২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ১১ আশ্বিন, ১৪৩২ | ৩ রবিউস সানি, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  আলোচিত ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে লুটপাট, পরে রফাদফা!   ●  দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ   ●  কক্সবাজারে ভূমি নিবন্ধনে আকাশচুম্বী বর্ধিত উৎসেকর বাতিল, প্রসংশায় পঞ্চমুখ সালাহউদ্দিন আহমদ   ●  হলদিয়ায় ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে উধাও ৩ যুবক   ●  দুর্ধর্ষ প্রতারক দিদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি   ●  ইয়াবাসহ পুলিশে সোপর্দ, চোর সন্দেহে চালান, এলাকায় ক্ষোভ   ●  শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান   ●  “প্লাস্টিক উৎপাদন কমানো না গেলে এর ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব নয়”   ●  নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কক্সবাজারে তাঁতীদলের খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন   ●  বৃহত্তর হলদিয়া পালং বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল আজিজ মেম্বারের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নালাবিহীন পৌরসভার প্রধান সড়ক

নালাবিহীন হয়ে পড়েছে কক্সবাজার পৌরসভার প্রধান সড়ক। গত কয়েক বৎসর আগের কক্সবাজার পৌর এলাকার প্রধান সড়কের দক্ষিণ পাশে পানি চলাচলের নালাটি দেখা গেলেও এখন তা সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। সড়কের দক্ষিণ পাশের নালাটি ভরাট হয়ে এখন রাস্তার সাথে সমতল হয়ে যাওয়ায় নালার চিহ্ন নেই বললেই চলে।
এদিকে কক্সবাজার পৌরসভার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরে প্রধান সড়কের পাশে নালা না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে অসহনীয় কষ্টের মধ্যে রয়েছেন কক্সবাজার পৌরসভাবাসী। পানি চলাচল অন্য মৌসুমে রাস্তার উপর দিয়ে করে থাকলেও বর্ষায় সময় পানি বেড়ে যাওয়ায় পৌরবাসীর আতংকের শেষ থাকে না। কোটি টাকার লোকসানে পড়ে পৌরসভার ব্যবসায়ীরাও। যার কারণে প্রতি বৎসর বর্ষা মৌসুম আসার পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়েন পৌরবাসী ও ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয়দের মতে, নালা না থাকায় বর্ষাকালে পানি চলাচল করে নালার উপর। প্রধান সড়কের পাশের নালাটি প্রভাবশালীদের দখলে থাকলেও সংশ্লিষ্ট দফ্তরের দায়সারা অভিযান থাকে প্রতি বৎসর। পুরোপুরি অভিযান সম্পন্ন না হওয়ায় পৌরসভার প্রধান সড়কের দক্ষিণ পাশের নালাটি এখন প্রভাবশালীদের দখলে চলে গেছে। আগামী বর্ষা মৌসুমে কক্সবাজার পৌরসভা পানির নিচে তলিয়ে না যাওয়ার আগে প্রভাবশালীদের হাত থেকে এসব নালা উদ্ধার করা জরুরি। কক্সবাজার পৌরসভার সুনাম ফিরিয়ে আনতে এবং পৌরবাসীকে জলবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা করতে অন্ততঃ প্রধান সড়কের নালাটি উদ্ধার করে উপযোগী করা খুবই প্রয়োজন।
কক্সবাজার পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার পৌরসভার সংশ্লিষ্ট নালা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে ১২৯ জন প্রভাবশালী। প্রাথমিক তালিকায় থাকা এসব দখলকারীর মধ্যে যাচাই-বাছাই করে ৪৬ জন দখলদারের বিরুদ্ধে গত বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে উচ্ছেদ অভিযানে নামে কক্সবাজার পৌরসভা। এতে প্রধান সড়কের পাশাপাশি প্রথমধাপে ঘোনারপাড়া রাস্তার মোড় থেকে বার্মিজ মার্কেট, বাজারঘাটা হয়ে পেশকার পাড়া পর্যন্ত নালা দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ওইসময় চাউলবাজারের রাবেয়া কুটিরের বর্ধিতাংশ থেকে ওই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছিল কক্সবাজার পৌরসভা। গত ৭ আগস্টের মধ্যে পৌরসভার নালা দখলকারীদের দখল ছেড়ে দেয়ার জন্য প্রচারও করেছিল কক্সবাজার পৌরসভা। এতে বলা হয়, ৮ আগস্টের মধ্যে পৌরসভার নালা দখলকারীরা স্বেচ্ছায় দখল ছেড়ে না দিলে অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করা হবে এবং দখল উচ্ছেদ করা হবে।
স্থানীয় অনেকের অভিযোগ, নালা দখলকারীদের বিরুদ্ধে কয়েকবার উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও অদৃশ্য কারণেই তা মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। অবৈধভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ইমারত নির্মাণকারীদের তাদের নিজ নিজ উদ্যোগে স্থাপনা সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেয়া হলেও কোন কাজেই আসছে না। এসব দখলকারীদের স্থাপনা অপসারণের সময় বেঁধে দেয়া হলেও নিজ উদ্যোগে অপসারণ হয়নি অবৈধ স্থাপনা। নিজ উদ্যোগে স্থাপনা অপসারণ করা না হলে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ তা অপসারণ করবে এবং দখকারীদের জরিমানাও করা হবে সংশ্লিষ্ট দফ্্তরের এমন প্রচারেও কোন কাজ হচ্ছে না। অবৈধ দখলকারীরা বহাল তবিয়তে রয়েছে। আদৌ এসব অবৈধ দখলকারীদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে কিনা সন্ধিহানে রয়েছে পৌরবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের পিটিআই স্কুল থেকে হলিডে এর মোড় পর্যন্ত প্রধান সড়কের দক্ষিণ পার্শ্বে দেখা গেছে পুরাতন নালাটির চিহ্ন। কোন কোন জায়গায় তাও বিলীন হয়ে গেছে। যেসব স্থানে নালা দেখা যাচ্ছে সেসব অধিকাংশ জায়গায় পানি চলাচলের কোন ব্যবস্থা নেই। অনেকাংশে পানি চলাচলের নালাটি প্রধান সড়কের সাথে মিশে গেছে। দেখলে বুঝাই যায় না এসব জায়গায় আদৌ নালা ছিল কিনা! কিছু কিছু জায়গায় নালা দেখা গেলেও এসব নালা রয়েছে ব্যবসায়ী ও মৌসুম হকারদের দখলে।
স্থানীয়দের অনেকে জানিয়েছেন, শহরের ঘোনার পাড়া, বৈদ্যঘোনা, গোলদিঘীর পাড়, বৌদ্ধ মন্দির সড়ক, পাহাড়তলী এলাকা সহ প্রধান সড়কের দক্ষিণ পাশের এলাকা থেকে বর্ষার পানি এসে প্রধান সড়কে জমা হয়। প্রধান সড়কের পাশের পূর্ব-পশ্চিম দৈর্ঘ্য নালাটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় এসব পানি রাস্তায় বেশি জমা থাকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে নালাটি এখন মৃত প্রায়। এর অস্তিত্ব সম্পূর্ণ বিলীন। অবৈধ দখলকারীরা নালাটি এমনভাবে দখল করেছে যাতে সাধারণ মানুষের চলাচল করাও দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কক্সবাজার সোসাইটির সভাপতি কমরেড গিয়াস উদ্দিন জানান, ‘প্রধান সড়কের পাশের নালাটি বিলীন হয়ে যাওয়া সত্যিই দুঃখের ব্যাপার। অথচ পর্যটন নগরী হিসেবে কক্সবাজার শহরে প্রধান সড়কের নালাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি দিয়ে শুধু পানি চলাচল করে না এর উপর স্থিত সেøপের উপর সাধারণ মানুষের চলাচলও বিদ্যমান। অথচ গত কয়েক বৎসর আগ পর্যন্ত নালাটি বিলীন হওয়ার পথে থাকলেও দেখার যেন কেউ নেই। যার কারণে বর্ষায় শহরের উপ-সড়ক ও অভ্যন্তরীণ নালার পানি প্রধান সড়কের উপর এসে জমা হয়। বর্ষার পানিতে ডুবে থাকে পুরো শহর। সংশ্লিষ্ট কারণে কর্তৃপক্ষ এগুলো নিয়ে কোন ধরণের পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। সংশ্লিষ্ট দফ্্তর গত বৎসরও অভিযান চালানোর বিষয়ে তৎপর থাকলেও রহস্যজনক কারণে অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। আমরা বুঝতে পারিনা, সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে এবং কক্সবাজারের স্বার্থে এসব কাজ করতে সংশ্লিষ্ট দফ্্তরের অসুবিধা কোথায়। খবর নিলে দেখা যাবে, নালাটি দখল করে কিছু কিছু সুবিধাবাদী সুযোগ নিচ্ছে। তারা নালাটি দখল করতে দিয়ে ভ্রাম্যমান ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অবৈধ টোলও আদায় করছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নিরব। পর্যটন শহর হিসেবে কক্সবাজার সুনাম অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে তড়িৎ গতিতে প্রধান সড়কের পাশের নালাটি উদ্ধার করে পানি চলাচল উপযোগী ও সাধারণ মানুষের চলাফেরার হাঁটার উপযোগী করার তোলার জন্য এতদ্্ সংশ্লিষ্ট দফতর এবং কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানাচ্ছি।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।