বিশেষ প্রতিবেদকঃ শহীদ পরিবারের সন্তান ও মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. গাজী সালেহ উদ্দিন বলেছেন, স্বাধীনতার ৪৬ বছর পার করছি আমরা। ইতোমধ্যে স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক বীর সেনানী অন্তিম শয়ানে চলে গেছেন। প্রতিদিন কেউ না কেউ পাচ্ছেন পরপারে ডাক। তাই স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য প্রজ্জলমান রাখতে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এতে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিপ্লবেরও নবপ্রেরণা পাবে নতুন প্রজন্ম। তবে, বিজয়ের মাসে কয়েকদিন বিজয় মেলা করে এটি সম্ভব নয়। সারা বছরই যেন মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনায় শিশুদের মনে দেশপ্রেম জাগ্রত হয় সে ব্যবস্থা করা চলমান প্রজন্মের নৈতিক দায়িত্ব।
কক্সবাজারে পাঁচদিন ব্যাপী মুক্তিযদ্ধের বিজয় মেলার উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার ইনস্টিটিউট ও পাবলিক লাইব্রেরীর শহীদ দৌলত ময়দানে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।
বিজয় মেলার উদ্বোধন উপলক্ষে শহীদ দৌলত ময়দানের মেলা প্রাঙ্গন থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি প্রধান সড়ক পদক্ষিণ করে হলিড়ে মোড় হয়ে ফের মেলা প্রাঙ্গনে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, ঘোড়ার গাড়ি, রঙ বেরঙয়ের বিজয় প্রতীক, বিভিন্ন দাবী সম্বলিত প্লেকার্ড, বিভিন্ন ধরণের বস্তু উপস্থাপন করা হয়। বাদ্যের তালে তালে শোভাযাত্রাটি উৎসবে পরিণত হয়।
বিজয় মেলার প্রধান গেইটে বসানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন বিজয় টাওয়ার। পাশাপাশি পৌরসভার সামনে থেকে ডিসি অফিস চত্বর, কক্সবাজারের প্রথম শহীদ মিনার শহীদ সরণী মোড়, লালদীঘিরপাড়স্থ জেলা আওয়ামী লীগের পুরাতন কার্যালয় পর্যন্ত সজ্জিত করা হয়েছে শিল্পের ছোঁয়া ও রঙ বে-রঙয়ের লাইটিংয়ে।
শোভাযাত্রা শেষে বিজয় মঞ্চে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান আলোচক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেন মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সন্তান অধ্যাপক ড. গাজী সালেহ উদ্দিন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান। উদযাপন পরিষদের মহাসচিব মোহম্মদ নজিবুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিজয় মেলার স্টিয়ারিং কমিটির প্রধান অ্যাড. সিরাজুল মোস্তফা, সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, কউক চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমেদ, জেলা জাসদের সভাপতি নইমুল হক চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. শাহাজান, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জল কর, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট জাতীয় পরিষদ সদস্য অ্যাড. তাপস রক্ষিত ও কক্সবাজার জেলা সদস্য সত্যপ্রিয় চৌধুরী দোলন।
মেলার প্রথম দিন বিজয় মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন, উদীচী, বর্ণমালা একাডেমী, সংগীতায়ন, কাঠ পিন্সিল, আরশি নগর প্রমুখ।
বিজয় মেলা উদযান পরিষদের মহাসচিব মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম জানান, বিজয় মেলা চলবে আগামি ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এবারের বিজয় মেলা প্রাঙ্গনে ৯০ টি স্টল স্থান পেয়েছে। ২১টি সাংস্কৃতিক সংগঠন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের জাতীয় শিল্পী ও স্থানীয় বিভিন্ন শিল্পীদের অংশগ্রহণে প্রতিদিন পরিবেশিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভিত্তিক কবিতা, গান, নৃত্য, নাটক ও চিত্রপ্রদর্শনী। মেলা শেষের দিকে কক্সবাজার জেলার সকল মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা জানানো হবে। স্মৃতিচারণ করবেন জাতীয় ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।