১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ১ আশ্বিন, ১৪৩২ | ২৩ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  দুর্ধর্ষ প্রতারক দিদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি   ●  ইয়াবাসহ পুলিশে সোপর্দ, চোর সন্দেহে চালান, এলাকায় ক্ষোভ   ●  শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান   ●  “প্লাস্টিক উৎপাদন কমানো না গেলে এর ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব নয়”   ●  নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কক্সবাজারে তাঁতীদলের খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন   ●  বৃহত্তর হলদিয়া পালং বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল আজিজ মেম্বারের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ   ●  মরিচ্যা পালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা   ●  রামুতে বনবিভাগের নির্মাধীন স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে প্রশাসন ও বনকর্মীদের মাঝে প্রকাশ্যে বাকবিতন্ডা   ●  সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ নুরের মৃত্যুতে জেলা বিএনপির শোক   ●  চুরি করতে গিয়ে পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রী ধর্ষণ

‘শিশুদের বিভৎস লাশ দেখে নিজেকে ধরে রাখতে পারছিলাম না’

কোনো লাশের অর্ধেক অংশ নেই, কোনো লাশের শুধু মাথা আছে। এখানে চারটি শিশু ছিল। শিশুদের বিভৎস লাশ দেখে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছিলাম না।

মৌলভীবাজারের নাসিরপুরে জঙ্গি আস্তানায় সোয়াতের অভিযানের পর উদ্ধার হওয়া সাতটি লাশের ময়নাতদন্ত শেষে এভাবেই বলছিলেন চিকিৎসক দলের প্রধান ডা. আবু ইমরান।

তিনি বলেন, ‘লাশের ছিন্নভিন্ন অংশ দেখে আঁতকে উঠেছিলাম। সব লাশ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। আমার ১২ বছরের চিকিৎসা জীবনে এমন বিভৎস লাশের ময়নাতদন্ত আর করিনি।’

শুক্রবার বিকালে ময়নাতদন্ত শেষ হয়। ময়নাতদন্ত শেষে চিকিৎসকরা জানান, ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বোমার বিস্ফোরণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

লাশগুলোর সুরতহাল প্রস্তুতকারী পুলিশ কর্মকর্তা মৌলভীবাজার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল মালিকও লাশগুলো দেখে হতবাক হয়ে যান।

তিনি যুগান্তরকে বলেন, ‘অনেক লাশের সুরতহাল করেছি। এমন সুরতহাল আর কখনোই করিনি। বৃহস্পতিবার রাতে সুরতহাল করার পর থেকে আমি খেতেও পারছি না। জানালার গ্রিলের মধ্যে ছিন্নভিন্ন লাশের বিভিন্ন অংশ দেখতে পেয়েছি। পরে এগুলো সংগ্রহ করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।’

চিকিৎসকরা জানান, সাতজনের মধ্যে চারজন শিশু, দুজন নারী এবং একজন পুরুষ রয়েছে। এরমধ্যে দুই থেকে তিন মাস বয়সী এক শিশু রয়েছে। ওই শিশুটি ছেলে না মেয়ে তা বোঝার কোনো উপায় নেই। শিশুটির শুধু মাথার অংশটি পাওয়া গেছে। অন্য তিন শিশুর সবাই মেয়ে। তাদের একজনের বয়স দুই বছর। অন্য দুজনের বয়স সাত এবং ১০ বছর। তাদের লাশেরও একই অবস্থা।

তারা জানান, দুজন নারীর মধ্যে একজনের বয়স ২৫ এবং অপরজনের বয়স হবে ৩৫ বছর। একজন নারীর শরীরের অর্ধেক চিহ্নিত করা গেছে এবং অপরজনের শুধু মাথা ছিল। পুরুষের বয়স ৩৫ বছরের মতো হবে। তার পেটের অংশে ছিন্নভিন্ন ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, তার শরীরে সুইসাইড ভেস্ট বাঁধা ছিল। সব লাশের শরীরে তার ও স্প্লিন্টার ছিল।

মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. পার্থ সারথী দত্ত কানানগো যুগান্তরকে জানান, পুরুষের মুখে ছোট দাড়ি রয়েছে। বোমার বিস্ফোরণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

চারজনের একটি মেডিকেল টিম ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন। টিমের প্রধান আবু ইমরান। অন্যরা হলেন- অশোক ঘোষ, সুব্রত কুমার রায় ও পলাশ রায়।

উল্লেখ্য, জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে মঙ্গলবার রাত থেকে মৌলভীবাজার পৌরসভার বড়হাট এলাকায় একটি বাড়ি এবং শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে খলিলপুর ইউনিয়নের সরকার বাজার এলাকার নাসিরপুর গ্রামে আরেকটি বাড়ি ঘিরে রাখে পুলিশ ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।

পরে কাউন্টার টেরোরিজমের সোয়াত টিম বুধবার বিকাল থেকে নাসিরপুরের আস্তানায় অভিযান শুরু করে। অভিযানের নাম দেয়া হয় ‘অপারেশন হিটব্যাক’। বৃহস্পতিবার বিকালে এই অভিযান শেষ হয়। এতে এক পুরুষ, দুই নারী এবং চার শিশু নিহত হয়।

পুলিশ জানায়, অভিযান শুরুর পরপরই আত্মঘাতী বিস্ফোণে তাদের সবার দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।

ওই অভিযানের পর শুক্রবার সকাল থেকে বড়হাট এলাকার জঙ্গি আস্তানায় ‘অপারেশন ম্যাক্সিমাস’ শুরু করে সোয়াত সদস্যরা। এই অভিযান এখনও চলছে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।