১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ৩ আশ্বিন, ১৪৩২ | ২৫ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ   ●  কক্সবাজারে ভূমি নিবন্ধনে আকাশচুম্বী বর্ধিত উৎসেকর বাতিল, প্রসংশায় পঞ্চমুখ সালাহউদ্দিন আহমদ   ●  হলদিয়ায় ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে উধাও ৩ যুবক   ●  দুর্ধর্ষ প্রতারক দিদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি   ●  ইয়াবাসহ পুলিশে সোপর্দ, চোর সন্দেহে চালান, এলাকায় ক্ষোভ   ●  শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান   ●  “প্লাস্টিক উৎপাদন কমানো না গেলে এর ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব নয়”   ●  নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কক্সবাজারে তাঁতীদলের খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন   ●  বৃহত্তর হলদিয়া পালং বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল আজিজ মেম্বারের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ   ●  মরিচ্যা পালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা

এক লাখ রোহিঙ্গাকে খাওয়াচ্ছে জেলা প্রশাসন, বাকিরা ত্রাণের জন্য ‘যুদ্ধ’ করছে

কক্সবাজার সময় ডেস্কঃ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার মধ্যে মাত্র এক লাখের প্রতিদিনের খাবারের ব্যবস্থা করছে জেলা প্রশাসন। বাকিদের খাবারের জন্য নির্ভর করতে হচ্ছে বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন সংগঠন-ব্যক্তির ত্রাণ সাহায্যের ওপর। মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের তথ্য বলছে, সরকারি ত্রাণের চাল-ডাল কিছু সংস্থা থেকে পেলেও রান্নার জায়গা ও হাঁড়ি-চুলার অভাবে নিয়মিত রান্না করতে পারছে না কোনও পরিবার।

চলতি বছরের ২৪ আগস্ট থেকে এই পর্যন্ত ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে একলাখ মানুষকে প্রতিদিন খাবারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে সরকার।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাহিদুর রহমান (শিক্ষা ও আইসিটি) বলেন, ‘আমরা একলাখ মানুষের খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। চাল-ডাল এখনও আমাদের কিনতে হচ্ছে না। এগুলো জেলা প্রশাসনে আসা ত্রাণ সহায়তা থেকে চলছে। মশলাজাতীয় দ্রব্য ও তেল কিনতে হচ্ছে। এছাড়া প্রতিদিন বেসরকারিভাবে অন্য যে ত্রাণ আসছে, সেগুলো প্রয়োজন অনুযায়ী বিতরণের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। তবে প্রতিদিন খাবারের পেছনে কত খরচ হচ্ছে, তা এখনও বলা সম্ভব নয়। আজ থেকে উখিয়ার বালুখালী ও কুতুপালং এলাকায় গড়ে ওঠা নতুন শরণার্থী বস্তিতে আটটি লঙ্গরখানা খোলা হয়েছে। রান্না করা খাবার রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।’

এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য প্রতিদিনের খরচের পরিমাণ জানতে চাইলে মাহিদুর রহমান বলেন, ‘এখনও আমরা পণ্য কিনছি না। তাই এর পরিমাণ বলাটা কঠিন। আনুমানিকও বলা যাবে না।’

যারা শুরুর দিকে এসেছে, তারা প্রায় সবাই রান্না করতে শুরু করেছে। এছাড়া টেকনাফে ব্যক্তি, সংগঠন ও রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে স্থানীয়দের পক্ষ থেকেও ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। সেগুলোর বেশিরভাগই মুড়ি-চিড়া জাতীয় শুকনা খাবার। তবে কেউ কেউ রান্নার হাঁড়িপাতিলও দিচ্ছে।

রোহিঙ্গা পালিয়ে আসা ও তাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণের বিষয়ে বলতে গিয়ে আমানুর রহমান বলেন, ‘রোহিঙ্গারা নদী পার হয়ে আসার পর তাদের জন্য পোশাকের পাশাপাশি নগদ টাকা ও খাবার দেওয়া হয়। তাদের প্রথমে শাহপরীর দ্বীপে আনা হয়। এরপর ঠিক করা হয়, কাকে কোন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে খাবার দেওয়া হয়। এরপর বাঁশ ও পলিথিন দেওয়া দিলে তারা নিজেরাই পছন্দমতো জায়গায় ঘর তুলে নিচ্ছে।’

এদিকে মানবাধিকারকর্মী আইন ও শালিস কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান গত ৩০ আগস্ট থেকে টেকনাফে অবস্থান করছেন। তিনি বাংলা বলেন, ‘এক লাখের জন্য যে ব্যবস্থার কথা বলা হচ্ছে, সেটি সম্ভবত আজ থেকে করা হবে। বাকিরা বেসরকারি পর্যায়ের ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল। প্রধানমন্ত্রী যেদিন এসেছেন, সেদিন কিছু মানুষকে চালের বস্তা দেওয়া হয়েছে। পরে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম থেকে নিবন্ধিতদের ২৫ কেজি করে চাল দিতে দেখা গেছে। সরকারের একলাখের বাইরের বাকিরা কী খাচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মানুষের দানে খাচ্ছে। সারা বাংলাদেশ থেকে ট্রাকে-ট্রাকে খাবার আসছে, শুকনা খাবারই বেশি। সেগুলোর ওপরই জীবন যাপন করছে রোহিঙ্গারা।’

নূর খান বলেন, ‘যাদের চাল-ডাল দেওয়া হচ্ছে, তাদের সবার রান্না করার সুযাগ নেই। কয়েকটি পরিবার মিলে একটি হাঁড়ি জোগাড় করে রান্না করা খাবার ভাগ করে নিতে দেখা গেছে। আমার ধারণা, এ দফায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়িয়েছে, যাদের সবার মাথার ওপর পলিথিন দেওয়া যায়নি এখনও।’

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।