৩০ এপ্রিল, ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ, ১৪৩২ | ১ জিলকদ, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. আবদুল হাই এর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী ২৯ এপ্রিল   ●  লুৎফুর রহমান কাজলের মা সাবেক এমপি সালেহা খানমের ইন্তেকাল করেছেন   ●  টেকনাফে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতদলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১   ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার

এলো খুশির ঈদ

“ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ…”। রমজানের শেষে আকাশে শাওয়ালের চাঁদ দেখা গেলেই এই গানের সুরে আনন্দে দুলে উঠতো প্রত্যেক রোজাদারের মন। এবারও এক মাস সিয়াম সাধনা শেষে শাওয়ালের চাঁদ উঠেছে আকাশে। আগামীকাল সোমবার (২৫ মে) উদযাপিত হতে যাচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। কিন্তু রোজাদারদের মনে যেন সেই আনন্দ নেই। করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি ঈদের আনন্দেও ফেলেছে মন খারাপের ছায়া।

আগে গোটা রমজানে গ্রাম-গঞ্জের মার্কেটগুলোয় থাকতো ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটার তুমুল ব্যস্ততা। ঈদের পূর্বের কদিনে বাস, রেল ও লঞ্চ টার্মিনালে থাকতো নাড়ির টানে বাড়িমুখো মানুষের ভিড়। ঈদের আগের দিন বা চাঁদরাতে সেই ভিড়ে নাকানি-চুবানি খেলেও মানুষের চোখে-মুখে থাকতো প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারার অগ্রিম আনন্দ। পাড়ায়-মহল্লায় শহরফেরত মানুষের কুশল বিনিময়ে থাকতো মুখরতা। থাকতো মসজিদ-ময়দানে ঈদের জামাত আয়োজনের প্রস্তুতি-ব্যস্ততা।

কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের প্রকোপে সেই কেনাকাটাও হয়নি। প্রায় জনশূন্য থেকেছে বাস, রেল ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোও। এর মধ্যে সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিছুটা কেনাকাটার জন্য মার্কেট-দোকানপাট খোলার অনুমতি দিলেও সংক্রমিত হওয়ার শঙ্কায় এড়িয়ে চলেছে মানুষ। গণপরিবহন বন্ধের মধ্যে সরকার ঈদ করতে ব্যক্তিগত গাড়িতে বাড়ি যাওয়ার সুযোগ দেয়ায় কিছু মানুষ গ্রামে গেলেও বেশিরভাগই থেকে গেছেন শহরে। ফলে এবার ঈদে নেই নতুন জামা কেনার সেই উচ্ছ্বাস, নেই প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ঈদ কাটানোর সেই আনন্দ।

তাছাড়া জাতীয় ঈদগাহ, শোলাকিয়া ময়দানসহ অনেক বড় বড় ঈদগাহে এবার ঈদের জামাতের আয়োজন নেই। যেসব ঈদ জামাত আয়োজন হচ্ছে, সেখানে মুসল্লিদের তিন ফুট দূরত্বে দাঁড়িয়ে অংশ নেয়ার কথা বলা হয়েছে। মানা করা হয়েছে কোলাকুলি ও করমর্দন করতে। বারণ করা হয়েছে বাইরের খাবার-দাবার গ্রহণেও। এমনকি প্রতি ঈদে ঘরে ঘরে মানুষ ফিরনি-সেমাইয়ের দাওয়াত দেয়া-নেয়া করলেও এবার হচ্ছে না সেসব আয়োজনও।

মন ভার হওয়ার এমন নানা কারণ থাকলেও সবাই আশাবাদী এই দুর্দিন কেটে যাবে বলে। রোববার (২৪ মে) সন্ধ্যায় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘ঝড়-ঝঞ্ঝা-মহামারি আসবে। সেগুলো মোকাবিলা করেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজন জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা। সঙ্কট যত গভীরই হোক জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে তা উতরানো কোনো কঠিন কাজ নয়।’

তিনি জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদযাপনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এ বছর আমরা সশরীরে পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হতে বা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে না পারলেও টেলিফোন বা ভার্চুয়াল মাধ্যমে আত্মীয়-স্বজনের খোঁজখবর নেব। এভাবেই সবার সঙ্গে একযোগে আল্লাহ প্রদত্ত এই মহান নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করব।’

করোনার প্রকোপে ভয়-আতঙ্ক থাকলেও দেশের মানুষ রোজা এবং রোজার আগ থেকেই পাশের দুস্থ-অসহায় মানুষটির দিকে চোখ রেখেছেন। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ঈদেও সামর্থবানরা একইভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাশের অসহায় মানুষটির সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করবেন বলে প্রত্যাশা সবার। যেমনটি বলে গেছেন জাতীয় কবি, “যারা জীবন ভরে রাখছে রোজা, নিত্য উপবাসী/সেই গরিব ইয়াতিম মিসকিনে দে যা কিছু মুফিদ…’।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।