১৩ অক্টোবর, ২০২৫ | ২৮ আশ্বিন, ১৪৩২ | ২০ রবিউস সানি, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  রামুতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা রিজনের নেতৃত্বে এক ব্যক্তির দোকান দখলের অভিযোগ, চাঁদাবাজি মামলায় জিটু কারাগারে   ●  গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে ঢুকে হুমকি অভিযোগ ৪ এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে   ●  কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে স্কিলস অ্যান্ড ইনোভেশন কম্পিটিশন অনুষ্ঠিত   ●  আলোচিত ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে লুটপাট, পরে রফাদফা!   ●  দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ   ●  কক্সবাজারে ভূমি নিবন্ধনে আকাশচুম্বী বর্ধিত উৎসেকর বাতিল, প্রসংশায় পঞ্চমুখ সালাহউদ্দিন আহমদ   ●  হলদিয়ায় ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে উধাও ৩ যুবক   ●  দুর্ধর্ষ প্রতারক দিদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি   ●  ইয়াবাসহ পুলিশে সোপর্দ, চোর সন্দেহে চালান, এলাকায় ক্ষোভ   ●  শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান

ঈদগাঁওতে ফসলী জমির টপ সয়েল বিক্রির হিড়িক

কক্সবাজর সদর উপজেলার ৪টি যথাক্রমে জালালাবাদ, ইসলামাবাদ, চৌফলদন্ডি ও ঈদগাও ইউনিয়নের হাজার একর আবাদযোগ্য বিভিন্ন ফসলী জমির টপ সয়েল হিসাবে পরিচিত উপরিভাগের মাটি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিন কোন না কোন স্থানের জমি থেকে মাটি কেটে নেয়ার এ দৃশ্য চোখে পড়ে। ফসলী জমির উপরিভাগের উর্বর মাটিগুলো কেটে নেয়ার জমিগুলো যেমন উর্বরা হারাচ্ছে তেমনি সমতল ভুমিগুলো নিচু হয়ে যাওয়ার পানি প্লাবিত হয়ে থাকবে প্রতিবছর। জমির মালিকদের অসচেতনতা এবং অভাবকে পুঁজি করে একশ্রেণীর দালালচক্র জমির উপরিভাগের মাটি স্বল্প কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এরপর ঐ দালালচক্রটি উচ্চমুল্যে মাটিগুলো ইটভাটাসহ বিভিন্নস্থানে বিক্রি করে দিচ্ছে। এতে করে বিভিন্ন ফসলী জমিগুলো দ্রুত হারিয়ে ফেলছে তার উর্বরা শক্তি। একই সাথে প্রতিবছর জমির উপরিভাগের মাটি তুলে নিয়ে যাওয়ার কারনে জমি নিচু হয়ে যাওয়ায় পানি জমে থাকার কারনেও আবাদযোগ্যতা হারাচ্ছে জমিগুলো।
মৃতিকা প্রকৌশলীদের মতে, জমির মুল উর্বরা শক্তি থাকে জমির উপরিভাগে। উপরিভাগের মাটি তুলে নিয়ে যাওয়ার কারনে জমি যে উর্বরা শক্তি হারায় তা পুরন হতে কমপক্ষে ৮/১০ বছর লাগতে পারে বলেও তাদের ধারনা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে,বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার সাথে সাথে ফসলী জমিগুলো মাটি বিক্রি শুরু করে এক শ্রেণীর মাটি ব্যবসায়ী। ঈদগাঁওতে স্থাপিত ৮/৯ টি ইটভাটার মালিকরা ইট তৈরীর মৌসুম শুরুর সাথে সাথে দালালদের লাগিয়ে দেয় আবাদী জমির মাটি সংগ্রহের কাজে। এ এলাকার আবাদী জমিগুলোর মাটি এটেল জাতের হওয়ায় এ মাটি দিয়ে তৈরী করা ইট শক্ত ও সুন্দর হয়। সে কারনে ইটভাটার মালিকরা উচ্চমূল্যে দালালদের কাছ থেকে মাটি কিনে নিচ্ছে।
কোন জমির মালিক তার জমির মাটি বিক্রি করতে রাজি না হলে তাকে বিভিন্ন হুমকি দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। জমির মালিক এবং কৃষকদের কাছ থেকে দালাল চক্রটি নাম মাত্র মূল্যের মাটি কিনে নিয়ে তা উচ্চ মূল্যে ইট ভাটায় সরবরাহ করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। ইটভাটা ছাড়া ও রাস্তা নির্মাান, ভিটে, পুকুর ভরাটসহ আরো বিভিন্ন কাজে এসব মাটি উচ্চ মূল্যে সরবরাহ করে যাচ্ছ দালালেরা।
স্থানিয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, যেসব জমির উপরিভাগের মাঠি কেটে ফেলা হয়েছে সেসব জমিতে বর্ষা মৌসুমে পানি জমে থাকার কারনে এবং উর্বরা শক্তি হারিয়ে ফেলার সামনের ৬/৭ বছর তার কোন ফসলের আবাদ হয়না।
জমির উপরিভাগের মাটি বিক্রি করে দেয়া এমন এক মালিক জানায়, সে তার ৩ কানি জমির মাটি দালালদের কাছে বিক্রি করে সে ১২হাজার টাকা পেয়েছে। জালালাবাদের কৃষক আব্দু রহমান জানিয়েছে তার পার্শ্ববর্তী সকলের মাটি বিক্রি করে দেওয়ায় তার জমিটা উচু হয়ে যাওয়ায় চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়ে সে তার জমির মাটিও বিক্রি করেছে।
মাটি ব্যবসার সাথে জড়িত উত্তর নাইক্ষ্যংদিয়ার এক ব্যবসায়ি জানিয়েছে, তারা জমির মালিক ও কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্য দিয়ে মাটি কিনি নিয়ে তারপর তা কেটে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে থাকে। জমির মালিক এবং কৃষকরা নিজেদের জমির মাটি তাদের কাছে বিক্রি করে বলে জানায় এ ব্যবসায়ী। তবে তিনি ইট ভাটায় সবচেয়ে বেশি মাটি সরবরাহ করেছে বলে স্বীকার করছে।
এক দিকে যেমন ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে অপর দিকে একাজে ব্যবহৃত ৩০/৪০টি ডাম্পারের চলাচলের কারনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা আতংকে রয়েছে এ ডাম্পারের কারনে গ্রামীন সড়ক নষ্ট ও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
কক্সবাজার সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এনায়েতই রাব্বির সাথে টপ সয়েল কেটে বিক্রি করে দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি জানান,সব ধরনের জমিতে উর্বরা শক্তি থাকে মাটির উপরিভাগের ৬ইঞ্চি থেকে ৯ইঞ্চির মধ্যে। এ অংশের মাটি কেটে নেওয়ায় সব উর্বরা শক্তি চলে যায়। যা পূরন হতে সময় লাগে ৭/৮ বছর। আবাধি জমির মাটি কাটার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোন আইন না থায় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। এ অবস্থায় জমির মালিক ও কৃষকরা সচেতন না হলে এ সমস্যা থেকে পরিত্রানের কোন পথ নেই বলে তিনি মত প্রকাশ করেন এবং আগামি ২৯ ডিসেম্বর উপজেলা আইন শৃংখলা সভায় এ বিষয়ে বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।