উখিয়ার বাসিন্দা বর্তমানে কানাড়ায় অবস্থানরত দিদারুল আলমের দীর্ঘদিনের ভোগ দখলীয় ও স্বত্ত্বীয় জায়গা দখলে নিতে সাজানো চাঁদাবাজি মামলার অভিযোগ ওঠেছে। মামলায় খোদ উখিয়া থানার ওসি আবুল খায়ের ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবুল কালামের যোগসাজস রয়েছে বলে জানানো হয়। এ বিষয়ে সোমবার ৩ এপ্রিল বিকালে কক্সবাজারে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী প্রবাসীর নিকটাত্মীয় আবছার কবির। তিনি বলেন, উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের রুমখাঁপালং গ্রামের মৃত হাজী আব্দুর রহিমের পুত্র কানাড়া প্রবাসী দিদারুল আলম গত ২৯/০৬/২০১০ ইংরেজী স্থানীয় বাসিন্দা আজিজুর রহমানের কাছ থেকে ১৮১৫ নং রেজি: কবলামূলে ৫৪ শতক জমি ক্রয় করেন। যা পরবর্তীতে ১৬০১ নং বি.এস খতিয়ান সৃজন হয়। দীর্ঘ ২৮ বছর উক্ত জমি তার ভোগ দখলে রয়েছে।
আবছার কবির আরো বলেন, একই এলাকার মৃত জবর মুল্লুকের পুত্র আজিজুল হক, নজির আহমদ ও মাহমুদুল হক, সন্ত্রাসী লাঠিয়ালবাহিনী গঠন করে বেশ কয়েক মাস ধরে প্রবাসী দিদারুল আলমের ভোগ দখলীয় জায়গা জবরদখলের পাঁয়তারা চালায়। এ বিষয়ে গত ০১/১২/২০১৬ ইং উখিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়। একই ব্যাপারে পুলিশ সুপারকে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। এ অভিযোগটি আমলে নিয়ে সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল মালেক মিয়াকে নির্দেশ দেন। গত ৮/১২/২০১৬ ইং তারিখে তদন্ত প্রতিবেদনে বিরোধীয় জায়গাটি দিদারুল আলমের দখলে আছে জানিয়ে প্রতিবেদন দেয়া হয়। যার স্মারক নং- ৪৮৯৭। একইভাবে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মামলায় (নং-৬৪/২০১৭) একই প্রতিবেদন দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)। এরপরও উক্ত জায়গা দখলে নিতে চিহ্নিত চক্রটি স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা (নং-সি.আর-৩৭/১৭) দায়ের করেন।
দুঃখের বিষয় হলো- মামলায় শুধু আমাকে আসামী করা হয়নি; আমার বৃদ্ধ পিতা, ছোট ভাই, ফুফাতে ভাই, খালতো ভাই ও ভাতিজাসহ ১২ জনকে আসামী বানানো হয়। আমার প্রশ্ন, পুরো পরিবার কিভাবে চাঁদাবাজি করতে পারে? শুধুমাত্র আমার ভগ্নিপতি প্রবাসী দিদারুল আলমের ভোগ দখলীয় জমি আত্মসাৎ করার হীন প্রচেষ্ঠা ব্যর্থ হয়ে নতুন কৌশল হিসেবে আজিজুল হক বাদী হয়ে চাঁদাবাজি মামলাটি করেন। সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যাবে, আসল রহস্য কি?
আবছার কবির সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে নিজ মোবাইলে ধারণকৃত ২ মিনিট ৫৬ সেকেন্ডের একটি অডিও শুনিয়ে বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবুল কালামের ব্যবহৃত মোবাইল ০১৮১১০১৮৮৪৮ নম্বরে যোগাযোগ করলে তিনি আমাকে জানান, ‘মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা হলেও করার কিছুই ছিলনা। ওসি সাহেবের নির্দেশ ও উপরিমহলের চাপে পড়ে চাঁদাবাজির ধারায় তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করতে বাধ্য হই।’ তদন্ত কর্মকর্তা নিজ মুখে স্বীকার করেছেন- ঘটনাটি মিথ্যা জেনেও চাপের মুখে আমাদের বিপক্ষে প্রতিবেদন দিয়েছেন। প্রশাসন মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের ঠিকানা। সেখানে এসব ঘটনা প্রশাসনযন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। এরকম ঘটনা পুলিশের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করবে। মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দায়ের করা মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদনের পাশাপাশি এ বিষয়ে বিভাগীয় তদন্তের দাবী জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী প্রবাসী দিদারুল আলমের পরিবারের স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।