স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বুঝে নিয়ে নতুন মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ‘অনুমতি’ নিতেই তার বাসায় গিয়েছিলেন তিনি।
রোববার দুপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “উনি (সৈয়দ আশরাফ) সমষ্টিগতভাবে আমাদের দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন। উনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি।
“উনি আমার দলের নেতা, দলের সাধারণ সম্পাদক। সাধারণ সম্পাদকের অনুমতি নেওয়ার জন্য গিয়েছিলাম; বলেছি জয়েন (মন্ত্রণালয়ে) করব কি না?”
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে সভানেত্রীর পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদধারী সৈয়দ আশরাফকে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকারের মন্ত্রীর দপ্তর থেকে সরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে, যিনি শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুলের শ্বশুর।
মন্ত্রণালয় ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বৈঠকে অনুপস্থিতি নিয়ে দলের ভেতরেই আশরাফের সমালোচনা ছিল। তবে তাকে আকস্মিকভাবে দপ্তরছাড়া করার বিষয়টি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের আলোড়ন তুলেছে, যা নিয়ে আলোচনা চলতে গত তিন দিন ধরেই।
এ বিষয়ে একাত্তরের প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে আশরাফ শুধু বলেছেন, তার বাবা বঙ্গবন্ধুর জন্য জীবন দিয়েছেন। তিনি সেই রক্তের উত্তরসূরি।
দপ্তর হারানো আশরাফের বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাতের পরই রোববার সচিবালয়ে এসে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বুঝে নেন খন্দকার মোশাররফ।
১৫ মিনিটের ওই সাক্ষাতের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নতুন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার আগে সাবেক মন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করতে এসেছিলেন তিনি।
আর সৈয়দ আশরাফ বলেন, “এক সরকারের সদস্য, এক সংসদের এমপি… আমাদের কোঅপারেশন তো অবশ্যই থাকবে।”
সাক্ষাৎ শেষ করেই সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর দপ্তরে যান খন্দকার মোশাররফ। আগের দপ্তর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ও তিনি দেখভাল করবেন।
বেলা সাড়ে ১১টায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ফুল দিয়ে নতুন মন্ত্রীকে বরণ করে নেন। নিজের দপ্তরের দায়িত্ব বুঝে নিয়ে সেখানে কয়েক মিনিট কাটিয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন মোশাররফ।
পরে তিনি সাংবাদিকেদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আমার মত লোককে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন, এতে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। সহযোগিতা চাই, যেন গুরুদায়িত্ব পালন করতে পারি।”
সৈয়দ আশরাফের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকে ‘দলীয় ব্যাপার’ উল্লেখ করে সাংবাদিকদের তা ‘ওই লেভেলেই’ রাখার অনুরোধ করেন তিনি।
মোশাররফ বলেন, বাংলাদেশের ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ লোক পল্লীতে বাস করে। কাজেই পল্লীর উন্নয়ন ছাড়া রূপকল্প অর্জন করা যাবে না।
২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয় এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্য প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, “এসব পল্লীর উন্নয়ন ছাড়া সম্ভব নয়। আর পল্লীর উন্নয়ন করতে সমবায় ছাড়া সম্ভব নয়। জাতীয় উন্নয়নে এই মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা অপরিসীম।”
দায়িত্ব পাওয়ার পরদিন শুক্রবার নিজের জেলা ফরিদপুরে এক অনুষ্ঠানে তিনি দাবি করেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে তিনি ‘সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত’ করেছেন।
এবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে দুর্নীতি তাড়াবেন বলেও ঘোষণা দেন মোশাররফ, যিনি এ মন্ত্রণালয়ের অধীন রুরাল ওয়ার্কস প্রোগ্রামের প্রথম প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে এলজিইডি বিভাগ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছিলেন।
রোববার এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি বলিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি আছে। সাংবাদিকরা আমার কাছে জানতে চেয়েছেন দুর্নীতি থাকলে কী করবেন? আমি বলেছি দুর্নীতি থাকলে তা মুক্ত করব।”
নতুন মন্ত্রী দপ্তরে পৌঁছানোর আগে বেলা পৌনে ১১টার দিকে মন্ত্রীর কক্ষের দরজা মেরামত করতে দেখা যায় কয়েকজন মিস্ত্রিকে।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সৈয়দ আশরাফ হাতেগোণা দু’এক দিন সচিবালয়ে এ দপ্তরে অফিস করেছেন। কক্ষের দরজা ঠিকভাবে খুলত না। এ কারণে মেরামত করতে হয়েছে।
২০২১ ফেব্রুয়ারি ০৮ ০৮:৩১:১১
২০২০ জুলাই ২৮ ০৬:০২:৪৫
২০২০ জুন ২৭ ১১:১৮:৫৪
২০২০ জুন ২২ ১২:৫৩:২৯
২০২০ মে ২৯ ০৫:৫৩:৩৫
২০২০ মে ০৯ ০১:০৫:২৩
২০২০ মে ০৭ ০৫:০৩:৩০
২০২০ মে ০৫ ১১:৫৩:৩৯
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।