদের মধ্যে ঘাম ঝরিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হচ্ছে। তাই এসব লোকজনকে সুস্থ্য থাকতে প্রয়োজন বাড়তি যতœ। এমনটাই বলছেন চিকিৎসকরা।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের সাথে কথা হয়েছে। তারা পরার্মশ দিয়েছেন, এই গরমে শরীরে পানি শূণ্যতা দেখা দেয়। তাই প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে। শরীর থেকে সরে যাওয়া লবনের ঘাটতি পূরনের জন্য খেতে হবে খাবার স্যালাইন। এছাড়া খাওয়া যেতে পারে লেবুর সরবত। সাবধান থাকতে হবে রাস্তুার আজে-বাজে সরবত যেন না খায়।
গরমে আটসাট কাপড় বাদ দিয়ে পড়তে হবে আরাম দায়ক কাপড়। পড়তে হবে সুতির ঢিলেঢালা জামা। কারন পাতলা সুতি কাপড় এর ভেতর দিয়ে বায়ু চলাচল করতে পারে। কাপড়ের রং হতে হবে হালকা।
ব্যবহার করতে হবে ছাতা অথবা ক্যাপ। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা পেতে ছাতা খুবই প্রয়োজন। ছাতা না থাকতে হালকা রং’এর ক্যাপ পড়া উচিত।
শরীর রাখতে হবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। কারন গরমে শরীর পরিষ্কার না রাখলে ঘামাচি’র যন্ত্রনায় পড়তে হয়। কারন অপরিষ্কারের কারনে শরীরের লোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায়। আর পানি আর লবন বের হতে না পেরে শরীরের উপরের স্তরের ত্বকে ছোট ঘামাচি তৈরী হয়। তাই সবসময় শরীর পরিষ্কার রাখা উচিত।
গরমে প্রচন্ড ঘেমে যাওয়ার সাথে সাথে গোসল করা যাবেনা। তাতে ঠান্ড লাগতে পারে। গোসল করার আগে ঘর্মাক্ত শরীর শুকাতে দিতে হবে। আর ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে হবে। তবে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি ব্যবহার করা যাবেনা।
গরমে খাবারের ক্ষেতে থাকতে হবে বাড়তি সচেতনতা। গরমে বাসি খাবার খাওয়া যাবেনা। এতে ডায়রিয়া, পেট ব্যাথা, বমি কিংবা ক্ষুধা মন্দা হতে পারে। এই গরমে পান্তা ভাত খুব উপকারী। শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য পান্তা ভাত খুবই উপকারী।
এই গরমে সবচেয়ে যেটি বেশি দরকার সেটি হল বিশ্রাম। এক নাগাড়ে কাজ না করে বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে কাজ করতে হবে। এক নাগাড়ে কাজ শরীর ও মনের উপর চাপ ফেলে।
ছাড়তে হবে ধূমপান। কারন ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আর ধূমপান করলে দম পাওয়া যায়না। তাই অবশ্যই ধূমপান ছাড়তে হবে।
এছাড়া চেষ্টা করতে হবে ছায়ায় থেকে কাজ করতে। আর সম্ভব হলে প্রচন্ড রোদে যত সম্ভব ঘর থেকে বের না হওয়া উচিত।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।