২১ অক্টোবর, ২০২৫ | ৫ কার্তিক, ১৪৩২ | ২৮ রবিউস সানি, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীদের হুমকিতে নিরাপত্তাহীন পরিবার, চার সন্তান স্কুলে যাওয়া বন্ধ   ●  রামুতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা রিজনের নেতৃত্বে এক ব্যক্তির দোকান দখলের অভিযোগ, চাঁদাবাজি মামলায় জিটু কারাগারে   ●  গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে ঢুকে হুমকি অভিযোগ ৪ এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে   ●  কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে স্কিলস অ্যান্ড ইনোভেশন কম্পিটিশন অনুষ্ঠিত   ●  আলোচিত ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে লুটপাট, পরে রফাদফা!   ●  দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ   ●  কক্সবাজারে ভূমি নিবন্ধনে আকাশচুম্বী বর্ধিত উৎসেকর বাতিল, প্রসংশায় পঞ্চমুখ সালাহউদ্দিন আহমদ   ●  হলদিয়ায় ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে উধাও ৩ যুবক   ●  দুর্ধর্ষ প্রতারক দিদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি   ●  ইয়াবাসহ পুলিশে সোপর্দ, চোর সন্দেহে চালান, এলাকায় ক্ষোভ

১০ রোহিঙ্গা হত্যাকারী সৈন্য-পুলিশের বিচার করবে মিয়ানমার

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ রাখাইন রাজ্যে আটক ১০ জন রোহিঙ্গা মুসলমানকে হত্যাকারী সৈন্য ও পুলিশের বিচার করবে মিয়ানমার। মিয়ানমান সরকারের একজন মুখপাত্র একথা জানান।

তবে তার দাবি, ১০ মুসলমানের হত্যার ওপর শুক্রবার প্রকাশিত রয়টার্সের প্রতিবেদনে প্রভাবিত হয়ে সরকার এ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

জাপানের নিক্কেই এশিয়ান রিভিয়্যু ও তুরস্কের টিআরটি ওয়ার্ল্ড নামের দুটি পত্রিকা রয়টার্সের দেওয়া খবরের বরাত দিয়ে রোববার এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

মিয়ানমার সরকারের দূত জ হতাই (Zaw Htay) দাবি করেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মিয়ানমার সরকার জড়িত নয়। বরং রাখাইন রাজ্যে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময় আটক করা ১০ জন মুসলমানকে সৈন্য ও পুলিশ সদস্যরা বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে ‘‘স্বেচ্ছায় হত্যা করেছে’’।

এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৭জন সৈন্য ও ৩ জন পুলিশ সদস্য এবং ৬ জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ‘আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে’ বলে উল্লেখ করে মুখপাত্র জ হতাই বলেন, এরই মধ্যে এদের গ্রেফতার করে তদন্ত চলছে।

রয়টার্সের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের অনেক আগেই এদের গ্রেফতার করে তদন্ত চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

তবে এই ১৬ জন নৃশংস খুনীর বিরুদ্ধে কি আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে সে ব্যাপারে কোনো সুনির্দিষ্ট জবাব দেননি জ হতাই।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২ সেপ্টেম্বরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ওপর শুক্রবার রয়টার্স যে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে তাতে বলা হয়েছে, রাখাইন প্রদেশের উত্তরাঞ্চলীয় ইন্‌ দিন্‌ (Inn Din) গ্রামে ঢুকে পুলিশ ও সৈন্যরা ১০ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর একটি খোলা মাঠে হাত পিঠমোড়া করে বেঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বৌদ্ধ গ্রামবাসী, সৈন্য ও পুলিশ কুপিয়ে ও গুলি করে এদের  হত্যা করে। তাদের লাশ একটি গণকবরে ফেলে দেয়া হয়।

জ হতাই মিয়ানমার সরকারের সাফাই গেয়ে এখন যে বক্তব্য রাখছেন, তা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর আগের বক্তব্যের ঠিক বিপরীত।

নিহত এই ১০ নিরীহ মুসলমানকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী বলে দাবি করেছিল সেনাবাহিনী। গত ১০ জানুয়ারি মিয়ানমার সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে দাবি করে, নিহত এই ১০জন নাকি ছিল ২০০ ‘জঙ্গি-সন্ত্রাসী’র সমন্বয়ে গঠিত একটি গ্রুপের সদস্য, যারা সৈন্য ও পুলিশ বাহিনীর ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল।

রাখাইনে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী মুসলমান এবং সাধারণ গ্রামবাসী বৌদ্ধরাও পর্যন্ত রয়টার্সকে বলেছে, এই ১০জন ছিল নিতান্তই সাধারণ নিরীহ লোক। এরা কোনো হামলার সঙ্গে জড়িত নয়। তাছাড়া তাদের গ্রামে কেউ কোনো হামলা চালায়ওনি। বরং এরা বৌদ্ধ সন্ত্রাসী ও সেনা-পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে শত শত রোহিঙ্গা নারী,পুরুষ ও শিশুর সঙ্গে সমুদ্রের ধারে একটি স্থানে জড়ো হয়েছিল।

ইন দিন গ্রামের এই হত্যাকাণ্ডের ওপর করা অনুসন্ধানের সূত্র ধরেই রয়টার্সের দুজন সংবাদদাতাকে আটক করে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। দুজনেই মিয়ানমারের নাগরিক। এদের একজনের নাম ওয়া লোনে এবং অন্যজনের নাম কিয়াও সোয়ে উ (Wa Lone and Kyaw Soe Oo )। রাষ্ট্রের গোপন নথি পাচারের অভিযোগে গত ১২ ডিসেম্বর এদের আটক করা হয়।

হত্যাকাণ্ড যে ঘটেছে এ ব্যাপারে রয়টার্সের কাছে পর্যাপ্ত প্রমাণ আছে জ হতাইকে একথা স্মরণ করিয়ে দেবার পর রিপোর্ট প্রকাশের আগের দিন বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়নি এমন দাবি আমরা করছি না। আমরা তো যা ঘটে গেছে তা ঢালাওভাবে অস্বীকারও করছি না।…এসবের পক্ষে যদি জোরালো প্রাথমিক প্রমাণ থাকে তাহলে সরকার তা তদন্ত করে দেখবে।’’

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।