২৫ অক্টোবর, ২০২৫ | ৯ কার্তিক, ১৪৩২ | ২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীদের হুমকিতে নিরাপত্তাহীন পরিবার, চার সন্তান স্কুলে যাওয়া বন্ধ   ●  রামুতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা রিজনের নেতৃত্বে এক ব্যক্তির দোকান দখলের অভিযোগ, চাঁদাবাজি মামলায় জিটু কারাগারে   ●  গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে ঢুকে হুমকি অভিযোগ ৪ এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে   ●  কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে স্কিলস অ্যান্ড ইনোভেশন কম্পিটিশন অনুষ্ঠিত   ●  আলোচিত ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে লুটপাট, পরে রফাদফা!   ●  দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ   ●  কক্সবাজারে ভূমি নিবন্ধনে আকাশচুম্বী বর্ধিত উৎসেকর বাতিল, প্রসংশায় পঞ্চমুখ সালাহউদ্দিন আহমদ   ●  হলদিয়ায় ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে উধাও ৩ যুবক   ●  দুর্ধর্ষ প্রতারক দিদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি   ●  ইয়াবাসহ পুলিশে সোপর্দ, চোর সন্দেহে চালান, এলাকায় ক্ষোভ

‘‌ঈদ মোবারক, কক্সবাজারে স্বাগতম’

বর্ষার এই সময়টায় সাগর খুব উত্তাল থাকে। বহু দূর থেকেও শোনা যায় বিশাল সাগরের গর্জন। এখন কেউ কক্সবাজারে পা রাখলে প্রথমেই তাঁর কানে আসবে সেই গর্জনের শব্দ। এরপর সাগরের মোহনীয় রূপ দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যাবে তাঁর। একের পর এক ঢেউ যেন হাতছানি দিয়ে ডেকে চলেছে পর্যটকদের। ঈদের ছুটিতে লাখো পর্যটকের পদচারণে সরগরম হয়ে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে কক্সবাজার।

দেশ-বিদেশের পর্যটকদের স্বাগত জানানোর জন্য কক্সবাজার পৌরসভা কর্তৃপক্ষ শহরের বিভিন্ন সড়কে নির্মাণ করছে অসংখ্য তোরণ। এসব তোরণে লেখা ‘‌ঈদ মোবারক, কক্সবাজারে স্বাগতম’।

১৩ জুন পাহাড়ধসের কারণে এবার অনেক পর্যটক তিন পার্বত্য জেলায় যাচ্ছেন না। যে কারণে গত বছরের চেয়ে এবার কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড় বেশি হবে বলে মনে করছেন সি-গাল হোটেলের প্রধান নির্বাহী ইমরুল সিদ্দিকী।

সি-গাল, ওশান প্যারাডাইস, লংবিচ, সি প্যালেস, সায়মন বিচ রিসোর্ট, রয়েল টিউলিপ হোটেল অ্যান্ড স্পা-কক্সবাজারের নামীদামি এই হোটেলগুলোর ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ কক্ষ ইতিমধ্যে বুকিং হয়ে গেছে বলে এসব হোটেল পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

কক্সবাজারের প্যাঁচার দ্বীপের ‘মারমেড ইকো বিচ রিসোর্ট’ দেশি-বিদেশি পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরের এই পর্যটনকেন্দ্রে রিসোর্ট রয়েছে ৬০টি। একসঙ্গে থাকতে পারেন ১২০ জন অতিথি। ঈদের পরবর্তী তিন দিনের জন্য তাদের ৯০ শতাংশ রিসোর্টই ভাড়া হয়ে গেছে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশই বিদেশি অতিথি বলে জানান রিসোর্টের মহাব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমান।

সৈকতের লাবণী পয়েন্টের হোটেল ‘দ্য কক্স টুডে’তেও ঈদের পর থেকে টানা চার দিন ৯০ শতাংশের বেশি কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হোটেলটিতে কক্ষ আছে ২৭৬টি। একসঙ্গে থাকার ব্যবস্থা আছে ৬৫০ জনের।

ঈদের দিন থেকে পরের এক সপ্তাহে কক্সবাজারে ৩৫০ কোটি টাকার ব্যবসা হবে বলে হোটেল-রেস্তোরাঁসহ পর্যটন-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা আশা করছেন।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র ও ‘দ্য কক্স টুডে’ হোটেলের পরিচালক (অপারেশন) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ২৭ থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত ঈদের তিন দিন পর্যন্ত শহরের প্রায় সব হোটেল বুকিং হয়ে গেছে। তাঁদের আশা, ঈদের দিন থেকে পরের সাত দিন পর্যন্ত প্রায় সাত লাখ পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে আসবেন। গত বছর ঈদের টানা নয় দিনের ছুটিতে কক্সবাজার ভ্রমণে আসেন অন্তত পাঁচ লাখ পর্যটক।

মাঝারি মানের হোটেলের কক্ষও বুকিং হচ্ছে। কক্সবাজার কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি কাজী রাসেল আহমদ বলেন, সমিতির আওতাভুক্ত ১১৭টি কটেজের ৯৫ শতাংশ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। কম দামে কক্ষ পাওয়া যায় বলে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন কটেজে ওঠেন বেশি।

গতকাল শনিবার দুপুরে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে নেমে দেখা গেছে, শতাধিক পর্যটক সমুদ্রে নেমে গোসল করছেন। সৈকতে পর্যটকদের বসার জন্য স্থাপন করা হচ্ছে বার্জার পেইন্টের ‘চেয়ার-ছাতা’। আগে এই ছাতা-চেয়ার ছিল বেসরকারি মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবির অধীনে।

পর্যটক হয়রানি রোধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত ঈদের পর থেকে কাজ করবেন বলে জানান কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন। তিনি বলেন, আবাসিক হোটেল ও রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত টাকা ও ভেজাল খাবার পরিবেশন করলে ব্যবস্থা নেবেন এ আদালত।

পর্যটকদের খাওয়াদাওয়ার জন্য শহরে প্রায় ২০০ রেস্তোরাঁ ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করার কাজ চলছে। শুঁটকিসহ রকমারি পণ্যের দোকানিরা পর্যটক আকর্ষণে নতুন করে দোকান সাজাচ্ছেন। যানজট এড়াতে শহরের ঢোকার সড়কগুলোতে বেড়েছে ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতা।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, ঈদের ছুটিতে শহরের ৪৫০টি হোটেল মোটেল গেস্টহাউস কটেজসহ পর্যটনসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা হবে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার।

পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী বলেন, ঈদে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রস্তুত আছে। ছয়টি অত্যাধুনিক মোটরযানে টহলে থাকবে ছয়টি দল। সৈকতের বালুচরে টহলে থাকবেন ১২১ জন ট্যুরিস্ট পুলিশ। মেরিনড্রাইভ সড়কে পর্যটকদের নিরাপত্তায় রাখা হবে ট্যুরিস্ট পুলিশের বিশেষ টহল।

যেসব হোটেল-রিসোর্টে বিদেশিরা থাকবেন, সেখানে পুলিশের বাড়তি নজরদারি থাকবে বলে জানান কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়া। তিনি বলেন, শহরে চুরি-ছিনতাই বন্ধসহ পর্যটকদের নিরাপত্তায় পুলিশের একাধিক দল কাজ করবে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।