প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের সৈকত থেকে পর্যটন শহর কক্সবাজার এলাকার দূরত্ব প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার। কক্সবাজার শহরের কয়েকজন সৌখিন কবুতর খামারি শখের কবুতর নিয়ে জড়ো হন সেখানে। ৪৩টি কবুতরই রেসার প্রজাতির। পথ চিনে কার কবুতর কত সময়ের মধ্যে বাসায় ফিরতে পারে তা পরীক্ষার জন্যই আয়োজন করা হয়েছে ‘কবুতর রেসিং’ প্রতিযোগিতা।
কক্সবাজারে প্রথমবারের মতো সাগর পাড়ি দেওয়ার এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল কক্সবাজার রেসিং পিজিওন ফেন্সিয়ার্স ক্লাব । প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ৪৩ টি কবুতর।
কবুতরগুলো যখন সেন্টমার্টিন সৈকত এলাকা থেকে খাঁচামুক্ত করা হয় তখন উপস্থিত দর্শকের অনেকেরই প্রশ্ন ছিল নীল আকাশে ভেসে ১৩৫ কিলোমিটার দূরে সাগর পাড়ি দিয়ে কক্সবাজার শহরের নিজ নিজ বাসায় কবুতরগুলো ফিরতে পারবে তো? এসব কবুতরের দাম ছিল প্রায় ৪ লাখ টাকা। একেক একটি রেসার প্রজাতির কবুতরের দাম ২ থেকে ১০ হাজার টাকা।
দর্শকদের খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। উড়াল দেয়ার ১২০ মিনিটের মাথায় সেন্টমার্টিন সৈকতে ১৩৫ কিলোমিটার সাগরপাড়ি দিয়ে কক্সবাজার সাগরপাড়ের মধ্যবাহারছড়া জাহেদুল ইসলাম ও তারাবনিয়ারছড়া এলাকার সিদ্দিক আহম্মদেও বাড়িতে পৌছেন ৩৯ রেইসার কবুতর ঝাঁক। বাসা থেকে ফোন আসে তাদের কবুতর বাসায় ফিরে এসেছে। ১২০ মিনিটের মাথায় নিজের কবুতর বাসায় ফেরার খবর পান সেন্টমার্টিন সৈকতে অপেক্ষমান জাহেদ।
রেসিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় জাহেদুল ইসলাম ও সিদ্দিক আহম্মদের ৪৩টি রেসার কবুতর। মালিকের বাড়িতেই ফিরে এসে রেকর্ড গড়েন। এখানে ২ জনই বিজয়ী হন।
বিজয়ীদেরকে ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়ে অভিনন্দিত করেন ক্লাবের সদস্যরা। কক্সবাজার পৌর সভা কার্যালয়ের সামনে শনিবার পড়ন্ত বিকেলে ফুলের তোড়া দিয়ে জয়ী জাহেদ ও সিদ্দিককে অভিনন্দিত করে ক্লাবের সদস্যরা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, ইয়াছিন আরাফাত রিগান, সামাদ, করিম, জিয়াবুল, বেলাল, ওপেল, সাদেক, রানা, শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, সৈয়দ মোহাম্মদ শাকিল ও রিপন।
সৌখিন কবুতর পালনকারীদেও নিয়ে গঠন করা হয় ‘কক্সবাজার রেসিং পিজিওন ফেন্সিয়ার্স ক্লাব’। এই ক্লাবে সদস্য সংখ্যা ৫২ জন।
এরা প্রত্যেকে শখের বশে বাড়িতে কবুতর পালন (ফার্ম) করেছে। সংগঠনের সদস্যরা নিজেরাই কবুতর উৎপাদন এবং সংগ্রহ করে থাকেন।
রেসিং পিজিওন ফেন্সিয়ার্স ক্লাবের আহবায়ক জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘কক্সবাজারে প্রথমবারের মতো দীর্ঘ সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার এ রেসিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় গত ৩১ ডিসেম্বর।
প্রতিযোগিতার প্রথম পর্ব সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। কক্সবাজারে কবুতর পালনে সৌখিন লোকজনকে উদ্ধুদ্ধ করতে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে’।
জাহেদুল ইসলাম জানান, ‘বাড়িতে কবুতর পালন একটা আলাদা মজা। শখের কারণে কবুতর পালন করে এখন কবুতর খামারি হয়ে গেছি। প্রত্যেক বেকার যুবক বাসা বাড়িতে, ছাদের উপর কবুতর পালন করলে নিজেরা লাভবান হবে। পরিবারে আসবে স্বচ্ছলতা’।
তিনি বলেন, ‘যারা মাদকাসক্ত হয়ে গেছে, বিষন্নতায় ভোগছেন তারা কবুতর পালনের দিকে মনোযোগী হলে মন থেকে সব অপরাধ বোধ দুরে চলে যাবে। ফিরে পাবে স্বাভাবিক জীবন। তাই প্রত্যেককে কবুতর পালনের দিকে ঝুঁকে পড়া জরুরী। কাজে ব্যস্ত থাকলে অপরাধবোধ হ্রাস পায়’।
তিনি বলেন, ‘আগামীতে আমরা তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৪’শ থেকে ৭’শ কিলোমিটার পর্যন্ত রেসের আয়োজন করতে যাচ্ছি।’
এই কবুতর পালনকে ঘিরে কক্সবাজার শহরের সদর মডেল থানা রোডের মাথায় প্রতি শুক্রবার ও সোমবার বসে কবুতর বাজার। সফল কবুতর চাষী ইয়াছিন আরাফাত রিগান এই কবুতর বাজারের উদ্যোক্তা। তিনি বাজারের মাধ্যমে কবুতর পালন সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে দিনদিন কবুতর পালনের দিকে লোকজনকে আকৃষ্ট করছে।
২০২১ ফেব্রুয়ারি ০৮ ০৮:৩১:১১
২০২০ জুলাই ২৮ ০৬:০২:৪৫
২০২০ জুন ২৭ ১১:১৮:৫৪
২০২০ জুন ২২ ১২:৫৩:২৯
২০২০ মে ২৯ ০৫:৫৩:৩৫
২০২০ মে ০৯ ০১:০৫:২৩
২০২০ মে ০৭ ০৫:০৩:৩০
২০২০ মে ০৫ ১১:৫৩:৩৯
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।