এক লাখ ইয়াবাসহ ঢাকায় সিটিটিসির হাতে আটককৃত কক্সবাজার জেলা যবুদলের সহ-সভাপতি ইয়াবা সিন্ডিকেটের সেকেন্ড ইন কমান্ড নেজাম উদ্দীন রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে বলে জানা গেছে। মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তার ৫ দিনের জিজ্ঞাসাবাদে নেজাম তার ইয়াবা সিন্ডিকেটের প্রায় ১৮ জনের নাম প্রকাশ করেছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রকাশ। পাশাপাশি নেজামের সাথে রিমান্ডে থাকা শীপক মল্লিকও টেকনাফ, কক্সবাজার শহর, সদরসহ চট্রগ্রাম এবং ঢাকার সিন্ডিকেট সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করেছে। তবে নিজেদের পাপ মোচতে যে যার মত সাধু সাজার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। পাশাপাশি টেকনাফ সাবরাংয়ের ইয়াবা গডফাদার সিন্ডিকেট প্রধান ইউনুছের প্রধান ইয়াবা সরবরাহকারি কুলালপাড়ার সোহেলকে পুলিশের ধরপাকড়া থেকে বাচাঁতে একটি তদবিরবাজ মহল ও ইয়াবা ব্যবসায়ির আশ্রয় প্রশয়দাতা জৈনক জনপ্রতিনিধি কোমর বেধে মাঠে নেমেছে। এমনকি পুলিশের গ্রেফতার অভিযান থেকে বাচাঁতে রীতিমত তোড়জুট শুরু করেছে। তবে যারাই পুলিশের কাছে গিয়ে তদবির করছে তাদের মধ্যেও অধিকাংশই তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ি বলে অভিযোগ ওঠেছে।
জানা যায়, গত ১০ মার্চ রাতে ঢাকার গেন্ডারিয়া থেকে এক লাখ ইয়াবাসহ কক্সবাজার জেলা য্বুদলের সহ-সভাপতি ইয়াবা সিন্ডিকেটের সেকেন্ড ইন কমান্ড নেজাম উদ্দীন ও শীপক মল্লিক বুরংকে আটক করে ঢাকার সিটিটিসি’র স্পেশাল এ্যাকশন গ্রুপ। পর পরদিন শনিবার সকালে মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তা সিটিটিসির এসআই শাহীনুল ইসলাম ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে দুই জনকে আদালতে সোর্পদ করেন। পরে আদালত রিমান্ড শুনানী শেষে দুই জনকে ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওই দিন সন্ধ্যা থেকে তাদের রিমান্ডে নেয়া হয়। এদিকে পুলিশ রিমান্ডের ৫ দিনে নেজাম তাদের ইয়াবা পাচারের অনেক চাδল্যকর তথ্য দিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে নেজাম আটক হওয়ার পর থেকে সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যরা নিজেদেরকে সাধু সাজানোর জন্য একেক কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি অনেকেই আবার আত্মগোপনেও চলে গেছে। তবে যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে ইয়াবা ব্যবসার গুরুতর অভিযোগ তারা আত্মীয় স্বজন দিয়ে গ্রেফতার এড়াতে পুলিশের ধারে ধারে গুরছে। অভিযোগ ওঠেছে পুলিশের এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তারাও এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নগদে মোটা অংকের বাণিজ্য সেরে নিচ্ছে। সম্প্রতি টেকনাফ থানায় ইউনুছ ও নেজাম সিন্ডিকেটের প্রধান ইয়াবা সরবরাহকারি কুলালপাড়ার এক জনপ্রতিনিধির ভাই সোহেলকে পুলিশি গ্রেফতার থেকে বাচাঁতে মোটা অংকের লেনদেন হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন জানান, তালিকায় থাকুক বা তালিকার বাইরে থাকুক মাদকের সাথে জড়িত থাকলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন মাদক ব্যবসায়ি পুলিশের নাগালের বাইরে থাকতে পারবেনা।
এদিকে স্থানীয় লোকজনের দাবী, আইনশৃংখলা বাহিনী যদি ইচ্ছা করে তাহলে, সিন্ডিকেট প্রধান ইয়াবা গডফাদার টেকনাফ সাবরাংয়ের সাবেক যুবদল নেতা ইউনুচ সিকদার, টেকনাফ উপজেলার পৌর শহরের কুলাল পাড়ার সোহেল, শাহীন ও নুরুল আবছার, জালিয়া পাড়ার মোঃ ইসহাক, চট্রগ্রামের সাহেদ, ঢাকার আকতার ও রানাসহ পুরো সিন্ডিকেটকে আটক সম্ভব। পাশাপাশি যদি ইয়াবা সরবরাহকারি ও ইয়াবা পাচারের আশ্রয়-প্রশয়দাতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ি কুলাল পাড়ার জৈনক জনপ্রতিনিধি ও নামধারি সংবাদকর্মীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাহলে এই সিন্ডিকেটের মূল রহস্য উৎঘাটন করা সম্ভব হবে। এছাড়াও তাকে জিজ্ঞাসাবাদে টেকনাফের অনেক ইয়াবা ব্যবসার চাδল্যকর তথ্যও বেরিয়ে আসবে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহীনুল ইসলাম জানান, এক লাখ ইয়াবাসহ আটককৃত যুবদল নেতা নেজাম ও তার সিন্ডিকেটে যারা আছে তারা সকলেই পেশাদার ইয়াবা ব্যবসায়ী। যা নেজাম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। মূলত ইয়াবা ব্যবসাকে নির্বঘœ করতেই নেজাম ছদ্মবেশে ভালো মানুষ সেজে সকলের কাছে সাধু হয়ে থাকতেন। তবে নেজামের স্বীকারোক্তি মতে ইয়াবা ব্যবসার সাথে যারা জড়িত রয়েছে তারা বাংলাদেশের যেই প্রান্তে থাকুক না কেন অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।